• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

শেয়ারবাজারে নজর বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৮:১৪
পুর্বপশ্চিম ডেস্ক

চীন ও ভারতের পর এবার দেশের পুঁজিবাজারে নজর পড়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণ দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ দুটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ার কেনার প্রতিযোগিতায় নামলেও বিশ্বব্যাংক সে পথে হাঁটছে না। সংস্থাটি বরং পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহায়তা করতে চায়। সম্প্রতি পুঁজিবাজার সম্পর্কে নিজেদের পর্যালোচনাসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

মূলত তিনটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে বিশ্বব্যাংক মিশন কাজ করতে চায়। প্রথমত, সমমূলধন ও ঋণভিত্তিক সম্পদের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা পর্যালোচনা করা; দ্বিতীয়ত, পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রকল্প পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা দেওয়া এবং তৃতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি ঋণ উপকরণ, স্পেশাল পারপাস বন্ড, নন-সভেরিন বন্ড, বিভিন্ন সিকিউরিটাইজেশনসহ পুঁজিবাজারের অবকাঠামোগত প্রকল্পে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম ও সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করা। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ঢাকায় একটি সম্মেলন করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছে আইএফসি-বিশ্বব্যাংক গ্রুপ।

সম্পর্কিত খবর

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুসলিম চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক কাজ করতে চায়। এই বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অরিজিৎ চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় আইএফসি-বিশ্বব্যাংক গ্রুপও বলছে, এডিবির সঙ্গে সমন্বয় করে তারা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করবে। এ লক্ষ্যে তারা কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আমাদের কাছে একটি ‘এইড মেমোয়ার’ পাঠিয়েছে। তবে তারা কী ধরনের কাজ করতে চায় সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এখনো আমাদের কাছে আসেনি। এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ প্রস্তাব পাঠালে তখন আমরা বিবেচনা করে দেখব তাদের সহায়তা কীভাবে নেওয়া যায়।

    পুঁজিবাজার সম্পর্কে এইড মেমোয়ারে যা বলেছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ : দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের মূল্যায়ন হচ্ছে— এই দুটি পুঁজিবাজারের আকার অপেক্ষাকৃত ছোট এবং ব্যাপকভাবে সমমূলধনভিত্তিক। এই দুই পুঁজিবাজারের মোট মূলধনের পরিমাণ দেশের জিডিপির মাত্র ২২ শতাংশ, যেখানে ভারতের পুঁজিবাজারের মূলধনের পরিমাণ দেশটির জিডিপির প্রায় ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া থাইল্যান্ডের পুঁজিবাজার দেশটির জিডিপির ৯৬ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৫৫ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঋণ বাজার দেশটির জিডিপির প্রায় ১৫৯ শতাংশ।

    বিশ্বব্যাংক বলছে, ডিএসই-তে সবমিলিয়ে ৫৬৭টি তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের মধ্যে ৩০০টি স্টক ২২১টি সরকারি ট্রেজারি বন্ড (যেগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে সক্রিয় নয়) এবং দুটি কর্পোরেট বন্ড রয়েছে। সবগুলো সিকিউরিটিজের বাজার মূলধনের পরিমাণ ৫১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সব ঋণ সিকিউরিটিজ হিসাবে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং দুটি কর্পোরেট বন্ডের মূলধন বাজারের ০ দশমিক ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশের বাজার পরিচালনার জন্য কোনো কেন্দ্রীয় ক্লিয়ারিং কাউন্টারপার্টি (সিসিপি) নেই। সিসিপির অনুপস্থিতিতে স্বচ্ছতার মান নির্ধারণকারী কোনো তাৎপর্যপূর্ণ বিধিমালা নেই। ফলে সীমান্ত লেনদেনের উন্নয়নে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আস্থার অভাব রয়েছে। আঞ্চলিক বিনিময় সহযোগিতার অনুপস্থিতি বাজারে গতিশীলতা ও বৃদ্ধির সম্ভাব্য পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় বিনা দ্বিধায় এবং সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ক্লিয়ারিং পদ্ধতিতে লেনদেন ছাড়া সীমান্ত লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়বে না বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ।

    এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে খুব সহজে স্বল্প সুদে দ্রুত ঋণ পাওয়া গেলেও পুঁজিবাজার থেকে ঋণ গ্রহণের বিষয়টি খুব জটিল, ব্যয়বহুল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। সংস্থাটির দাবি যে কোনো ঋণ গ্রহণের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনেক বেশি সময় নেয়। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে সুশাসনের অভাবের পাশাপাশি ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মতো বিষয়গুলোর মানও দুর্বল। বাংলাদেশের ঋণ ব্যবস্থা মূলত ব্যাংক নির্ভরশীল এমনটি জানিয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ বলছে, শতকরা ৮০ ভাগ ঋণ আসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে। তবে ব্যাংকিং খাতের এই ঋণ নির্ভরতাও খুব একটা কাজে আসছে না।

    কারণ, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দীর্ঘমেয়াদে নির্দিষ্ট সুদে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা নেই। ব্যাংকগুলো মূলত স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি ঋণ দিতে পছন্দ করে। অপরদিকে পুঁজিবাজার থেকে শিল্প-উদ্যোক্তারা যে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ গ্রহণ করবেন, সেই সুযোগও সীমিত। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের মতে তফসিলি ব্যাংকগুলোর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ সীমাবদ্ধতা মূলত তিনটি বড় মার্কেট গ্যাপের কারণে। দেশীয় ব্যাংক সহজে বৈদেশিক সম্পদ ধারণ করতে পারে না।

    ফলে তারা বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দিতে পারে না; বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি সম্পদের পরিমাণ কম। এই কারণেও তারা পাঁচ থেকে ছয় বছর মেয়াদি ঋণ দিতে পারে না। এ ছাড়া ব্যাংকগুলো সম্পদের পরিবর্তনশীল হারের ওপর নির্ভর করে, ফলে তারা নির্দিষ্ট হারে ঋণ প্রদান করতে পারে না। জানা গেছে, গত বছরের জুনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের আটটি উন্নয়নশীল দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নে একটি যৌথ প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্বব্যাংক ও তাদের অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)।

    বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কেনিয়া, মরক্কো, পেরু, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আর্জেন্টিনার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর পুঁজিবাজার উন্নয়নে অবদান রাখতে আইএফসি-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক জয়েন্ট ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (জেসিএপি) চালু করে তারা। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক ও আইএফসির প্রতিনিধি দল পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করতে চাইছে। গত ডিসেম্বরে ঢাকায় এসে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের একটি টিম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করেছে।

    শেয়ারবাজারে নজর বিশ্বব্যাংকের

    পুর্বপশ্চিম ডেস্ক

    চীন ও ভারতের পর এবার দেশের পুঁজিবাজারে নজর পড়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণ দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ দুটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ার কেনার প্রতিযোগিতায় নামলেও বিশ্বব্যাংক সে পথে হাঁটছে না। সংস্থাটি বরং পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহায়তা করতে চায়। সম্প্রতি পুঁজিবাজার সম্পর্কে নিজেদের পর্যালোচনাসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

    মূলত তিনটি উদ্দেশ্য সামনে রেখে বিশ্বব্যাংক মিশন কাজ করতে চায়। প্রথমত, সমমূলধন ও ঋণভিত্তিক সম্পদের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা পর্যালোচনা করা; দ্বিতীয়ত, পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রকল্প পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা দেওয়া এবং তৃতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি ঋণ উপকরণ, স্পেশাল পারপাস বন্ড, নন-সভেরিন বন্ড, বিভিন্ন সিকিউরিটাইজেশনসহ পুঁজিবাজারের অবকাঠামোগত প্রকল্পে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম ও সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করা। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ঢাকায় একটি সম্মেলন করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছে আইএফসি-বিশ্বব্যাংক গ্রুপ।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুসলিম চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক কাজ করতে চায়। এই বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অরিজিৎ চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় আইএফসি-বিশ্বব্যাংক গ্রুপও বলছে, এডিবির সঙ্গে সমন্বয় করে তারা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করবে। এ লক্ষ্যে তারা কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আমাদের কাছে একটি ‘এইড মেমোয়ার’ পাঠিয়েছে। তবে তারা কী ধরনের কাজ করতে চায় সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এখনো আমাদের কাছে আসেনি। এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ প্রস্তাব পাঠালে তখন আমরা বিবেচনা করে দেখব তাদের সহায়তা কীভাবে নেওয়া যায়।

    পুঁজিবাজার সম্পর্কে এইড মেমোয়ারে যা বলেছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ : দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের মূল্যায়ন হচ্ছে— এই দুটি পুঁজিবাজারের আকার অপেক্ষাকৃত ছোট এবং ব্যাপকভাবে সমমূলধনভিত্তিক। এই দুই পুঁজিবাজারের মোট মূলধনের পরিমাণ দেশের জিডিপির মাত্র ২২ শতাংশ, যেখানে ভারতের পুঁজিবাজারের মূলধনের পরিমাণ দেশটির জিডিপির প্রায় ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া থাইল্যান্ডের পুঁজিবাজার দেশটির জিডিপির ৯৬ শতাংশ, ভিয়েতনাম ৫৫ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঋণ বাজার দেশটির জিডিপির প্রায় ১৫৯ শতাংশ।

    বিশ্বব্যাংক বলছে, ডিএসই-তে সবমিলিয়ে ৫৬৭টি তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের মধ্যে ৩০০টি স্টক ২২১টি সরকারি ট্রেজারি বন্ড (যেগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে সক্রিয় নয়) এবং দুটি কর্পোরেট বন্ড রয়েছে। সবগুলো সিকিউরিটিজের বাজার মূলধনের পরিমাণ ৫১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সব ঋণ সিকিউরিটিজ হিসাবে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং দুটি কর্পোরেট বন্ডের মূলধন বাজারের ০ দশমিক ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশের বাজার পরিচালনার জন্য কোনো কেন্দ্রীয় ক্লিয়ারিং কাউন্টারপার্টি (সিসিপি) নেই। সিসিপির অনুপস্থিতিতে স্বচ্ছতার মান নির্ধারণকারী কোনো তাৎপর্যপূর্ণ বিধিমালা নেই। ফলে সীমান্ত লেনদেনের উন্নয়নে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আস্থার অভাব রয়েছে। আঞ্চলিক বিনিময় সহযোগিতার অনুপস্থিতি বাজারে গতিশীলতা ও বৃদ্ধির সম্ভাব্য পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় বিনা দ্বিধায় এবং সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ক্লিয়ারিং পদ্ধতিতে লেনদেন ছাড়া সীমান্ত লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়বে না বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ।

    এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে খুব সহজে স্বল্প সুদে দ্রুত ঋণ পাওয়া গেলেও পুঁজিবাজার থেকে ঋণ গ্রহণের বিষয়টি খুব জটিল, ব্যয়বহুল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। সংস্থাটির দাবি যে কোনো ঋণ গ্রহণের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনেক বেশি সময় নেয়। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে সুশাসনের অভাবের পাশাপাশি ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মতো বিষয়গুলোর মানও দুর্বল। বাংলাদেশের ঋণ ব্যবস্থা মূলত ব্যাংক নির্ভরশীল এমনটি জানিয়ে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ বলছে, শতকরা ৮০ ভাগ ঋণ আসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে। তবে ব্যাংকিং খাতের এই ঋণ নির্ভরতাও খুব একটা কাজে আসছে না।

    কারণ, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দীর্ঘমেয়াদে নির্দিষ্ট সুদে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা নেই। ব্যাংকগুলো মূলত স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি ঋণ দিতে পছন্দ করে। অপরদিকে পুঁজিবাজার থেকে শিল্প-উদ্যোক্তারা যে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ গ্রহণ করবেন, সেই সুযোগও সীমিত। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের মতে তফসিলি ব্যাংকগুলোর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ সীমাবদ্ধতা মূলত তিনটি বড় মার্কেট গ্যাপের কারণে। দেশীয় ব্যাংক সহজে বৈদেশিক সম্পদ ধারণ করতে পারে না।

    ফলে তারা বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দিতে পারে না; বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি সম্পদের পরিমাণ কম। এই কারণেও তারা পাঁচ থেকে ছয় বছর মেয়াদি ঋণ দিতে পারে না। এ ছাড়া ব্যাংকগুলো সম্পদের পরিবর্তনশীল হারের ওপর নির্ভর করে, ফলে তারা নির্দিষ্ট হারে ঋণ প্রদান করতে পারে না। জানা গেছে, গত বছরের জুনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের আটটি উন্নয়নশীল দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নে একটি যৌথ প্রকল্প হাতে নেয় বিশ্বব্যাংক ও তাদের অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)।

    বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কেনিয়া, মরক্কো, পেরু, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আর্জেন্টিনার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর পুঁজিবাজার উন্নয়নে অবদান রাখতে আইএফসি-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক জয়েন্ট ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (জেসিএপি) চালু করে তারা। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক ও আইএফসির প্রতিনিধি দল পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করতে চাইছে। গত ডিসেম্বরে ঢাকায় এসে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের একটি টিম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করেছে।

    সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close