• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

সাধুর হাট জমজমাট, সব পথ যেন মিশেছে কেবলই লালনধামে

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:৫৬
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১২৮ তম তিরোধান দিবসে লালনের ছেউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে মানুষের ঢল নেমেছে। সব পথ যেন এসে মিশে গেছে মরা কালীর নদীর তীরে আখড়া বাড়িতে। কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা ছেঁউড়িয়া। কিন্তু এখন সে রাস্তায় যেতে সময় লাগছে ১ঘন্টার উপরে। দাওয়াত নেই, পত্র নেই তবুও সাঁইজির এক উদাসীর টানে এই ধামে সাধূ-গুরু বাউলেরা ছাড়াও সাধারণ দর্শনার্থীদের ভিড়ই বেশি।

একতারা, দোতারা, ঢোল ও বাঁশির সুরে মুখরিত হয়ে উঠেছে লালনভূমি ছেঁউড়িয়া। মঙ্গলবার বাউলের চারণভূমিতে আসা হাজার হাজার লালন-ভক্ত, সাধু-গুরু কর্তৃপক্ষের দেওয়া সকালের অধিবাসে পায়েশ ও মুড়ির বাল্যসেবা গ্রহণ করেন। বুধবার তাঁরা মরাকালী গঙ্গায় গোসল সেরে মাছ-ভাত ও ত্রিব্যঞ্জন দিয়ে (তিন ধরনের সবজি দিয়ে তৈরি তরকারি) দুপুরের খাবার পুণ্যসেবা গ্রহণ করবে।

মূল গেট থেকে ভিতরে ঢুকে অডিটোরিয়ামের নিচে বসে আছে প্রবীণ বাউল নহির শাহ। বয়স প্রায় ৭৯ বছর। শিষ্যদের নিয়ে গানে মজেছিলেন। এখনো আটা স্বাস্থ্য। দেখে বোঝা যায় না বয়স। গান থামালে কথা হয় এ বাউলের সাথে। গান দিয়েই শুরু করেন কথা। খাচার ভিকর অচিন পাখি কবনে আসে যায়। এই দেশেতে এই সুখ হলো আবার কোথায় যায়না জানি । গানের মর্ম কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন বুঝে নিতে হবে।

তিরোধান দিবসে প্রতিবছরের মতো এবারও সাধক লালনের আধ্যাত্মিক দর্শন লাভের আশায় দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ প্রাণের টানে ছুটে আসেন। একতারা, দোতারা, ঢোল ও বাঁশির সুরে মুখরিত হয়ে উঠেছে লালনভূমি ছেঁউড়িয়া। একই সাথে চলছে দীক্ষা পর্ব। নব্য শিষ্যরা গুরুদের সেবা করতে উদগ্রীব। যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে তাদের অটুট লক্ষ্য।

বাউল ফকির পূনেন্দু দাস জানান, এ পথে আসা দু’মাস হয়েছে। এখনো কিছুই শিখতে পারিনি। গুরুর সাথেই থাকি দিনরাত। তার খেদমত করায় আমার কাছ। গুরু বলেছে সময় হলে গুরুবাক্য দেয়া হবে। বাউলসাধক ফকির লালন সাঁইয়ের জীবন-কর্ম, জাতহীন মানবদর্শন, মরমি সংগীত ও চিন্ত-চেতনা এখন আর এই ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে সীমাবদ্ধ নেই। দেশের সীমানা পেরিয়ে তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব। তাঁর সংগীত ও ধর্ম-দর্শন গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।

লালন শাহ তার জীবদ্দশায় দোল পূর্ণিমায় আখড়াবাড়িতে ভক্ত-অনুসারীদের নিয়ে সারা রাত গান-বাজনা ও নানা তত্ত্ব কথা আলোচনা করতেন। সাঁইজির দেহ ত্যাগের পরও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

ওএফ

লালন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close