• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ঈদের ছুটিতে চবি ক্যাম্পাস

প্রকাশ:  ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৭:৫৮ | আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৮:০১
চবি প্রতিনিধি

চারদিকে সুনসান নীরবতা। নেই কোলাহল। ভবনগুলোতে যেন মৃত্যুর নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। সদা চঞ্চল, ছাত্র-ছাত্রীদের আড্ডায় মুখর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের র্বতমান চিত্রের কথাটাই বলছিলাম।

ঈদের বেশকয়েকদিন আগে থেকেই চবি হারাতে শুরু করে তার চিরচেনা রূপ। শেকড়ের টানে ছাত্র-ছাত্রীরা পাড়ি জমাতে শুরু করে নিজ নিজ গাঁয়ে। তাই ক্যাম্পাসে জমে ওঠেনা বন্ধুদের আড্ডা। কলা ঝুপড়ির চেহারাটা নেই আগের মত উৎফুল্ল। শাটল ট্রেনে এখন আর সিট ধরার জন্য নেই তাড়াহুড়ো। ট্রেনের বেশিরভাগ জায়গা খালিই পড়ে থাকে। শোনা যায় বগিতে বগিতে গানের সুর। জিরো পয়েন্ট, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, মুক্তমঞ্চ, শহীদ মিনার চত্বর কিংবা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সব যেন শোকে মূহ্যমান। গলা উচিয়ে স্লোগান ধরেনা কোন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।যেন স্পন্দনহীন হয়ে পড়ে আছে সহস্র প্রাণের কলরবে মুখরিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সুন্দর একটি জীবন গড়ার জন্য দেশের নানা প্রান্ত হতে পরিবার-পরিজন ছেড়ে এসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে তাদের কাছে ঈদের আনন্দটা একটু ভিন্ন। প্রায় সব সময়ই কোন না কোন ক্লাস, পরীক্ষা, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশনের চাপে থাকতে হয়। হৃদয়ে লালন করা হাজারো স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সর্বদাই বিরামহীন ছুটে চলা। ছুটতে ছুটতে এক সময় পেয়ে বসে রাজ্যের ক্লান্তি। ক্লান্ত-শ্রান্ত মন চায় একটু বিশ্রাম। ছুটে যেতে চায় চেনা মুখগুলোর কাছে। কাদামাখা গ্রামের চিরচেনা মেঠো পথ ধরে হাটতে। পেতে চায় স্নেহময়ী মায়ের হাতের পরশ, যে পরশে রয়েছে পৃথিবীর সকল ক্লান্তি দূর করার যাদু। ইচ্ছে করে পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে আনন্দ-উল্লাসে কিছুটা সময়ের জন্য হারিয়ে যেতে। তাই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়া,টিকিট কাটা,কাপড়চোপড় গোছগাছ সবরকম ঝক্কিঝামেলা পেরিয়ে ঘরে ফেরাটা যেন একরকম উৎসবের মতোই কাজ করে।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম আহমদ ইকবাল বলেন, "অনেক দিন পর বাড়ি যাব। ভাবতেই আনন্দ লাগছে। এই ব্যস্ত শহর থেকে আবারও গ্রামের সেই প্রিয় মানুষ, বিকেলবেলার সেই খেলার মাঠ আর খেলার সাথীদের সংস্পর্শে ফিরে যাব সে ভাবনাতেই মন ব্যাকুল হয়ে আছে। রাস্তায় তীব্র যানজট, যেতে যেতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হবে কিন্তু এসব কথা মনে পড়লেই কষ্টগুলোকে আর কষ্ট মনে হয় না।"

পলিটিক্যাল সাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ফজলে এলাহী নাইম যেমনটা বলছিলেন, "একটু মন খারাপ হলেও প্রিয় ক্যাম্পাসের এই স্মৃতিগুলো মনে রেখেই বাড়ি যাচ্ছি। আবার বাড়ির আনন্দের স্মৃাতগুলো সঙ্গি করেই ক্যাম্পাসে ফিরতে হবে। কয়েকদিন ক্লাস লেখাপড়া অ্যাসাইনমেন্ট থেকে অবসর পাওয়া যাবে। ঈদের আনন্দ হবে মা-বাবা, ভাই-বোন আর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে। আর এ আশায় ভর করেই এখন প্রাণের ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ির পথে।"

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, "অনেক খুশি লাগছে।অনেক দিন পর অনেক স্মৃতি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। বাড়ির সবাই অপেক্ষায় আছে।ঈদ আর ছুটি দুই মিলে অনেক মজা হবে। ভাবতেই সেকি অন্যরকম ভালো লাগছে। কিন্তু আবার যখন ফিরে আসতে হবে তখন? থাক।"

তারপর আস্তে আস্তে আবার ডুবে যেতে হবে ক্লাস, এসাইনম্যান্ট ও পরীক্ষার মধ্যে।আবার শুরু হবে অপেক্ষার পালা এমন বিশেষ ছুটির ক্ষণের জন্য...।

ছুটি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close