মোটরসাইকেল আতঙ্কে পৌরবাসী
ময়মনসিংহ জেললার গফরগাঁও উপজেলায় পৌর শহরে নিয়ম নীতি তোয়াক্কা করে প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে সীমাহীন গতিতে ছুটছে মোটরসাইকেল। প্রশাসনেরও কোনো বিধি-নিষেধ না থাকায় দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে উঠতি বয়সের চালকরা এবং অনেক মোটরসাইকেলে যত্রতত্র ব্যবহৃত হচ্ছে ইমার্জেন্সি হর্ন। বিশেষ করে উঠতি বয়সি যুবকেরা তাদের পছন্দের বাইকে এ হর্ন ব্যবহার করছে। শুধু তাই নয় ইদানিং অনেকে তাদের ব্যক্তিগত গাড়ীতেও বাড়তি সুবিধা পেতে এই হর্ণ এর অপব্যবহার করছেন।
রোগী বহনকারী এ্যাম্বুল্যান্স, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের গাড়ীতে এসব ইমার্জেন্সি হর্ন ব্যবহারের আইনগত অনুমতি থাকলেও দিন দিন গফরগাঁওয়ের পৌরশহরের রাস্তাগুলোতে যত্রতত্র বেজে উঠছে এ গুরুত্বপূর্ণ হর্নের শব্দ।
সম্পর্কিত খবর
এতে আতঙ্কে ভুগছে পৌর শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ পথচারীরা। মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত ধোপাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খায়রুল আলম(৪০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে মৃত্যু হয়।
গত কিছু দিন পূর্বে ষোলহাসিয়া গ্রামের মোজাফর আলী(৮৫) শিবগঞ্জ রোডে মটর সাইকেলের ধাক্কা মাথায় আঘাত লাগায় এখন মানসিক ভারসাম্যহীন। ১৭ তারিখ মোসলেম উদ্দিন(৮০) বাসা থেকে বের হয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার মোটর সাইকেলের ধাক্কায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছে।
জানা যায়, পৌর শহরের গফরগাঁও সরকারি ডিগ্রি কলেজ, মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ইসলামিয়া সরকারি হাই স্কুল, ইসলামিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খায়রুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আদর্শ শিশু নিকেতন, উপজেলা পরিষদ বিদ্যানিকেতনসহ আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত। ফলে শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হেঁটে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। একই সড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চলাচল করায় আতঙ্কে থাকতে হয় তাদের। অন্যদিকে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কায় থাকে।
আরো জানা যায়, গফরগাঁও পৌর শহরে পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল চলাচল করে। এর মধ্যে বেশির ভাগেরই রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই আবার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই অনেক চালকের।
খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ কে এম মফিজুল হক বলেন, ‘প্রধান সড়কের পাশে আমার বিদ্যালয়। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের প্রচণ্ড শব্দে ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। সীমাহীন শব্দদূষণ ছাড়াও বেপরোয়া মোটরসাইকেলের জন্য সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। প্রতিদিন শত শত মেয়ে (শিক্ষার্থী) হেঁটে বিদ্যালয়ে আসে। আল্লাহ না করুন কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ’ গফরগাঁও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. শাহজাহান সাজু বলেন, ‘মানুষের মধ্যে (মোটরসাইকেল নিয়ে) আতঙ্ক আছে। ’
গফরগাঁও থানার ওসি আবদুল আহাদ খান বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলে। এখন থেকে বেপরোয়া গতি আর উচ্চ শব্দের মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওএফ