উলিপুর উপ-নির্বাচন
জাপা’র দুর্গ ভাঙ্গতে মরিয়া আওয়ামী লীগ
আসন্ন উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৭ কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। দলীয় প্রধানের ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজ পছন্দের প্রার্থীর গুণকীর্তনসমৃদ্ধ স্ট্যাটাস দিয়ে চালানো হচ্ছে প্রচার প্রচারণা। মনোনয়ন পেতে নির্বাচনী এলাকাসহ দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গেও প্রার্থীরা যোগাযোগ করছেন বলেও জানা গেছে। অনেকে নির্বাচনী প্রচারনা হিসেবে ইফতার মাহফিলের আয়োজনসহ ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেই চলছেন। উপজেলার সর্বত্রই চলছে নির্বাচনি আমেজ। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সবখানে চলছে পছন্দের প্রার্থীর গুনগান।
জাতীয় পার্টির দূর্গ হিসেবে পরিচিত কুড়িগ্রাম -৩ উলিপুর আসন। জাতীয় পার্টির জন্মলগ্ন থেকে এ আসনে পার্টির নেতারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী সদ্য প্রয়াত সাংসদ এ কে এম মাঈদুল ইসলাম মুকুল গত ১০ মে মৃত্যুতে এ আসনটি শুন্য হয়। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে তফশিল ঘোষনা করেছেন। আগামী ২৫ জুলাই ভোট গ্রহন হবে। মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ২৪ জুন। মনোনয়ন প্রত্যাহরের শেষ দিন আগামী ৩ জুলাই। প্রতীক বরাদ্দ ৪ জুলাই।
সম্পর্কিত খবর
আসন্ন উপ-নির্বাচনে এ আসন নিজের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভব্য প্রার্থীরা। এ লক্ষ্যে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও সাফল্যসহ নিজ উন্নয়নমূলক কাজগুলোকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এ আসনে মূখ্য দাবী উঠেছে স্থানীয় প্রার্থীর। এ ইস্যুকে কাজে লাগাচ্ছেন তারা। তবে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বদ্বিতা হবে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে। তবে জাতীয়পার্টিও আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া।
গত ১০ জুন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আলহাজ হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ জনসভা করে প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেছেন। ফলে দীর্ঘদিন দলীয় কর্মকান্ড না থাকলেও বর্তমানে জাতীয়পার্টির নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। তারাও তাদের প্রার্থী সনিক প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ আক্কাছ আলী সরকারের পক্ষে ব্যাপক গণ-সংযোগ করে চলছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ব্যক্তিগভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। ক্লিন ইমজের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি অনেকটা আশাবাদি জয়লাভের বিষয়ে।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রার্থী অধ্যাপক ডা. আক্কাছ আলী সরকার বলেন, উলিপুরে লাঙ্গলের দুর্গকে কেউ ভাঙতে পারবে না। আমি নির্বাচিত হলে উলিপুর উপজেলাকে একটি স্মার্ট উপজেলায় পরিনত করার চেষ্টা করবো। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ মানুষের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করবো। যাতে এলাকার প্রতিটি মানুষ চিকিৎসা সেবা পান। সেইসাথে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহরকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে চেষ্টা করবো। পার্টির চেয়ারম্যান আলহাজ হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ সাহেবকে এ এলাকার মানুষ খুব ভালবাসেন। আমার বিশ্বাস এ ভালবাসার প্রতিদান আমি দিতে পারবো ইনশাল্লাহ।
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতি শিউলি নিজস্ব জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে সরকারের সাফল্যসহ নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন সভা সেমিনারে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরছেন, ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। তিনি দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গে ও যোগাযোগ রক্ষাও করে আসছেন। এলাকায় তার অবস্থান বেশ মজবুত।
মনোনয়নের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতি শিউলি বলেন, মাঠপর্যায়ে জরিপ করে মনোনয়ন প্রদান করলে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকার বিজয় উপহার দিতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও বলেন গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। পরে জোটের কারনে দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াই। সাধারণ মানুষ নৌকায় ভোট দিতে চান। এ জন্য এ আসনে নৌকা প্রতীক খুবই প্রয়াজন। মনোনয়ন আমাকে দেয়া হলে লাঙ্গলের দুর্গ ভেঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসন উপহার দিতে পারবো।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মনটু, অধ্যাপক এম.এ মতিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সরকার, সাজাদুর রহমান তালুকদার সাজু পোষ্টার ও বিলবোড টাঙ্গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উলিপুরের ১২ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং চিলমারী উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-৩ উলিপুর আসন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮শ’ ১১ জন। -একে