• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও প্রক্সিবাজি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভর্তিচ্ছুরা

প্রকাশ:  ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১২:১৭
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে সোমবার (২২ অক্টোবর)। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকেরা ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছেন। তবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও প্রক্সিবাজির যে রীতি চালু হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকরা। তাদের আকুতি- ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের মতো কোন ঘটনা যেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে না ঘটে, সে ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলছেন, রাবির ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম অনেক স্বচ্ছ। ভর্তিচ্ছুদের উদ্বিগ্নের কোন কারণ নেই। জালিয়াতি ঠেকাতে প্রতিবছরের মতো এবারও সতর্ক অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। আর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আব্দুস সোবহান দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। নীতি বিবর্জিত হয়ে কেউ এ ধরনের অপকর্মে জড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৫টি ইউনিটে ১০টি গ্রুপে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন সকাল ৮টায় ‘সি-১’, সকাল ১০টায় ‘সি-২’, দুপুর ১২ টায় ‘ডি-১’, আড়াইটায় ‘ডি-২’ এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় ‘বি-১’ গ্রুপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় দিন সকাল ৮টায় ‘বি-২’, সকাল ১০টায় ‘ই-১’, দুপুর ১২টায় ‘ই-২’, আড়াইটায় ‘এ-১’ এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় ‘এ-২’ গ্রুপের পরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে। প্রতিটি ইউনিটে সর্বচ্চো ৩২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ বছর পাঁচটি ইউনিটের আওতায় ৫৯টি বিভাগে মোট চার হাজার সাতশোটি আসনের বিপরীতে এক লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০টি প্রবেশপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জালিয়াতি ঠেকাতে পরীক্ষার হলে মোবাইল, ক্যালকুলেটর, ঘড়িসহ সকল প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ভর্তিচ্ছুরা জানান, সম্প্রতি রাবির ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জালিয়াতি প্রচেষ্টার মতো একটি ঘটনা ফাঁস হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি ইউনিটে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়গুলো খুবই উদ্বেগের। ভর্তিযুদ্ধ নামক এক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখানে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে প্রশ্নফাঁস ও প্রক্সির মতো ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন চক্র জালিয়াতি করে অযোগ্য শিক্ষার্থীদের ভর্তি করিয়ে দিচ্ছে। এতে প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া দরকার।

রংপুর থেকে আসা এক ভর্তিচ্ছু ইসরাত অনন্যা বলেন, ‘খুব ইচ্ছা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। প্রস্তুতিও নিয়েছি। আশা করছি টিকবো। কিন্তু ভয় হচ্ছে প্রশ্নফাঁস ও প্রক্সি নিয়ে। যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের জন্য হতাশাজনক।’

দিনাজপুর থেকে আসা ভর্তীচ্ছু আবির পরীক্ষা দেবেন ‘এ’ ও ‘ই’ ইউনিটে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে অনেকেই এখানে ভর্তি হয়। জড়িতরা আটক হলেও এ ধরনের ঘটনা থামছেই না। এসব ঘটনা বন্ধ হওয়া দরকার। এখানে প্রকৃত মেধাবীদেরই সুযোগ পাওয়া উচিত।’

এদিকে, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং জালিয়াতি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। উপাচার্য বলেন, ‘জালিয়াতি রোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা জালিয়াতি ঠেকাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবো। পাশাপাশি পরীক্ষা চলাকালীন ক্যাম্পাসে ভ্রাম্যমাণ আদালত দায়িত্ব পালন করবে। কেউ অবৈধ পন্থা অবলম্বন করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

পরীক্ষা চলাকালে অভিভাবকদের বিশ্রামের ব্যবস্থা: এর আগে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন অভিভাবকেরা একাডেমকি ভবনের আশেপাশে বিশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে থাকতেন। বসার জায়গা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তেন অভিভাবকেরা। এ বিষয়টি মাথায় রেখে অভিভাবকদের জন্য কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন ও শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসে খাবারের মূল্য নির্ধারণ: ভর্তি পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসের খাবারের দোকানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মূল্যে যেন খাবার বিক্রি করতে না পারে সেজন্য সব খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যদি কোন দোকানি অতিরিক্ত দাম নেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে প্রক্টর দপ্তরকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ওএফ

রাবি,পরীক্ষা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close