বাংলাদেশে প্রায় কোটি মানুষ হেপাটাইটিস ভাইরাসে আক্রান্ত

দেশে প্রতি ৫০০ জনে একজন ‘হেপাটাইটিস সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। যাদের মধ্যে তরুণ ও যুবকের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি মানুষ ‘হেপাটাইটিস বি’ বা ‘হেপাটাইটিস সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। দেশে নারীদের (২৩.৯ শতাংশ) চেয়ে পুরুষদের (৭৬.১ শতাংশ) আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। আবার ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সের মধ্যে ‘হেপাটাইটিস বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রকোপ বেশি।

বৃহস্পতিবার(২৬ জুলাই) সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস’ উপলক্ষে হেপাটোলজি সোসাইটি আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘হেপাটাইটিস নির্মূল করা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার(২৮ জুলাই) বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস।

সেমিনারে বলা হয়, বিশ্বে হেপাটাইটিসে আক্রান্ত ৩২৫ মিলিয়ন মানুষ, যাদের ৯০ শতাংশই নিজেদের রোগ সম্পর্কে অজ্ঞ। বাংলাদেশে ৮৫ লাখেরও বেশি মানুষ ‘হেপাটাইটিস বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত, যাদের মধ্যে প্রায় ৫৭ লাখ পুরুষ এবং ২৮ লাখ নারী। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী আক্রান্ত তরুণ-তরুণীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। সন্তানদানে সক্ষম নারীর সংখ্যা (১৮ থেকে ৪৫ বছর) ১৮ লাখ। আর আক্রান্ত শিশু-কিশোরের সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ।

সেমিনারে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে একিউট হেপাটাইটিসে (প্রচলিত জন্ডিসের) আক্রান্তদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাসে, ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ‘বি’ ভাইরাস, ৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ‘এ’ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া লিভার সিরোসিসের জন্য ‘হেপাটাইটিস বি’ ভাইরাস ৬০ শতাংশ, ‘সি’ ভাইরাস ৩০ শতাংশ দায়ী। লিভার ক্যান্সারের জন্য ‘হেপাটাইটিস বি’ ভাইরাস ৬৫ শতাংশ এবং ‘সি’ ভাইরাস ১৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী। হেপাটাইটিস ‘ই’ এবং ‘এ’ ভাইরাস পানিবাহিত রোগ আর হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস রক্তবাহিত রোগ।

বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মবিন খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও হেপাটোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. শাহিনুল আলম।

সেমিনারে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নুরুদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক ডা. আবু সাঈদ, ডা. মোতাহার হোসাইন, ডা. মো. শাহিনুল আলম, ডা. গোলাম আজম, ডা. গোলাম মোস্তফা, ডা. মোড়ল নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

সূত্র- বিবিসি বাংলা।