‘খুব রাজনীতি করছিস, তোদের শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) স্কুল অ্যান্ড কলেজে কোচিংয়ে বাধ্যতামূলক পরীক্ষা দেয়ার নামে প্রতি মাসে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলের সামনের ফটকে বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ, পরীক্ষার আগে বন্ড সই করিয়ে নেয়া বন্ধসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয় তারা। পরে অধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী স্কুলের ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। কয়েকজন শিক্ষক সঙ্গে সঙ্গে সেখানে হাজির হয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ বন্ধ করতে বলেন। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন- ‘খুব রাজনীতি করছিস, তোদের শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো।’ পরে সেখানে আসেন অধ্যক্ষ মো. শফিউল ইসলাম। একপর্যায়ে শিক্ষকদের হুমকি-ধামকির মুখে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়। ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাওয়া সাংবাদিকদেরও তিরস্কার করেন শিক্ষকরা।
সম্পর্কিত খবর
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- প্রতি মাসে কোচিংয়ে পরীক্ষার জন্য ৩০০ টাকা দিতে বাধ্য করা হয়। উত্তীর্ণ না হলে শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারবে না- এমন শর্তে পরীক্ষার আগে বন্ডসই করানো হয়। যা শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এছাড়া তুচ্ছ কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বহিস্কার করা হয়। এসব ব্যাপারে অভিভাবকরা কথা বলতে আসলে তাদের সঙ্গেও শিক্ষকরা দূর্ব্যবহার করেন।
দুই জন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্ড সই করে পরীক্ষায় বসার বিষয়টি বাতিল করার বিষয়ে সম্প্রতি কথা বলতে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তারা। সেখানে উপস্থিত অন্য শিক্ষক এবং অধ্যক্ষরা বিষয়টি পাত্তা না দিয়ে তা বহাল রাখা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন। কিন্তু এতে শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক চাপ পড়ছে। পরীক্ষা পাশ না করলে শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারবে না এটা তো নিয়ম। এর জন্য বন্ড সইয়ের প্রয়োজন নেই বলে জানান তারা।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শফিউল ইসলাম বলেন, ‘কোচিং করানো হয় পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের। সেখানে কোনো টাকা নেয়া হয় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি মাসে পরীক্ষা নিয়ে থাকি। সেখানে পরীক্ষার ফিস নেয়া হয়। অবৈধভাবে কোনো কোচিং ফিস বা পরীক্ষার ফিস আদায়ের সুযোগ নেই।’ পরীক্ষার আগে বন্ড সই করানো বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফেল করা শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে তুলে দেওয়ার জন্য অনেক সুপারিশ আসে। তা বন্ধ করতে আগে বন্ড সই করিয়ে নিচ্ছি আমরা।’