• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

যুবলীগ নেতা প্রধান শিক্ষক সেজে বানালেন ৫ ভুয়া পরীক্ষার্থী!

প্রকাশ:  ১৮ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:৫১
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
ফাইল ছবি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপানী পরীক্ষার (পিইএসসি) প্রথম দিনে ৫ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থী বাড়াইপাড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার হয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসে।

রোববার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে হাতীবান্ধা সরকারি এসএস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে থেকে তাদের শনাক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার কথিত প্রধান শিক্ষক ও টংভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও পরে তকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, হাতীবান্ধার বাড়াইপাড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন জাহেদা খাতুন। তার পাঠানো তালিকা অনুযায়ী ২০১৭ সালেও পিইএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সেখানকার শিক্ষার্থীরা। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের পরীক্ষার জন্য নিয়মানুযায়ী (ডিআর ভুক্ত) চলতি বছর মে মাসের দিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পরীক্ষার্থীদের নাম ঠিকানা জমা দেন তিনি।

কিন্তু হঠাৎ করেই নিজেকে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক দাবি করেন টংভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি ওই মাদ্রাসার নামে নতুন করে ৭ শিক্ষার্থীর নাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন। এতে করে দীর্ঘদিন ধরে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা জাহেদা খাতুনের তালিকা বাতিল হয়ে যায়। ফলে এনিয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন জাহেদা খাতুন।

এরই প্রেক্ষিতে রোববার পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হাতীবান্ধা সরকারি এসএস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শণে যান ইউএনও। সেখানে বড়াইপাড়া এবতেদায়ী মাদ্রাসার ৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫ জনকে অংশ নিতে দেখা যায়। এ সময় ইউএনও অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে, ওই ৫ জনই হাতীবান্ধার বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। ফলে ওই সব শিক্ষার্থীদেরকে কক্ষ থেকে বের করে এনে পরবর্তীতে কেন্দ্রে না আসতে বলা হয়। পাশাপাশি ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক দাবিদার ও যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় দেয়া হয়।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা সরকারি এসএস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব রেজাউল করিম প্রধান জুয়েল জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবিবুর রহমান হাবিবকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তবে পরীক্ষা শেষে হাবিবুর রহমানকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন. আমি লালমনিরহাটে একটি মিটিং-এ এসেছি। তবে পরীক্ষা সংক্রান্ত ঘটনায় ইউএনও সাহেব তাকে ফোন করেছিল ।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই মাদ্রাসার দুই জন প্রধান শিক্ষকের মধ্যে কে আসল তা বলা মুশকিল। তবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদেরকে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার ঘটনায় হাবিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনা হয়েছিল। এনিয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোলায়মান মিয়া বলেন, ওই ৫ জন শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র থেকে বেড় করে দিয়েছেন ইউএনও স্যার। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লালমনিরহাট
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close