• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

বগুড়ায় বেড়েছে মসলার দাম

প্রকাশ:  ১৮ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৮
বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ায় দাম বেড়েছে মসলার। দাম বাড়ার সাথে সাথে মসলার মধ্যে ভেজাল উপাদান মেশানো হচ্ছে। কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার এক শ্রেণীর ব্যবসায়িরা এই কাজ করে মুনাফা লুটে নিচ্ছে। একই জিরাতে মহুরী, বালু ও অন্য জিরাতে পানি মিশ্রণের অভিযোগে বগুড়ায় ভ্রামামান আদালত জরিমানা প্রদান করেছে। তারপরও থেমে নেই বগুড়ার নিম্নমানের ভেজাল উপাদন মেশানো মসলা বিক্রি।

বগুড়া ৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, বগুড়া শহরের বাদুরতলা এলাকার মিল­াত ট্রান্সপোর্ট সংলগ্ন মেসার্স আলী এন্টার প্রাইজের গুদামে জিরার সাথে মহুরী জাতীয় মসলা ও বালু মিশিয়ে বাজারজাত করছিল। আবার একই প্রতিষ্ঠানে জিরায় পানি মিশিয়ে ওজন বাড়িয়ে বিক্রি করে আসছিল। জিরায় নিম্নমানের বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে প্যাকেট করার অপরাধে প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর মোঃ আলী আহম্মেদ এর ২ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমান আদালত।

একই এলাকায় ফতেহআলী বাজারের মেসার্স এম আর ষ্টোরের গুদামে স্যাত স্যাতে ও নোংরা পরিবেশে মসলা মজুদ করার অপরাধে প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর মোঃ মাহফুজুর রহমানের ৬০ হাজার টাকা এবং শহরের আকাশতারা এলাকার আটা ময়দা উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুমন ফ্লাওয়ার মিলস লিঃ এর বিএসটিআই’র লাইসেন্স বিগত ৩ বছর যাবৎ নবায়ন না করে ব্যবসা করে আসছিল।

এমন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর রতন কুমার সিংহ’র ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় বগুড়া এপিবিএন-৪ এর সদস্যরা সহযোগিতা করেন। এই অভিযান বিএসটিআই ও বগুড়া পৌরসভার কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করে।

বগুড়া পেরৈসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ শাহ আলী খান জানান, বগুড়া পৌরসভা এলাকায় যে সব বাজার রয়েছে তাতে মসলার বাজারে দাম বেড়েছে। কিছু ব্যবসায়ি রয়েছে যারা জিরা, কালোজিরা, ধনিয়া, পাঁচফোড়ন, মহুরীর মধ্যে খুবই চিকন বালু বা একধরনের পাউডার মিশিয়ে থাকে। সেই বালুর গায়ে আবার রং করিয়ে দেয় এমন অভিযোগও রয়েছে। এসব নিম্নমানের উপাদান সাধারণ ভোক্তারা খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। এমন অভিযোগ পাওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত নিয়মিত পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার শহরের ফতেহ আলী বাজারের মসলা ব্যবসায়ী আলী আহমেদের বাদুড়তলায় গুদাম আছে। তিনি গুদামে প্রতি এক কেজি জিরার সঙ্গে ৩০০ গ্রাম মহুরি মিশিয়ে প্যাকেট ও বাজারজাত করে আসছিলেন।

বগুড়া বিএসটিআই এর মাঠ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বগুড়ার বাজারে কিছু মসলায় ভেজাল বা নিম্নমানের কিছু উপাদান ব্যবহার করছে একধরণের অসাধু চক্র। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

বগুড়া রাজাবাজারে মসলা ক্রেতা আব্দু সালাম জানান, সাদা এলাচ কয়েকদিন আগেই বিক্রি হয়েছে ভাল মানের ১৩০০ টাকা কেজি। সেই মসলা বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ টাকা কেজি। এমনকি খুচরা বাজারের ১৬০ টাকা কেজির তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। খোলা বাজারে বার্মার আদা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা সেই আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।

বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের পাইকারি বিক্রেতারা জানান, সব মসলার দাম বাড়েনি। দুই চারটা মসলা ছাড়া বেশির ভাগ মসলা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, বগুড়া শহরের মসলার বড় বাজার হিসেবে পরিচিত রাজা বাজার, ফতেহ আলী, কলোনী, চেলোপাড়া, উপশহর বাজার, খান্দার বাজার, বিসিক বাজার, গোদারপাড়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে মসলার বাজার বেশ চড়া। গত কয়েক দিনের তুলনায় বগুড়ার বাজারগুলোতে দাম বেড়ে সাদা এলালের ও দারচিনির। চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়ছে রশুন, আদা, শুকনা মরিচ ও জিরার। বর্তমানে পাইকারি দরে প্রতি কেজি সাদা এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৯০০ টাকা। আগে যা ছিল ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে পোলার চাল, রসুন, আদার। জিরা ৩৪০ থেকে বাড়িয়ে প্রকার ভেদে ৩৯০ ও ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে যা ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। দারুচিনি ২৭০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে। যা আগে ছিল ২৩০ টাকা। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে বর্তমানে বগুড়ার পাইকারি বাজারে মান ভেদে কালো এলাচ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, লবঙ্গ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, কালোজিরা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, গোল মরিচ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, জায়ফল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, তেজপাতা ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, সাদা সরিষা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পাঁচফোড়ন ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, ধনিয়া ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, হলুদ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, মরিচ ১৮০ থেকে ২৪০ টাকায়।

বগুড়া,মসলা,দাম

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close