নারায়ণগঞ্জে চার বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনে হত্যা
নারায়ণগঞ্জ শহরের জল্লারপাড় এলাকায় শিহাব উদ্দিন আলিফ নামে চার বছরের এক শিশুকে অমানুষিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নিখোঁজের ছয় ঘন্টা পর বিকেল পাঁচটায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এক যুবককে আটক করেছে।
নিহত আলিফ জল্লারপাড় আমহাট্টা এলাকার সৌদি প্রবাসী আলমগীরের ছেলে।
সম্পর্কিত খবর
নিহতের স্বজনরা ও এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটার দিকে বাড়ির সামনে উঠানে খেলা করছিল আলিফ। ওই সময় থেকেই সে নিখোঁজ হয়। পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী মিলে আশেপাশের বাড়িঘর ও পাড়া মহল্লায় খোঁজাখুঁজি করলেও আলিফের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিকেল পাঁচটার দিকে প্রতিবেশী আলী খোকনের বাড়ির নীচতলার ভাড়াটের তালাবদ্ধ রুম থেকে এলাকাবাসী বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করে আলিফের লাশ। এসময় আলিফের দুই হাত বাঁধা ও মুখে রুমাল গুঁজে দেয়া ছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতেরও চিহ্ন রয়েছে।
এলাকাবাসী আরো জানায়, গত এক মাস আগে সম্রাট ও শহীদ নামে দুই যুবক রাজমিস্ত্রীর পরিচয় দিয়ে আলমগীরের প্রতিবেশী আলী খোকনের বাড়ির নীচতলার একটি রুম ভাড়া নেয়। তাদের রুমের তালা ভেঙ্গেই আলিফের লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ সম্রাটকে আটক করলেও শহীদ পলাতক রয়েছে এবং মামলা না করতে মোবাইল ফোনে নিহত আলিফের পরিবারের স্বজনদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে।
চার ভাই-বোনের মধ্যে আলিফ ছিল সবার ছোট এবং এলাকাবাসীর খুব আদরের। আলিফের বাবা আলমগীর সংসারের আয় রোজগারের জন্য গত পনের বছর যাবত সৌদি আরবে প্রবাস জীবন যাপন করছেন। প্রতি বছর দেশে আসেন। এবারের ঈদ উপলক্ষে গতকালই দেশে এসেছেন তিনি।
আলিফের বাবা আলমগীরের দাবী, আলী খোকনের দুই ভাড়াটে সম্রাট ও শহীদ নামের দুই যুবকই তার ছেলেকে হত্যা করেছে। যেহেতু তাদের ঘর থেকেই আলিফের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলের হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
এদিকে সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলিফের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সেখানে ছেলের লাশ বুকে নিয়ে প্রায় উন্মাদের মতো কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বাবা আলমগীর। ছেলেকে কিছুতেই বুক ছাড়া করতে চাইছিলেন না। প্রায় এক ঘন্টা কান্নাকাটির পর তিনি নিজেই ছেলের লাশ বুকে করে মর্গে নিয়ে দিয়ে আসেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সম্রাট নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তবে তার রুমমেট ও সহকর্মী শহীদকে গ্রেফতার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। কারা কি কারণে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তা তদন্তের পর জানা যাবে। এ ব্যাপারে তদন্তসহ মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
-একে