• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সুন্দরবন থেকে অবাধে চলছে গাছ পাচার

প্রকাশ:  ২০ জুলাই ২০১৮, ১০:৩৮
খুলনা প্রতিনিধি

মংলায় আবারো পুরোদমে শুরু হয়েছে সুন্দরবনের মূল্যবান সুন্দরী, পশুর ও বাইন গাছ পাচার। গত দুই দিনে অভিযান চালিয়ে ১টি নৌকাসহ ৮০ ঘনফুট সুন্দরীর জ্বালানীকাঠসহ ৪ জনকে আটক করে বন বিভাগ। এছাড়া গতকাল মরা পশুর অফিস সংলগ্ন এলাকা থেকে ২টি নৌকাসহ ৪০ পিস সুন্দরী মোটা লগ গাছ উদ্ধার করেছে রেঞ্জ কর্মকর্তা।

অন্যদিকে বড় পদ্মাপতি ওই এলাকায় তল্লাশী চালিয়ে ৮৪টি মোটা সুন্দরী ও পশুর গাছ কাটা গোড়ালী (মেরের) চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে বনরক্ষীরা মোটা অংকের টাকার বিনিময় জ্বালানিসহ আটক ৪ জনকে ছেড়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা এখন এ গাছ পাচারের সাথে জড়িত বলে জয়মনি এলাকার স্থানীয়রা জানিয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ শুকুর হাওলাদার জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদ পেয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ শাহিন কবিরসহ একদল বনরক্ষী পশুর নদীর নন্দবালা খালে অভিযান চালায়। এ সময় একটি নৌকা ভর্তি প্রায় ৮০ ঘনফুট সুন্দরী জ্বালানী কাঠ নিয়ে যাওয়ার সময় মোনাফসের হোসেন, ফকা হাওলাদার, লাইলী বেগম ও লাইলীর স্বামীসহ ৪ জনকে আটক করে নন্দবালার ওসি ও চাঁদপাই স্টেশনের বন কর্মীরা। পরে আটক ৪ জনসহ কাঠ ভর্তি নৌকাটি চাঁদপাই অফিসে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেয়। পরে চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ কামরুল আহসানের পরামর্শে আটক ৪ জনকে মোটা অংকের চুক্তির বিনিময়ে রাত ২টার দিকে ছেড়ে দেয়।

অন্যদিকে গত ১৪ জুলাই রাতে মরা পশুর ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন বড় পদ্মাপতি খালের পাড়ে ৮৪ পিস সুন্দরী গাছ কেটে মজুদ করে চোরাকারবারীরা। মরাপশুর অফিসের ইনচার্জ মোঃ শাহাদতের সহযোগিতায় তা থেকে ৪৪ পিস সুন্দরী ও পশুর গাছ পাচার করতে পারলেও ৪০ পিস গাছ ওখানে রয়ে যায়। এদিকে চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ শাহিন কবির (এসিএফ)’র অভিযানের তোড় জোড় দেখে তড়িঘড়ি করে ৪০ পিস গাছ ওইদিন রাতে মরা পশুর অফিস খালে এনে ডুবিয়ে রাখে ওসি শাহাদত।

১৭ জুলাই রাতে রেঞ্জ কর্মকর্তা গোপনে খবর পেয়ে লোক দিয়ে ডুবন্ত ওই ৪০ পিস গাছ উদ্ধার করে। যার পরিমাণ প্রায় প্রায় সাড়ে ৬শ’ ঘনফুট। এছাড়াও গতকাল সকালে বড় পদ্মাপতি খালের পাড়ে তল্লাশী চালিয়ে ৮৪টি বড় বড় সুন্দরী ও পশুর গাছ কাটা চিহ্নিত করে এ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে বন বিভাগের মরাপশুর অফিস ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, গাছ উদ্ধার করেছে রেঞ্জ কর্মকর্তা, তিনিই সকল ঘটনা জানেন। চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ শাহিন কবির বলেন, নন্দবালা খাল থেকে একটি নৌকাসহ ৮০ ঘনফুট সুন্দরীর জ্বালানী উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখানে কোন লোককে আটক করা হয়নি।

এছাড়া মরা পশুরের অফিস ইনচার্জ মোঃ শাহাদত গত ১৪ জুলাই সুন্দরী ও পশুর গাছগুলো এনে অফিস খালে রাখে। আমি গোপনে খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে গিয়ে ওখান থেকে ৪০ পিস গাছ উদ্ধার করেছি। তার পরেও ১৪ জুলাইয়ের ঘটনা কেন রেঞ্জে জানানো হয়নি সে বিষয়ে খুলনা বন সংরক্ষক (সিএফ) ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কে জানানো হয়েছে। তারাই ব্যবস্থা নেবেন।

এ ব্যাপারে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদ হাসান বলেন, মরাপশুর খাল থেকে ৪০ পিস গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ওসি মরা পশুর এটি এনে গোপন রেখেছে। কেন গোপন রেখেছে বা এ গাছ পাচারের সাথে তিনি জড়িত কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওএফ

গাছ পাচার,সুন্দরবন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close