• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাবির মতিহার হলে আনসার কোয়ার্টার, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ:  ১২ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৩১
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কর্মরত আনসার সদস্যদের বসবাসের জন্য মতিহার হলে জায়গা বরাদ্দ দিতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আনসার সদস্যদের কোয়ার্টারের জন্য হলের পুরাতন টিনশেড ভবনটি প্রস্তাব করা হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, আনসারদের বর্তমান বসবাসের জায়গায় নতুন প্রো-ভিসি অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে বসবাসের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেজন্যে আনসার সদস্যদের স্থানান্তর করে মতিহার হলের টিনশেডে নেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতর জানায়, গত ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আনসার সদস্যদের বসবাসের জন্য মতিহার হলের টিনশেড ভবনটি বরাদ্দ দিতে প্রক্টর ড. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নোট প্রকৌশল দফতরে পাঠানো হয়। নোটে ভিসির নির্দেশক্রমে এ ব্যাপারে প্রধান প্রকৌশলীকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এই কাজের জন্য সহকারী প্রকৌশলী আবুল কাশেমকে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়।

নোটে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তব্যরত আনসার বাহিনীর সদস্যরা বর্তমানে ৩ নম্বর কোয়ার্টারে বসবাস করে। যখন তাদেরকে ওই কোয়ার্টার বরাদ্দ দেয়া হয় তখন আশেপাশের কোয়ার্টারে বসবাসকারী শিক্ষকগণ পরিবার নিয়ে সেখানে থাকতেন না। কাজেই কোনো অসুবিধা হয়নি। বর্তমানে প্রো-ভিসিসহ অন্যান্য শিক্ষকগণ পরিবার নিয়ে পার্শ্বের কোয়ার্টারগুলোতে বসবাস করছেন। বিধায় আনসার সদস্যদের মতিহার হলের টিনশেড অথবা অন্যত্র ভালো জায়গায় দেয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হলো।’

এর আগে ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় নগরীর মতিহার থানা ভবন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে প্রবল আপত্তি তোলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তখন এই সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধিতার মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে পুলিশের টহল ও আবাসিক হলে পুলিশের অবস্থান নিয়েও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় আপত্তি জানিয়ে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, আবাসিক হল কোনো বাহিনীর সদস্যদের বসবাসের জন্য বরাদ্দ দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুন্ন করা হয়। শিক্ষকরা যেখানে আনসারদের পাশে থাকতে অসম্মতি জ্ঞাপন করছেন, সেখানে কেন শিক্ষার্থীদের হলে আনসার সদস্যদের জন্য জায়গা বরাদ্দ দিতে হবে? হলে আনসার সদস্যদের জায়গা বরাদ্দ না দিয়ে তাদের অন্য কোনো জায়গায় বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুজন আলী বলেন, হল গেটে থাকা হাতে গোনা কয়েকজন পুলিশ সদস্য থাকে, তারাও একবার সিগারেট খেতে নিষেধ করায় এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করেছিল। সেখানে আনসারদের কোয়ার্টার করলে হলের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঝামেলা করবে না, তার নিশ্চয়তাকে দেবে? এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকায় তা নিয়ে খুব বড় ধরনের ঝামেলা হয়েছিল। হলে কোনো বাহিনীর ক্যাম্প বা কোয়ার্টার চাই না আমরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর বলেন, মতিহার হলের টিনশেডকে আনসার সদস্যদের বসবাসের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে তা চূড়ান্ত হয়নি। আমরা আরও বিকল্প জায়গা খুঁজছি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আনসার সদস্যরা বর্তমানে যেখানে থাকছেন সেখানে নতুন প্রো-ভিসিকে বসবাসের জন্য দেয়া হবে। তাই সাময়িকভাবে তাদের স্থানান্তর করে মতিহার হলের টিনশেডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আনসার সদস্যরা সেখানে দুই-এক মাসের বেশি থাকবে না বলে দাবি করেন তিনি।

ওএফ

হল,রাবি

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close