সিলেটে পানের বাজারে আগুন...
সিলেটে গিয়ে পান খাওয়া হয়নি এমন লোক খুবি কম পাওয়া যাবে। সিলেট অঞ্চলে ঘরে ঘরে ভাত কিংবা চা পানের পর পান-সুপারি খাওয়া দীর্ঘ দিনের সংস্কৃতি। সেই ঐতিহ্যকে লালন করে চলছে সিলেট অঞ্চলের মানুষ। শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে যে কোন বাড়ীতে অতিথি আপ্যায়নে পান সুপারি অতি আবশ্যক উপকরণ।
কিন্তু এই পানের মাত্রাতিরিক্ত দামের কারণে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ।পানের বাজারে আগুন হিমশিম খাচ্ছেন তারা।বর্তমানে পানের দাম এমন আকাশচুম্বী।কিছুদিন আগে যে পানের বিড়া ছিল ৬০/৭০ টাকা বর্তমানে সেই বিড়ার দাম ২০০/২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সম্পর্কিত খবর
পান খেয়ে অভ্যস্ত, কিন্ত সস্প্রতি অতিরিক্ত দাম হওয়ায় অনেকেই কিনছেন বাংলা পান ও খাসিয়া রাঙ্গা পান (লাল পান)।
বৃহত্তর সিলেটের ৯৫টি খাসিয়া পুঞ্জির মধ্যে মৌলভীবাজার কুলাউড়াতেই ৩৯টি পুঞ্জি রয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখানকার পুঞ্জিগুলোতে পানের চাষ করা হয়। সিলেট বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাসিয়া পানের চাহিদা ব্যাপক। লন্ডন, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য সহ অন্যান্য দেশেও পান রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়।
সম্প্রতি বৃষ্টির অভাবে পান চাষে ব্যাঘাত ঘটছে। পাহাড়ে বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় পান চাষে সম্পূর্ণ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়।গত কয়েক মাসের প্রচন্ড খরায় পান উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে গেছে।
জেলার পুটি ছড়া পান পুঞ্জির বনি পাস, জনি আংলা, রুবেল আইগান জানান পান কম উত্তোলন হওয়ায় পানের দাম বেড়ে গেছে। আগে ২টাকায় এক গুছি পান পাওয়া যেত এখন এক গুছি পানের দাম ৩০ টাকা।অতিরিক্ত দাম থাকায় অনেকেই খাচ্ছেন না মজাদার প্রিয় খাসিয়া পান।
প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা একটি গাছ থেকে মাসে হাজার টাকার উপরে পান বিক্রি করার কথা থাকলেও অনাবৃষ্টির ফলে এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে পানের দাম হয়ে উঠেছে আকাশ ছোঁয়া। খরায় পানের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে তেমন একটা পান উঠছে না।পান চাষীরাও বাজারে আগের চেয়ে অর্ধেক পান সরবরাহ দিচ্ছেন। তাও আবার চড়া দামে। বাজারে যেগুলো উঠছে সেগুলোর কদরও আগের চেয়ে অনেক বেশী। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে উপর্যুুপুরি দীর্ঘ খরা মৌসুমে কারণে পান পরিবহণে সৃষ্ট সংকটও এই দাম বাড়ার পেছনে আরো একটি কারণ বলে পান ব্যবসায়ীরা জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পান গাছ থেকে পান ঝরে যাচ্ছে। দেখতে গুল্ম জাতীয় পান গাছগুলোর অধিকাংশ লালচে হয়ে গেছে। পান গাছ মরে গিয়ে দেখা দিচ্ছে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব।পান চাষ পাহাড়ি জনগোষ্টির একমাত্র আয়ের উৎস।আগামী জুন থেকে জুলাই মাস খাসিয়া পানের চারা রোপণ করার উপযুক্ত সময়।কিন্তু দীর্ঘ খরায় চারা পান গাছ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে আগে বিভিন্ন সাইজের পান বিড়া (৮০ টি পানে এক বিড়া) ২০ টাকা, ৪০ টাকা, ৮০ টাকা ও ৯০ টাকা হারে বিক্রি হতো। এখন ২০ টাকার পানের বিড়া ৮০ টাকা, ৪০ টাকার পানের বিড়া ১২০ টাকা, ৮০ টাকার পানের বিড়া ১৫০ টাকা ও ৯০ টাকার পানের বিড়া ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ক্রেতাদের পাশাপাশি পান বিক্রেতারাও তাদের ব্যবসা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
পুটি ছড়া পান পুঞ্জির বনি পাস, জনি আংলা, রুবেল আইগান জানান পান কম উত্তোলন হওয়ায় পানের দাম বেড়ে গেছে। আগে ২ টাকায় এক গুছি পান পাওয়া যেত এখন এক গুছি পানের দাম ৩০ টাকা। অতিরিক্ত দাম থাকায় অনেকেই খাচ্ছেন না মজাদার প্রিয় খাসিয়া পান।