• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

'অনেক অভিমানী ছিলে তুমি'

প্রকাশ:  ২৩ মে ২০১৮, ১৭:৫৭
বিনোদন ডেস্ক

তাজিন আহমেদকে স্মরণ করে ফেসবুকে আজ বেশকিছু কথা লিখেছেন নাট্যনির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। তিনি সেখানে লেখেন, ‘তাজিন আহমেদ, সবসময় হাসি মাখা এই মেয়েটির আগে আমি চিনতাম তার মা দিলারা জলি আন্টিকে। আমার বাবা আর জলি আন্টি একই অফিসে কাজ করতেন। অনেক আদর করতেন আমাকে। তারপর কেটে গিয়েছে অনেক বছর।’

চয়নিকা চৌধুরী তাজিন আহমেদের প্রশংসা করে আরো লিখেছেন, ‘তারপর বিয়ের পর আরণ্যক-এর কারণে এবং ভোরের কাগজের জন্য তাঁর লেখার ফ্যান হয়ে গেলাম আমি। তাঁর ভদ্র মার্জিত ব্যবহার, আর মুখে সবসময় মিষ্টি হাসি মুগ্ধ করত আমাকে। ২০০১ সালে আমার প্রচারিত প্রথম নির্মাণ আমার লেখা নাটক ‘এক জীবনে’র প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করলেন তিনি।তাঁর অভিনয় দেখে চোখে জল এসেছিল। সেই থেকে সখ্যতা। আমার অজস্র নাটক আর সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন এই মিষ্টি মেয়েটি। তাঁর অনেক গুণ। লেখা, আবৃত্তি, অভিনয়, উপস্থাপনা।’

সম্পর্কিত খবর

    তাজিন আহমেদকে নিয়ে কয়েকটি স্মৃতিচারণা করে চয়নিকা চৌধুরী বলেন, “একবার আমাকে একটি স্ক্রিপ্ট দিয়ে বললেন, ‘চয়ন আপু,আমার দেখা তুমি বেস্ট ডিরেক্টর। আমার একটা স্ক্রিপ্ট ডিরেকশন দিবে তুমি? আমি খুব খুশি হবো। মনে আছে নাটকটির নাম ছিল ‘দুই হৃদয়’। অভিনয় করেছিলেন তারিন আর শোয়েব। তারিনের সেই আবেগময় দারুণ অভিনয় চোখ ভিজিয়েছিল। দারুণ স্ক্রিপ্ট ছিল।লিখতো খুবই ভালো। তারপর তাঁর সাথে ৭১ টিভিতে অনেক টক শোতে বসা হয়েছে। স্পেশাল কোনো শো হলেই আমাকে খুঁজত। দেখা হলেই অনেক আড্ডা গল্প। ফোনে কথা হতো দুই-তিনদিন পরপর। এইবার নারী দিবসের একটি কাজে তাকে আমি একটি সিন-এ কাস্ট করেছিলাম। কী যে খুশি হলো!! সেজে-গুজে এলো। বিজরী, দীপা আমি সেলিম ভাই সব্বাই আড্ডায় মেতে উঠেছিলাম। সেটাই শেষ আড্ডা।”

    তাজিন আহমেদের সঙ্গে চয়নিকা চৌধুরীর শেষ কথা হয়েছিল গত ১৫ মে। এ বিষয়ে চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘শেষ কথা হয়েছিল ১৫ মে। সেদিন আমার শুটিং ছিল না। আগের রাতে বলল, চয়ন আপু, উত্তরা এলে এসো। কথা আছে। কফি খাব আমরা। ১৬-১৭ শুটিং থাকাতে বললাম, ২০ তারিখের পর আমরা বসব। সেটাই শেষ কথা। আহারে! কী কথা ছিল যা বলতে চেয়েছিল! আর শোনা হবে না কখনো? চয়ন আপু বলে মিষ্টি হাসি দিয়ে জড়িয়ে আর ছবি তুলবে না কেউ। কেউ বলবে না,চয়ন আপু, বুকে এত কষ্ট কেন?’

    চয়নিকা চৌধুরী আরো বলেন, ‘তাজিন,বিকেল থেকে রাত আজ তোমার সাথেই ছিলাম।কত্ত সুখ দুখের কথা মনে পড়ে গেল! আমি যত না ভালোবাসতাম তার চেয়েও তুমি আমাকে অনেক বেশি.. সত্যিকারের ভালোবাসতে..। অনেক অভিমানী ছিলে তুমি! বিশাল বিশাল টেক্সট করতে। উত্তর না দিলে কষ্ট পেতে, রেগে যেতে। সব মনে পড়ে যাচ্ছে। কত্ত কী!! সত্যি জীবনটা অনেক ছোট। এক জীবনে এত কষ্ট পেলে তুমি! কিছুই করতে পারিনি তোমার জন্য। ক্ষমা করে দিও। আমি সত্যি লজ্জিত। অনেক কিছু করা উচিত ছিল। পারিনি। পরপারে সুখে থেক তাজিন। ওইখানেই তুমি অনেক ভালো থাকবে! অনেক দিন শান্তিতে ঘুমাতে পারনি।

    আজ তুমি পরম শান্তিতে ঘুমাও..। তুমি কি দেখতে পাচ্ছ কত্ত মানুষ, তোমার কত কলিগ এসেছে তোমাকে দেখতে! সবাই তোমাকে কত ভালোবাসে! অনেক প্রার্থনা। অনেক ভালোবাসা। চোখ ভিজে যাচ্ছে জলে! আন্টির জন্য চিন্তা হচ্ছে। অনেক অনেক প্রার্থনা।

    জানি, পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ!! আহ!! কী কষ্ট!! আমার লেখা এক জীবনে নাটকের মতো বলতেই হয়..এক জীবনে এত কষ্ট কেন বলো তো!!’

    /এ আই

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close