মিনিটে ‘আপনি’ থেকে ‘তুই’
আজ নাট্যকার সেলিম আলদীনের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে তিনি হতেন ৬৯। কয়েক বছর আগে; অল্পবয়সেই চলে গেলেন।
১৯৯০ বা ৯১ সালের দিকে তিনি আমাকে ডাকযোগে একটা চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিটা সম্ভবত টাইপরাইটারে টাইপ করা ছিল । ওই চিঠিতে তিনি আমাকে ‘আপনি’ সম্বোধন করে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন ‘জাবি’-জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়-তে। (‘তখনকালে মঙ্গলসন্ধ্যায় আমরা তাঁর ‘দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পতত্ত্ব’ ছেপেছিলাম।) গেলাম ।
সম্পর্কিত খবর
নিজের নাম বললাম, সম্বোধন করলেন ‘তুই’।
চেয়ার দেখিয়ে বললেন, ‘বসে যা’।
প্রথম সাক্ষাতের প্রথম মিনিটে তথাকথিত ‘আপনি’ থেকে আমি ‘তুই’ হয়ে গিয়েছিলাম।
আমিও তাঁকে ‘স্যার’ না ডেকে সেলিম ভাই ডেকেছিলাম।সেইসব কালে; মানে ১৯৯৪-দিকে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তার কাজ করতাম। বসতাম দুতালায়। আমার কাছে ট্রাংকল আসতো জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অপারেটর সেলিম ভাইকে ধরিয়ে দিতেন।
‘শোন, আমি আসছি। দুপুরে আমার সাথে মাছ খাবি। তৈরী থাকিস।’ বলতেন।
অফিসে এসেই বলতেন, সিগারেট আনা।তারপর নিয়ে যেতেন পুরোনো পল্টনে তার এক ছাত্র-সহকর্মীর বাড়িতে। মুজিব ইরমও মনে পড়ে দুয়েকবার ছিলেন সেই মৎস্যখাদ্য উদযাপনে। একবার এসে বললেন, নিচে চল। গেলাম। গিয়ে দেখি একটা গাড়ি।
বললেন, উঠ। এটা আমার গাড়ি। একটু চড়ে দেখ। চড়লাম। আমাকে ১০০ গজ গাড়ি চড়িয়ে বাংলা একাডেমির গেইটে নামিয়ে দিলেন।
একটা বিশেষ কারণে আমি সেলিম ভাইয়ের প্রতি ক্ষেপে গিয়ে যোগাযোগটাকে পাতলা করে দিয়েছিলাম। তাঁর মৃত্যুর খবরটা শুনে এ কারণে একটু বেশি বিষণ্নতা বোধ করেছিলাম।
তিনি নাটকে নতুনত্ব এনেছিলেন। তাঁর নাট্যরীতির প্রভাব থেকে এখনকার নাটক এখনো মুক্তি পায় নাই। সহসা মুক্তি পাইবার লক্ষণও দেখতেছি না।
লেখক: কবি ও গবেষক উপপরিচালক, বাংলা একাডেমি।