খাশোগি হত্যার নতুন ‘কাহিনী’ শোনালেন সৌদি কর্মকর্তা
ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসের ভেতর জামাল খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করে সৌদি কর্তৃপক্ষের বিবৃতি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। খাশোগি হত্যার সেই বর্ণনা বিশ্বাসযোগ্য হয়নি অনেকের কাছেই। এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডের নতুন বর্ণনা দিয়েছেন একজন ঊর্ধ্বতন সৌদি কর্মকর্তা।
সৌদি আরবের আগের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, জামাল খাশোগি সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পরপরই সেখানে উপস্থিত সৌদি কর্মকর্তাদের সাথে তার হাতাহাতি শুরু হয়। সে সময় পেছন থেকে গলার ওপর দিয়ে হাত জাপটে ধরে নিরস্ত্র করার সময় তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। কিন্তু ঊর্ধ্বতন একজন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে যে ভাষ্য এখন জানিয়েছেন তা একটু ভিন্ন।
সম্পর্কিত খবর
বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা জানান, '১৫ সদস্যের সৌদি দলটি ইস্তাম্বুলে এসেছিল জামাল খাশোগিকে অপহরণের উদ্দেশ্যে। তারা খাশোগিকে কনস্যুলেট থেকে তুলে নিয়ে ইস্তাম্বুলের বাইরে একটি 'সেফ হাউজে' আটকে রাখবেন এমনই পরিকল্পনা ছিল। খাশোগি যদি সৌদি আরবে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান, তখন তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা ছিল।'
সৌদি কর্মকর্তার দাবি, মাহের মুতরেব নামের একজন সৌদি কর্মকর্তা ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে খাশোগির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সরকার তাকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নিতে চায় বলে খাশোগিকে জানান তিনি। খাশোগি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। জানান, বাইরে তার জন্য কেউ একজন অপেক্ষা করছেন। আমি যদি এক ঘণ্টার মধ্যে ফিরে না যাই, তাহলে তিনি তুর্কি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
তিনি বলেন, যে ১৫ সদস্যের দল সৌদি আরব থেকে গিয়েছিল, তারা জামাল খাশোগিকে ওষুধ দিয়ে অচেতন করে অপহরণের হুমকি দেয়। কিন্তু খাশোগি তাতে বাধা দিলে তখন তাকে জাপট ধরলে তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর এই সৌদি দলের একজন সদস্য জামাল খাশোগির কাপড় খুলে তা পরেন এবং কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ভান করেন যেন মনে হয় জামাল খাসোগজি আসলেই বেরিয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য, ২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। শুরুতে সৌদি আরব দাবি করেছিল তিনি ভবন থেকে জীবিত বের হয়ে গেছেন। তুরস্ক দাবি করে, ১৫ সদস্যের একটি গোয়েন্দা স্কোয়াড কনস্যুলেটের ভেতরেই খাশোগিকে হত্যা করেছে। সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে প্রথমবারের মতো তারা খাশোগি নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে।
-একে