গল্পটা এমন না হলেও পারতো...
প্রতিটা ঘটনার পেছনে একটা গল্প থাকে। পেছনের গল্পটা সবারই অজানা থাকে।
আমাদের নাগরিক জীবনে প্রতিটা মানুষই অতীতের পায়ে হেঁটে বর্তমানের পিঠে চড়ে ভবিষ্যতের পথে চলছি।
সম্পর্কিত খবর
কিন্তু আমরা বারবার নিজেদের অতীত ভুলে যাই। অকৃতজ্ঞতা আর স্বার্থপরতা আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। নিজের অজান্তে এর চর্চা চালিয়ে গেলেও এই সহজ স্বাভাবিক বিষয়টি আমরা মানতে পারি না। মানতে পারেননি আসিফ আকবরও। আর তাই একসময় তিনি যাদেরকে নিজের মধ্যে ধারন করেছেন, তাদের প্রতিই উগড়ে দিয়েছেন ঘৃণা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আসিফ আকবর, শফিক তুহিন, প্রীতম আহমেদসহ প্রত্যেকেই প্রতিটি মানুষই পছন্দের এবং কাছের মানুষ। আমার ধারনা আসিফ আকবর একসময় তাদের খুব কাছের ছিলেন বলেই ওভাবে বলেছিলেন। আবার এও সত্য আসিফ আকবরের মতো একজন লিভিং লিজেন্ড ওভাবে না বললেও পারতেন।
সবচেয়ে বড় কথা সঙ্গীতাঙ্গন একটা বৃহৎ পরিবার। প্রতিটা পরিবারে যেমন আর্জন থাকে, ভালোবাসা থাকে, সুখ থাকে তেমনি দ্বন্দ্ব থাকাও অস্বাভাবিক নয়। পরিচয়হীন কারো সঙ্গেই কখনো দ্বন্দ্ব হয় না। দ্বন্দ্ব বিভেদ কাছের মানুষের সঙ্গেই হয়। কিন্তু সেটা ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার পমতো প্ল্যাটফর্মে ভক্ত-শ্রোতাদের সামনে কেন হবে? নিজেরা নিজেরা কী এর সমাধান করা যেতো না? অথবা সিনিয়দের কেউ কেন এগিয়ে আসলেন না? এ দায় আমাদের সবার ঘাড়েই কোনো না কোনোভাবে বর্তায়।
আসিফ আকবর বলেছেন গান বিক্রি করেননি।
প্রীতম শফিক তুহিন বলছেন বিক্রি করেছেন।
বলাবলিটা ফেসবুকে কেন?
বসার উদ্যোগ কেন নেয়া হলো না?
সব কিছুর উর্ধ্বে মনের ভেতর একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, আমরা সবাই কী বড্ড বেশি আত্মকেন্দ্রিক আর স্বার্থপর হয়ে ওঠছি?
আমরা কী সত্যি নিজের বাইরে অন্য কিছু ভাবা একেবারে ভুলে গেছি?
কপিরাইটের মামলা হতে পারে। তাই বলে ৫৭ ধারা? যে ধারা নিয়ে এতো হই চই, সেই ধারার ফাঁদে আমরাই পা দিলাম?
আমাদের সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
আমরা নতুন করে বিশ্বাস করতে শিখি যে ফেসবুকের আগেও জীবন ছিল।
ফেসবুকের আগেও দ্বন্দ্ব ছিল।
ফেসবুকের আগেও ঝগড়া ছিল।
তাই জীবন ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াময় করার আগে আরেকবার ভাবি।
বোধ করি আসিফ আকবরের পরম শত্রুও চাইবেন না তিনি এভাবে হাজতে থাকুন।
যদি চায়, তাহলে আর যাই হোক তাকে শিল্পীর কাতারে ফেলা যাবে না।
তাদের শিল্পী সত্ত্বা জাগ্রত হোক, ভেতরের সত্যিকার মানুষটাকে সামনে আনার চেষ্টা হোক।
তবেই আসতে পারে বাংলা গানের জয়।
আসিফ আকবর আবার ফিরে আসুক সুষ্ঠু স্বাভাবিক জীবনে।লিখেছেন- রণক ইকরাম, সাংবাদিক ও লেখক।