• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

যেমন হতে হবে কোরবানির পশু

প্রকাশ:  ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৬:৪৩
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

কোরবানিকে ঘিরেই এ দিনে ধনী-গরীব সকলের আনন্দ। কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবানের জন্য এটি আদায় করা ওয়াজিব।

এক্ষেত্রে সামর্থ্যবান হিসেবে ধর্তব্য হবে প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যার মালিকানায় ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে।

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’-মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫

কোরবানির পশুর প্রকারভেদ

ইসলামী বিধান মতে সর্বমোট ছয় প্রকারের পশু দিয়ে কোরবানি করা যায়। উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা। এসব পশু দ্বারা কোরবানি সহীহ হওয়ার দুটি শর্ত রয়েছে-

ক. গৃহপালিত হতে হবে। বন্য হলে কোরবানি হবে না । গৃহপালিত হওয়ার ক্ষেত্রে পশুর ‘মা’ কে দেখতে হবে। মা যদি বন্য হয়, ‘বাবা’ গৃহপালিত হলেও পশুটিকে বন্য গণ্য করা হবে। পক্ষান্তরে মা যদি গৃহপালিত হয় তাহলে ‘বাবা’ বন্য হলেও পশুটিকে গৃহপালিত ধরা হবে।

খ. কোরবানির পশুগুলো নির্দিষ্ট বয়সের হতে হবে। উট কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়সের হওয়া জরুরী। গরু এবং মহিষ কমপক্ষে দুই বছর, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছর হওয়া জরুরী। তবে ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে এটুকু ছাড় আছে যদি ৬/৭ মাসেই এক বছর বয়সের ভেড়া বা দুম্বার মতো মোটা তাজা হয়ে যায় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী করা বৈধ হবে; অন্যথায় নয়। পক্ষান্তরে উট, গরু, মহিষ এবং বকরির ক্ষেত্রে বর্ণিত বয়সের একদিন কম হলেও তা দ্বারা কোরবানি বৈধ হবে না।

উল্লেখ্য, কোরবানির পশুর বয়স আরবী মাস ও বছর হিসেবে গণনা করা হবে। (শামী: ৯/৪৬৫-৬৬,হিন্দিয়া:৫/২৯৭)

বন্য পশুদিয়ে কোরবানি করার হুমুক

বন্য পশুদিয়ে কোরবানি হয় না। এ কারণে নীলগাই, বনগরু এবং গয়াল নামে আমাদের দেশে যে পশু পাওয়া যায় তার গোশত হালাল হলেও তা দিয়ে কোরবানি করা বৈধ নয়। (বাদায়েউস সানায়ে’ ৫/৬৯)

হরিণ দ্বারা কোরবানি করা

হরিণের গোশত হালাল। তবে হরিণ বন্য হওয়ার কারণে তা দিয়ে কোরবানি জায়েয হবে না। এমনকি তা গৃহপালিত হয়ে গেলেও কোরবানি বৈধ নয়। (ফতোয়া আলমগিরী:৫/২৯৭)

পশুর দাঁত হওয়া বয়সের আলামত মাত্র

যে পশুর যতটুকু বয়স হলে কোরবানি বৈধ হয় ততটুকু বয়সে তার দুটো দাঁত উঠে। তাই এ দাঁতগুলোকে বয়সজনিত দাঁত বলা হয়। এ দাঁতগুলো কোরবানির উপযুক্ত হওয়ার আলামত বা চিহ্ন। তাই প্রত্যেক পশুর পর্যাপ্ত বয়স হলেই কোরবানি বৈধ। দাঁত দেখা যাক বা না যাক।

তবে এক্ষেত্রে বয়স পূর্ণ হওয়ার নিশ্চিত প্রমাণ থাকতে হবে। যেহেতু দিন-তারিখ নির্ণয় করে বয়সের ব্যাপার নিশ্চিত হওয়া কঠিন তাই আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমত যে কোরবানিদাতার সুবিধার্থে এ বয়স পূর্ণ হওয়ার আলামত স্বরূপ দুটি দাঁত সাধারণত উঠে যায়।

অর্থাৎ, বয়স পূর্ণ হলেও দাঁত কখনো কখনো নাও উঠতে পারে কিন্তু দাঁত উঠলে বয়স পূর্ণ না হয়ে পারে না। একারণে দুটি দাঁত দেখা গেলে কুরবানীর পশুর বয়স যে পূর্ণ হলো তার নিশ্চিত প্রমাণ মিলে। বিধায় দাঁত ওঠা একটি জরুরী বিষয় সাব্যস্ত হয়েছে। মূলত দাঁতের কথা হাদীসে নেই বয়সের কথাই হাদীসে বলা আছে। (তাফসীরে বাইযাবী, ১/৬)

কোরবানির পশুর বয়স

গত কোরবানির ঈদের প্রথম দিনে যে বকরীর জন্ম সেই বকরী এ বছর ঈদের প্রথম দিনে কোরবানি করা যাবে না; বরং ২য় দিন কোরবানি করাই শ্রেয়। যাতে বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়ার নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যায়। তেমনিভাবে গরু, মহিষ এবং উটের ক্ষেত্রেও একই কথা।

এখানে শরীয়তের নীতিমালা হচ্ছে- কোরবানির ব্যাপারে পশুর সর্বনিম্ন যে বয়স হওয়া বাধ্যতামূলক তার কিছু কম হলেও কোরবানি সহীহ হবে না । তাই এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

অর্থঃ “তোমরা অবশ্যই নির্দিষ্ট বয়সের পশু কোরবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য দুষ্কর হলে ছয় মাসের মেষ-শাবক কোরবানি করতে পারো।” (আবু দাউদ-২৭৯৭)।

/এসএফ

ঈদুল আজহা,কোরবানির পশু
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close