কী হচ্ছে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় !
নগরবাসিকে আর ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাফিক সিগনালে ভাগান্তি পোহাতে হবে না। অসহ্য এ যন্ত্রণা থেকে নগরবাসিদের জন্য আধুনিকায়ন করা হচ্ছে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা। ম্যানুয়াল পদ্ধতি বাদ দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলবে ঢাকার ট্রাফিক সিগনাল। ফুলবাড়িয়া, পল্টন, গুলশান, মহাখালীতে প্রাথমিক অবস্থায় এর পাইলটিং কাজ শুরু করেছে ঢাকা পরিবহন সমম্বনয় সংস্থা (ডিটিসিএ)।
এ বিষয়ে ডিটিসির প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। প্রাথমিক অবস্থায় এই চার জায়গাতে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। যদি এর থেকে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় তাহলে রাজধানীতে আরো ১০০টি ইন্টারশেকসন করা হবে।
সম্পর্কিত খবর
সম্প্রতি বুয়েটের এক গবেষনায় দেখা গেছে রাজধানী ঢাকাতে পিক আওয়ারে যানজটের কারণে প্রতি ঘন্টায় গড়ে গাড়ি চলে পাঁচ কিলোমিটার গতিতে। পরিবহন ব্যবস্থা এবং ট্রাফিকের অব্যবস্থাপনাকেই এর মূল কারন হিসাবে দেখছে বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে বুয়েটের পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শামসুল হক বলেন, আমাদের সবাই এখন প্রকল্পে বিশ্বাসী, কিন্তু প্রকল্প কোন স্থায়ী সমাধান না। যে কোন প্রকল্প বাস্তবায়নের কিছু পূর্বশর্ত থাকে যা এখানে নেই। বিআরটিসি প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩’শ গাড়ির লাইসেন্স দিচ্ছে, ফুটপাত দখল থাকায় মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে।
এর আগে গুলশান, নিউমার্কেট এলাকায় জাইকার অর্থায়নে এরকম কাজ করা হয়েছিলো, যা কোন কাজে আসেনি। তিনি বলেন, আমাদের রাস্তার বড় একটি অংশ রিক্সার দখলে। তাছাড়া পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রনহী। অতএব এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে আমাদের পরিবহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে এসব প্রকল্প কোন আলোর মুখ দেখবে না।
জাইকার অর্থায়নে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা আধুনিক করার জন্য ৪৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পে জাইকা ১৯ ও বাংলাদেশে ২৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে বলে জানান ডিটিসিএ। প্রকল্পটি জুন ২০১৫ থেকে জুন ২০১৮ সালে বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।
এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি), ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), পরিকল্পনা কমিশন, আইএমইডিসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও জাইকা বিশেষজ্ঞ দল প্রকল্পটির দেখবাল করছে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে সিগন্যাল সাইকেল খুব দীর্ঘ (প্রায় ৫ মিনিট) অপেক্ষা বা কখনও কখনও আর বেশি সময় লাগে। পথচারীদের জন্য কোন সংকেত কাজ করে না, পথচারীরা যে কোনও সময় ক্রসিং অতিক্রম করে এবং রেড সিগন্যালে গাড়ি চালানো হয়। ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক রাইট টার্নিং নিষিদ্ধ করা হয়। মেন্যুয়াল পদ্ধতিতে সঠিক লাইনের গাড়ি ট্র্যাফিক দ্বারা প্রভাবিত হয়।
ট্রাফিক সিগনাল আধুনিকায়নের মাধ্যমে ট্র্যাফিক সংকেতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং সংকেতের সঠিক সময় ট্র্যাফিক ভলিউম অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে। এছাড়া লেন মার্কিং, ডানদিকে লেন প্রদান করাসহ সিগন্যাল সাইকেল ছোট হতে হবে প্রায় ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে। পথচারীদের চলাচলের জন্য অপেক্ষা করা স্থান বড় করা হবে, যানবাহন লাইনে রাখতে হবে। ট্র্যাফিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে যানবাহন নিয়ন্ত্রন করা হবে। প্রতিটি ইন্টারশেকসনে জন্য ২টি ত্রিভুজ ক্যামেরা থাকবে। ডিএমপি কমান্ড এবং কন্ট্রোল সেন্টার থেকে সিসিটিভি ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিনার (ট্রাফিক) মির রেজাউল আলম বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ, সিগনালগুলোর কাজ শেষ হলে আমরা বিষটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো। তবে আশা করি ভালো ফল পাওয়া যাবে। এবং যানজট কমাতে সহায়তা করবে।
/এজেড