আসামে কি বাঙালিদের বেছে বেছে খুন করা হচ্ছে?
ভারতের আসামে কি বাঙালিদের বেছে বেছে খুন করা হয়েছে? খুনের ঘটনার পর থেকে অনেকেই এই প্রশ্ন তুলেছেন। একই দাবি কয়েকটি সংগঠনেরও। তার মধ্যে অন্যতম অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া। তাদের মতে বেছে বেছে বাঙালিদের খুন করা হয়েছে।
এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আর তাই মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের উচিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উদ্যোগ নেওয়া।
সম্পর্কিত খবর
কিন্ত বেছে বেছে বাঙালিদের খুন করার কথা মানতে চাইছেন না, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরেই শহর। সেখানে অনেকেই মনে করেন ওই পাঁচ জনকে বেছে বেছে খুন করা হয়নি। তাদের কেউ কেউ ২০১৬ আর ২০০৩ সালের দু’টি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিলেন।
২০০৩ সালে এক সঙ্গে দশজন বিহারীকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। ২০১৬ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল।
কথা হচ্ছিল সরবত বিক্রেতা অনিল যাদবের সঙ্গে। তার জন্ম-কর্ম সবই তিনসুককিয়ায়। তিনি জানান, তার কোনও ভয় নেই। একটা ঘটনা ঘটেছে ঠিকই কিন্তু তার মানে এই নয় যেকোনও এক বিশেষ সম্প্রদায়কে বেছে নেওয়া হয়েছে।
প্রায় একই কথা শোনালেন নিতাইলাল দাস। তিনসুকিয়ার দুর্গাবাড়ি এলাকায় বাস করে বহু বাঙালি পরিবার। অনেক বছর ধরে এখানেই পানের দোকান চালান নিতাই। বলেন, তারা বাঙালিদের খুন করবে সেটা ভেবে নেওয়া ঠিক নয়।
কেউ কেউ অবশ্য বললেন অন্য কথা। তাদের একজন চা বাগানের কর্মী মধু সাউ। মাসে তিন চারটি করে খুনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি দেখে ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
প্রায় ৪০ বছর ধরে অাসামে আছেন সিকান্দার সিং। তার বয়স এখন ৬০। জানান আতঙ্কেই দিন কাটছে। তেমন কিছু হলে দৌঁড়ে প্রাণ বাঁচাতে হবে বলে তার আশঙ্কা। অাসামের বাঙালি স্বরূপ বণিক জানান, এনআরসি’র পর পরিস্থিতি খুব একটা অনুকূলে নেই।
এরই মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তড়জোর। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তিনি বলেন, আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটলে স্বজন হারানো মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম। কিন্তু তিনি (বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী) ভবনের উদ্বোধন করতে চেন্নাই চলে গেলেন, নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন না!
তবে সোনওয়াল জানিয়েছেন তার সরকার সমস্ত ব্যবস্থা করেছে। সূত্র: এনটিভি।
/অ-ভি