ভৈরবে নবজাতক চুরি সন্দেহে মা মেয়ে অাটক

কিশোরগঞ্জের ভৈরবের হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি সন্দেহে পেয়ারা বেগম (৩৮), ও হোসনে অারা বেগম (৬০) নামে দুইজনকে অাটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে তারা সম্পর্কে মা মেয়ে।

শনিবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে।

আটককৃতরা হলেন নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের অাজিজ খানের মেয়ে পিয়ারা বেগম এবং তার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম। পিয়ারা বেগমের স্বামীর নাম হাবিবুর রহমান তার বাড়ি বরিশালের ঝালকাঠিতে।

হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার মেঘলা বেগম নামের এক গৃহবধূর উপজেলা স্কাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নবজাতক শিশুর জন্ম হয়। এদিন শিশু চোর প্রতারক পিয়ারা বেগম হাসপাতালে এসে গৃহবধূর মায়ের সাথে নবজাতকের খোঁজ খবর নিয়ে গল্প গুজব করে। এসময় তার পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে তার ঐদিন ডেলিভারির তারিখ। তার পরই প্রতারক পেয়ারা বেগম হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। এরপর দুই প্রতারক মহিলা আজ সকালে হাসপাতালে এসে আবারও নবজাতকের মায়ের বেডের সামনে বার বার ঘুরাঘুরি করতে থাকে।

এসময় নবজাতকের নানী আছিয়া বেগম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আবোল তাবোল কথা বলে। তার সন্দেহ হয় সে নবজাতক চুরি করতে অাসছে নবজাতকের মা মেঘলা বেগম তার তার মাকে এসময় জানায় প্রতারক দুই মহিলা গত বৃহস্পতিবারও তার কাছে এসেছিল। পরে ঘটনাটি হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সকে জানানো হলে ওই নার্স তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ মনে হলে ঊর্ধতন অফিসারে নির্দেশে দুই মহিলাকে হাসপাতালের একটি রুমে অাটকে রাখা হয়। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ দুই মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সিনিয়র নার্স স্টাফ পিয়ারা বেগম জানায়, সকালে অামি একজন টুয়িন বেবীর ডেলিভারি করছিলাম। তখন সন্দেহ হলে মহিলা অামার কাছে এসে বলে অাজকে অামার ডেলিভারির তারিখ। তখন তাকে দেখে অামার সন্দেহ মনে হয়। তারপর প্রতারক মহিলাকে শারীরিকভাবে পরীক্ষা করে তার পেটে বাঁধা অনেকগুলি কাপড় পায়। তবে গভর্বতীর কোন লক্ষণ নেই। পরে তার চিকিৎসার কাগজপত্র চাইলে সে দেখাতে পারেনি। পরে তাকে আটক করে ডাক্তারদের ঘটনাটি জানানো হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভৈরব থানা পুলিশকে খবর দিয়ে দুই মহিলা প্রতারককে পুলিশে সোপর্দ করে ।

এব্যাপারে নবজাতকের নানা আলম মিয়া জানান, গত বৃহস্পতিবার অামার মেয়ের বাচ্চা প্রস্রাবের পর থেকেই প্রতারক মহিলা দুজন সন্দেহজনক ভাবে ঘুরাঘুরি করছিল। যখন অামরা তার পরিচয় জানতে চায় তখন সে জানান সে নাকি গর্ভবতী। বাচ্চা প্রস্রবের জন্য হাসপাতালে এসেছে। তারপরই কর্তব্যরত নার্সকে এ বিষয়টি জানাই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের অাবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা.কেএনএম জাহাঙ্গীর জানান, সকালে হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স অামাকে ফোনে জানান একজন গর্ভবতী মহিলা বাচ্চা প্রস্রবের জন্য হাসপাতালে এসেছে। কিন্তু যখন তাকে শারীরিক পরীক্ষা করে তার পেট থেকে কতগুলো বাধা কাপড় পাওয়া যায়। তখন তাকে গর্ভবতীর কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তাৎক্ষণিক তাকে অাটকে রাখতে নির্দেশ দেয়। তারপরই স্থানীয় পুলিশকে এ বিষয়ে জানাই।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মোখলেছুর রহমান জানান, তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুর সন্দেহে দুই মহিলাকে অাটক করে থানায় নিয়ে অাসা হয়। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দুইজন মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে তিনি জানান।

/পি.এস