নির্বাচনে অনিয়ম রোধ
কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও নমনীয় ইসি
নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েও তা বহাল রাখতে পারছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত মাসের প্রথমার্ধে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপনির্বাচনে অনিয়মের কৈফিয়ত দিতে খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার হুমায়ন কবীর ও জেলা প্রশাসক মো. আমিনুল আহসান এবং সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহকে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে তলব করা হবে। কিন্তু সুনামগঞ্জের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলেও খুলনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। গতকাল রবিবার পর্যন্ত খুলনার পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে কোনো চিঠি পাঠানো হয়নি।
ইসি সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, ইসির আগের সিদ্ধান্তের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর নানা রকম তদবির ও চাপের কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। আর সুনামগঞ্জের ডিসি ও এসপিকে ঢাকায় তলব করা হলেও ঘটনা সম্পর্কে তাঁদের ব্যাখ্যায় ইসি সন্তোষ প্রকাশ করে। এ ছাড়া ওই দুই নির্বাচনে অনিয়মের জন্য যেসব কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল তাঁরাও দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তি পাচ্ছেন না। এঁদের কয়েকজনকে তিরস্কার আর কয়েকজনের ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর
সিদ্ধান্ত নিয়েও খুলনার পুলিশ কমিশনার ও ডিসিকে ডেকে কেন কৈফিয়ত চাওয়া হয়নি জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ গতকাল বলেন, আরো কয়েকটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই তদন্ত শেষ হওয়ার পর এক সঙ্গে অনেককেই ডাকা হতে পারে।
ইসি সচিব এর আগে ১০ জুলাই বলেছিলেন, ‘খুলনা সিটি নির্বাচনে তিনটি কেন্দ্রে অনিয়মের বিষয়ে খুলনার পুলিশ কমিশনার, ডিসি এবং সুনামগঞ্জে পৌরসভা নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে অনিয়মের জন্য সেখানকার ডিসি-এসপিকে ঢাকায় তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কিন্তু কবে তাঁদের ডাকা হবে তার তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।’ তিনি আরো বলেছিলেন, ‘এসব কর্মকর্তার কাছে কমিশন এই ব্যাখ্যা চাইবে যে এত পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট থাকতেও সেখানে কেন অনিয়ম হয়েছে?’
ইসি সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তখন জানিয়েছিলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে অসন্তুষ্ট কমিশন। বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা আসায় নির্বাচনে অনিয়মে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ইসি। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যেকোনো নির্বাচনে অনিয়ম রোধে কঠোর হবে কমিশন।
গত ১৫ মে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি নির্বাচন এবং ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপনির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। সূত্র: কালের কণ্ঠ
/এসএম