• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় গৃহবধুর আত্মহত্যা

প্রকাশ:  ১৯ এপ্রিল ২০১৮, ১৮:২১
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর রাণীনগরে দাদন ব্যবসায়ীর চাপে ও অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় লীমা রানী (৩০) নামে এক গৃহবধূ কীটনাশক পানে আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার পারইল ইউনিয়নের খোলাগাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। গৃহবধূ লীমা রানী গ্রামের গোপেনের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূর স্বামী (গোপেন) ফল ব্যবসায়ী। দোকানের মালামাল কেনার জন্য তার স্ত্রী পার্শ্ববতী বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার কুন্ডগ্রাম ইউনিয়নের বশিকরা গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী মৃত গোবরার ছেলে আইয়ুবের কাছ থেকে মাসে ৫ হাজার সুদে ৩৫ হাজার টাকা, বাচ্চুর কাছ থেকে মাসে ৬ হাজার সুদে ৪৫ হাজার টাকা এবং ওসমান আলীর ছেলে বাবুর কাছ থেকে মাসে দেড় হাজার টাকা সুদে ৫ হাজার টাকা নেয়। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা দাবী, আশা, ব্র্যাক, বেডো ও গ্রামীণ ব্যাংক থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ঋণ নেয়।

সম্পর্কিত খবর

    প্রায় তিন মাস আগে দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উচ্চ সুদে টাকা নেয়া হলেও মাসে মাসে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় দাদন ব্যবসায়ীরা গৃহবধু লীমা রানীকে চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় তারা। গৃহবধু তাদের প্রস্তাবে রাজী না হয়ে ক্ষোভের বসে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কীটনাশক পান করে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আদমদিঘী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ দাদন ব্যবসায়ীর চাপে ও অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় লীমা রানী আত্মহত্যা করেছে।

    উল্লেখ্য, বশিকরা গ্রাম আদমদিঘী উপজেলায় হলেও খোলাগাড়ী গ্রামের পাশে। আর ওই গ্রামে আইয়ুব, বাচ্চু ও বাবু ছাড়াও কয়েক মিলে উচ্চ সুদে দাদন ব্যবসা করে থাকে। আর তাদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে টাকা নিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন লীমা রানীসহ অনেকেই।

    নিহতের খালা মায়া রানী বলেন, দাদান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উচ্চ সুদে টাকা নেয়ার পর আমার ভাগ্নীকে তারা চাপ সৃষ্টি করে। কয়েকদিন আগে একটি গরু বিক্রি করে কিছু টাকা পরিশোধ করে। আস্তে আস্তে টাকাগুলো পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু দাদন ব্যবসায়ীরা ভাগ্নীর বাড়িতে এসে চাপ সৃষ্টি করত এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। তারা কুপ্রস্তাবও দিয়েছে ভাগ্নীকে। রাগের ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে। তিনি এর উপযুক্ত বিচার দাবী করেন।

    দাদন ব্যবসায়ী বাচ্চু বলেন, সুদের উপর টাকা খাটাতাম। গৃহবধু লীমা রানীকেও টাকা দিয়েছি। তবে কত টাকা দিয়েছি মনে নাই। শুনলাম গৃহবধু মারা গেছে। এজন্য মনটা খারাপ। তবে তাকে কোন কুপ্রস্তাব বা টাকার জন্য চাপাচাপি করা হয়নি। পরে দেখা করে সাক্ষাতে কথা বলবে বলে জানান তিনি।

    রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাপাতালে মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তবে দাদন ব্যবসায়ীর কারণে আত্মহত্যার সম্পৃক্তা থাকলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    সারাদেশ

    অনুসন্ধান করুন
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close