বান্ধবীর ভাইয়ের ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা
বাবা-মা মৃত্যুবরণ করছে অনেক আগেই, তাই অসহায় কিশোরী ছোট বেলা থেকেই নানা বাড়ী মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি এলাকায় থাকত। নানা বাড়ীর পাশেই কিশোরীর বান্ধবীর বাড়ী হওয়ায় মাঝে মধ্যে সে বাড়িতে গল্প করতে যেতেন।
আবার কখনো বান্ধবীর বাড়ীতে রাতে ঘুমাতে যেতাম। আর এই সুযোগ বান্ধবীর ভাই সাব্বির বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সর্ম্পক করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে ওই কিশোরী।
সম্পর্কিত খবর
দুই বছর হয়ে গেলেও বিয়ে না করায় বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাতে সদর মডেল থানায় সাব্বিরকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে ভুক্তভোগী কিশোরী।
মামলা সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী সাব্বির সরদারের বোন সোনিয়া সমবয়সী হওয়ায় মাঝে মধ্যে তাদের ঘরে একসাথে ঘুমানো হতো। তাছাড়া ২/৩ বছর যাবত প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলার চেস্টা করছিল সে। এমনই একদিন রাতে সোনিয়ার সাথে ঘুমিয়ে ছিল, ভোরে সোনিয়ার প্রাইভেট থাকায় সে ঘুম থেকে উঠে চলে যায়, কিশোরী ঘুমিয়ে থাকে এই সুযোগে সাব্বির ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেস্টা করে, কিশোরী বাধা দিলে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
এরপর কিশোরীকে বিয়ে করার আশ্বাস দেয় সে। কিন্তু এরপর থেকেই তাকে ভালবাসার দোহাই দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। মেয়েটি যখন মা হতে চলেছে তা জানতে পারে তখন অনেকবার বিয়ের কথা বলা হলেও সে পরিবারের দোহাই দিয়ে বলেছে একটু সময় দাও । প্রায় ৬-৭ মাস যাবত নানা রকম সমস্যার কথা বলে মেয়েটিকে দুরে সরিয়ে রেখেছে।
এরপর এলাকার লোকজন দিয়ে সাব্বিরের পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা এটা মেনে নিবে না বলে জানায় এবং মেয়েটিসহ তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
বর্তমানে মেয়েটি ৭মাসের অন্তঃসত্ত্বা তার মেডিকেল রিপোর্ট সহ মাদারীপুর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৫৮/৪৮৭। ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, আমাকে প্রথমে জোরপূর্বক হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করেছে। এরপর একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একই কাজ করছে। আমি যখন ওর সন্তানের মা হতে চলছি তখন অনেকবার অনুরোধ করেছি আমাকে বিয়ে করার জন্য। আমার আত্মীয়স্বজন দিয়েও অনেকবার বলিয়েছি।
এখন আমি সাব্বিরের ৭ মাসের সন্তান গর্ভে নিয়ে অসহায় হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। আমি ও আমার সন্তানকে সামাজিক স্বীকৃতি দিতে চাই। ভুক্তভোগী কিশোরীর বড় বোন বলেন, আমাদের বাবা-মা কেউ বেচে নেই, তাই বাধ্য হয়ে নানা বাড়ী আমার বোন ও ভাইকে রেখে পড়াশুনা করিয়ে ছিলাম। তবে অভাবের কারণে বোনের পড়াশুনা করাতে পারি নাই। আমার বোনের যে অবস্থা তাতে আমাদের মান-সম্মান নিয়ে বেচে থাকা দায়। আমি চায় আমার বোনকে স্ত্রী হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতি। এ ব্যাপারে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত সাব্বিরের বাবা মতলেব সরদার বলেন, আমার ছেলে যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে তার বিচার হবে। তবে এটাতো ধর্ষণ না, এটা দুইজনের সম্মতিতে হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে তবে কেন তারা মামলা করেছে। এখন আমরা কিভাবে আলোচনা করবো।
মাদারীপুর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত(ওসি) মো. কামরুল হাসান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অতিদ্রুত মামলার তদন্ত করে আসামিকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি।
/পি.এস