• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

রাজশাহীবাসীর উন্নয়ন নিয়ে লিটনের যত স্বপ্ন

প্রকাশ:  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৪:৫৩ | আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০২:১০
রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহীতে ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা রয়েছে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের। আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রাজশাহীবাসী তাকে সুযোগ দিলে দ্রুত এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চান তিনি।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমার প্রধান কাজ হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এজন্য গ্যাস নিয়ে এসেছিলাম। যাতে ৫০ টির মতো সোয়েটার বা লেদার কারখানা করা যায়। এটা করা সম্ভব হলে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এতে শুধু শহর নয়, শহরতলীর মানুষ উপকৃত হবে। এই যে বাড়তি অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা হবে, এতে একজন রিকশাওয়ালাও সুফল ভোগ করবে। এটিই আমার মূল লক্ষ্য।’

সম্পর্কিত খবর

    রাজশাহীসহ চার সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আগামী মে মাসে হতে পারে। সেক্ষত্রে তফসিল হবে হয়তো এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ নির্বাচনে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আর ওই নির্বাচনকে ঘিরে নিজের পরিকল্পনা, স্বপ্ন ও মহানগরীর উন্নয়ন নিয়ে ইতোমধ্যেই একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরী করেছেন।যা তার নির্বাচনী প্রচারনায় থাকবে।

    রাসিক নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি বিষয়ে জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনার বড় ছেলে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে যে প্রস্তুতি গুলো নিতে হয়, তা নিচ্ছি। নেতাকর্মীদের ভোটার তালিকা তৈরি, সংশোধন, কেউ বাদ গেলে তাকে তালিকায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ প্রদান ও নবায়ন দুইটি কাজই চলছে। উৎসব মুখর পরিবেশে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে আসছেন, সদস্য হচ্ছেন। নেতাকর্মীরা ঢাকঢোল পিটিয়ে আসছেন। অন্য যেকোন বারের তুলনায় এবার আওয়ামী লীগের সদস্যপদ নেবার সংখ্যাও বেশি। সদস্যপদ গ্রহণে বিশেষ করে নারী ও তরুণদের মধ্যে আগ্রহ অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।’

    এর কারণ ব্যাখা করে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, আওয়ামী লীগ সম্পর্কে যে ভ্রান্ত ধারণা ছিল, সেগুলোর বিষয়ে সত্য পত্র-পত্রিকায়, রেডিও টেলিভিশনে আসার কারণে সবার ভুল ধ্যান ধারণা ভেঙে গেছে। এই কারণে আওয়ামী লীগকে তারা দেশের উন্নয়নের মূল শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে। আর স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি তো বটেই। দেশকে বর্তমান বিশ্বের উপযোগী করে তোলা, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ ভাগ্য গড়ে তোলা সব কিছুকেই সামনে নিয়ে তারা মনে করছে আওয়ামী লীগই সেই প্লাটফরম, যা তাদের স্বপ্ন বা আশা পূরণ করতে পারে।’

    লিটন বলেন, ‘ আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে আমরা মহল্লা কমিটি গঠন করতে যাচ্ছি। আমাদের গঠনতন্ত্রে মহল্লা কমিটি গঠনের বিধান আছে। মহল্লা কমিটি হচ্ছে আমাদের ইউনিট অর্থাৎ সবচেয়ে তৃর্ণমূল পর্যায়ের কমিটি। মহল্লা কমিটি গঠনের পর করা হবে সেন্ট্রাল কমিটি। ভোটের পরে করা হবে ওয়ার্ড কমিটি।’

    নির্বাচনের পোলিং এজেন্টদের তালিকা করা হচ্ছে জানিয়ে লিটন বলেন, ‘আমরা শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের সাথে বৈঠক শুরু করে দিয়েছি প্রায় মাস দুয়েক আগ থেকেই। নির্বাচনে তাদের কী করণীয়, তাদের কাছ থেকে আমরা কী আশা করি, কীভাবে প্রচার করতে হবে এবং অপপ্রচার কীভাবে রুখতে হবে, মানুষকে কীভাবে আকৃষ্ট করতে হবে, মানুষের অন্তরের মধ্যে কীভাবে প্রবশ করতে হবে- এই বিষয়গুলো তাদের ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি। এছাড়াও পোলিং এজেন্টদের তালিকা করছি। কিছু ব্যক্তি ঢাকা থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে আসবে। পরবর্তীতে তারা মার্স্টার ট্রেইনার হিসেবে অন্য পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষন প্রদান করবে। অর্থাৎ এবার আটঘাঁট বেঁধেই মাঠে নামার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি।’

    রাজশাহীর উন্ননের বিষয়ে লিটন বলেন, ‘রাজশাহীবাসী দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল পাইপ লাইনে গ্যাসের সংযোগ। সেই দাবিটি আমার সময়ে পূরণ করেছি। সুফল ভোগ করছে এখন নগরবাসী। আমি গ্যাস নিয়ে এসেছিলাম মূলত শিল্পায়নের জন্যেই। ট্রেক্সটাইল বা সোয়েটার কারখানার কাজে ব্যবহার করার জন্যে। কারাখানাগুলোর জন্যে বিদ্যুৎ যদি পিডিবি থেকে নেওয়া হয় তাহলে খরচ অনেক বেশি হয়। আর যদি গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কারখানার কাজে লাগানো হয় তবে খরচ পড়ে ৭ ভাগের এক ভাগ। যদি সিটি নির্বাচনে জয়লাভ করতাম তাহলে রাজশাহী অঞ্চলে শিল্প কারখানা হয়ে যেতো হয়তো এতোদিনে। তবে আশা করছি আগামীতে হবে।’

    খায়রুামান লিটন বলেন, আমার সময়ে পুরো অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটেছে। রাস্তা-ঘাট, ড্রেনেজ সিস্টেম, আলোকায়ন, উচ্চ বহুতল ভবন নির্মাণ, নদীর ধারের উন্নয়ন, পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র করা, কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যানকে নতুন করে সাজানোসহ বহুমুখী কাজ হাতে নিয়েছিলাম। ঢাকা-রাজশাহী রুট ট্রেন চালু করা। ওই সময়ে অনেক কাজ আমি হাতে নিয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম সেগুলো করার, আল্লাহর রহমতে মানুষ সেইসবের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে।’

    লিটন বলেন, রাজশাহীতে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। রাজশাহীতে একটি বিকেএসপি হচ্ছে। যেটা করার জন্য কাটাখালিতে জায়গা নেওয়া হয়েছে, কাজ শুরু হবে। রাজশাহী শিশু হাসপাতালের কাজ চলছে। রাজশাহীতে স্টার মানের হোটেল করার কাজ এখনো ঝুলে আছে, সেটি আমি করতে চাই। শহীদ কামারুামান স্টেডিয়ামকে আধুনিক করে আন্তর্জাতিক মানের খেলার আয়োজনের ব্যবস্থা করতে চাই। রাজশাহী থেকে ঢাকা ননস্টপ আরো একটি ট্রেন চালু, রাজশাহী থেকে কলকাতা ট্রেন প্রয়োজন, সেটা চালুর ব্যবস্থা করা হবে। রাজশাহী থেকে কলকাতা পর্যন্ত বিমানেরও প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ইন্ডিয়ান হাই কমিশন অফিসের মাধ্যমে চিঠি চালাচালি হচ্ছে, কথাবার্তা চলছে। আশা করছি এটা কঠিন কিছু না, করা সম্ভব হবে। রাজশাহীতে একটি ভেটেনারি বিশ্ববিদ্যালয় করার চিন্ত আছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে পূর্ণাঙ্গ একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

    জামায়াত-শিবির ও হেফাজতের অপপ্রচারের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সর্তক আছে জানিয়ে খারুজ্জামান লিটন বলেন, অপপ্রচার হচ্ছে এমন জিনিস এটি নিত্য নতুনভাবে আর্বিভূত হয়। যারা এটি করেন, তারা নন ইস্যুকে ইস্যু বানাতে খুবই পটু এবং একেবারে মিথ্যা বানোয়াটকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে, কম্পিউটারে কম্পোজ করে, তাদের মোবাইল, ট্যাবে যে ছবিগুলো থাকে, একেবারে ওঠান বৈঠকের ছবি দেখায়।

    যেমন- আযান হচ্ছে, সে সময় আওয়ামী লীগের সভা চলছে। এমন পুরো বানোয়াট ছবি মানুষজনকে দেখায়। অথবা দেখানো হচ্ছে, সাধারণ মানুষ লাঞ্ছিত হয়েছে, সেটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর উপর চাপিয়ে দেয়া- সেটি আদৌ সত্য না- সেটাও সত্য বলে উপস্থাপন করা হচ্ছে। 

    এভাবে মিথ্যাকে ফলাও করে প্রচার করে তারা। যেমন হেফাজতের যে ঘটনা ঘটেছিল ঢাকায়, সেটা এক পয়সার হলে ৯০ পয়সার বলে অপপ্রচার করেছিল জামায়াত-শিবির। এবার হেফাজত কী করবে এখনো জানি না। তবে এবার বাস্তবতা মেনে নিয়ে এক প্রকার সহনশীল পর্যায়ে আছে। তাদের কিছু দাবি সরকার মেনেও নিয়েছে। তবে জামায়াত ও শিবিরকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। পবিত্র কোরআন শরীফে আগুন দেওয়া পর্যন্ত তারা নির্ধিদায় করতে পারে। এ ধরনের কাজ করে জনগণকে বিক্ষুব্ধ করতে পারে। তবে আমরা এবার এটা করতে দিবো না। আমরা সচেতন আছি।’

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close