• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

নওগাঁর পতিসরে রবীন্দ্রনাথের নামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি

প্রকাশ:  ২১ মে ২০১৮, ১২:২৯
আব্দুর রউফ রিপন (নওগাঁ)

নওগাঁর আত্রাইয়ের কালীগ্রাম পরগনার নিজস্ব জমিদারী পতিসরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারী বাড়ি। নওগাঁবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি রবীন্দ্রনাথের নামে একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের। পাশাপাশি বিশ্বকবি তার নোবেল জয়ের সমুদয় টাকা এখানকার কৃষি উন্নয়নে ব্যয় করেছিলেন। সেক্ষেত্রে কৃষিখাতকে এগিয়ে নিতে কৃষিসহ মানবসস্পদ উন্নয়নেও নানা গবেষনা হবে।

সূত্রে জানা, নওগাঁর জনমানুষের দাবি ছিল পতিসরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। ১৮৯১ সালের পর কবি বহুবার এসেছেন তার নিজস্ব জমিদারী পতিসরে। কবিগুরুর নোবেল পুরস্কারের অর্থ দিয়ে এই পরগনার প্রজাদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার জন্য ৭৫ হাজার টাকা তৎকালীন সময়ে এখানে স্থাপিত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন। এই প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার প্রজাদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কবি ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে পতিসরে এসে তার পুত্র রথীন্দ্রনাথের নামে কালিগ্রাম রথীন্দ্রনাথ ইনস্টিটিউশন স্থাপন করেন এবং এই প্রতিষ্ঠানের নামে ২শ’ বিঘা জমি দান করেন।

সম্পর্কিত খবর

    বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ নওগাঁর মানুষের কাছে গর্ব কারণ তার নিজস্ব জমিদারী নওগাঁর পতিসরে। রবীন্দ্রনাথ যেমন শিক্ষানুরাগী ছিলেন সেজন্য তার পুত্রের নামানুসারে রথীন্দ্রনাথ ইন্সটিটিউট স্থাপন করেছেন এই অবহেলিত প্রজাদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। আর তাই এই কালিগ্রাম পরগনার পতিসরসহ নওগাঁবাসীর দাবী, রবীন্দ্রনাথের নামে একটি পুর্নাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। রবীন্দ্রনাথের নামে যত জমি আছে, সেই জমির উপরেই বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব বলে মনে করেন গবেষক ও শিক্ষানুরাগীরা।

    স্থানীয় মো: রবিউল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, পারভীন আক্তারসহ অনেকেই দাবী করে বলেন রবীন্দ্রনাথের উচ্চ শিক্ষার ভাবধারা, উন্নয়ন ও এলাকাবাসী ও বাংলা ভাষাভাষী মানুষের দাবি নওগাঁ পতিসরে একটি পূর্নাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের। তারা প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানিয়েছেন। শুধু এলাকাবাসী নয়; স্থানীয় ইউপি সদস্যও এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান।

    নওগাঁ সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, রবীন্দ্র গবেষক ও শিক্ষানুরাগী মো: শরীফুল ইসলাম খান বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যদি এই পরগনা কিনে না নিতেন তাহলে আমরা রবীন্দ্রনাথের স্পর্শ পেতাম না।তিনি এই গরীব এলাকার প্রজাদের জন্য যেভাবে ভাবতেন আজ আমরা সেই ভাবে আর ভাবী না। কারণ আমরা দিন দিন রবীন্দ্রনাথের আদর্শ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। যদি তা না হতো আজ এই পতিসরে বিশ্বকবির নামে একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হতো অনেক আগেই। এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ আছে বিশ্ব কবির নামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার।

    পতিসর কাছারী বাড়ির রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রাহক মো: মতিউর রহমান মামুন বলেন, পূর্ববঙ্গের ৩টি জমিদারীর মধ্যে নওগাঁর পতিসর ছিল বিশ্বকবির নিজস্ব জমিদারী। কিন্তু পতিসর বার বার অবহেলিত-উপেক্ষিত। ১৯০৫ যখন ভারতের গ্রামাঞ্চলে শিক্ষা ব্যবস্থার কথা যখন ভাবাই হতো না তখন নওগাঁ পতিসরের মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য উচ্চ বিদ্যালয় তৈরি করেন। প্রায় ২০০টি গ্রামে অবৈতনিক পাঠশালা চালু করেছিলেন। তাই তিনি পতিসরে কৃষি চিন্তা, পল্লী চিন্তাকে প্রাধান্য দিয়ে পুর্নাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জোর দাবী জানান।

    স্থানীয় সংসদ সদস্য মো: ইসরাফিল আলম বলেন তিনি এখানে অনেক কবিতা, গল্প লিখেছেন। এমনকি তার নোবেল পুরস্কারের অর্থ দিয়ে কৃষি ব্যাংক স্থাপন করেছিলেন এখানে। সেই সাথে ক্ষুদ্র ঋনের ব্যবস্থা তিনিই চালু করেছিলেন নওগাঁর পতিসরে। এই জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল; রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য কৃষি উন্নয়ন, কৃষি আধুনিকায়নে স্বপ্নকে পুরন করার জন্য নওগাঁর পতিসরের বিশ্বকবির নিজস্ব জমিদার বাড়িতে একটি পুর্ণাঙ্গ কৃষি বিদ্যালয় স্থপানের। তবে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের সকল চেষ্টা এখনোও অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

    তাই নওগাঁবাসীর দাবি; খুব দ্রুত নওগাঁর পতিসরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে একটি বিশ্বকবির নামে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হবে এ আশা সকলের।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close