• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

তৃণমূলে ছাত্রলীগের সম্মেলন ভাবনা

প্রকাশ:  ০৪ মে ২০১৮, ১৭:৫৮
নজরুল ইসলাম বাবু

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর ২৯ তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র সর্বত্রই এখন সরব। কেমন হবে আগামী নেতৃত্ব? আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে কি নতুন নেতৃত্ব? এমন সময় সব থেকে বড় আলোচনার আসর যেন জমে উঠেছে তৃণমূলে। তৃনমূলের একটি শাখা ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। সম্মেলনকে সামনে রেখে সেই শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু পূর্ব-পশ্চিম এর কাছে প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন নিয়ে তৃণমূল এর ভাবনা। যা সরা সরি তুলে ধরা হলো -

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের এমন নেতৃত্ব চাই, যাঁরা দলের দুঃসময় আসলে দেশবিরোধী চক্রের সামনে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেওয়ার সৎ সাহস রাখবে এবং অতীতেও বিভিন্ন সময়ে মাঠে কাজ করে প্রমাণ করতে পেরেছে নিজেদেরকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে সময়ের প্রয়োজনে গড়ে উঠা মুক্তিযুদ্ধের অগ্রভাগে থেকে অংশগ্রহণ করা সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

আগামী ১১ ও ১২ মে ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে সারা দেশে বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। থাকারই কথা, বাঙ্গালি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন এবং রক্ষার ক্ষেত্রে ১৯৪৮ সালে গড়ে উঠা এ সংগঠনের অবদান সম্পর্কে সর্বমহল জ্ঞাত।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী মানুষগুলো এ সংগঠনের আগামী নেতৃত্ব নিয়ে আশাবাদী হবেন এটা খুবই স্বাভাবিক প্রত্যাশা, কেননা বাংলাদেশ ছাত্রলীগই একটি সংগঠন যা সারা বাংলাদেশের সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব করে। সেজন্যেই সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরাও এ সংগঠনের আগামী নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

‌কথাগুলো বলার কিছু কারণ রয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মত বৃহৎ এ সংগঠনের ধারক ও শোভাকাঙখীদের সংখ্যা আমরা সবাই ধারনা করতে পারি। আমার মতে, কেন্দ্র থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যন্ত ছাত্রলীগের প্রতিটি পরিক্ষীত কর্মীই নিজের সর্বোচ্চ উজার করে দিতে চায় শেখ হাসিনাকে। আবার জনগণ বাংলাদেশে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় আনতে চায় যার মূলে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবাসা। প্রতিটি কর্মীর অধিকার ও মতামত এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সারাদেশের প্রেক্ষাপট চিন্তা করলে তৃণমূলের প্রতিটি ক্ষেত্রকেই সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়াটা সময়ের দাবী। ছাত্রলীগ শুধু নির্দিষ্ট দুই এক অঞ্চলেই নয়, সারাদেশের প্রতিটি প্রান্তেই ভাল কাজের মধ্য দিয়েই তার সুনামের বিস্তার ঘটিয়েছে।

‌আমার মতে, আসন্ন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আমার মত তৃণমূলের কর্মীদের চাওয়া বেশি কিছু না, সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব খুঁজে নেয়া এটাই আমাদের মৌলিক চাওয়া। যার একমাত্র ঠিকানা, ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক শেখ হাসিনার কাছেই আমাদের এই মিনতি।

সেক্ষত্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আগামী শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে নিন্মোক্ত উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকা এখন সময়ের দাবী----

১. ছাত্রলীগে এমন নেতৃত্ব চাই যেন তাদের নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের সাথে লড়াই করে সারাদেশে লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মী জীবন বাজী রেখে মাঠে কাজ করতে পারি।

২. আগামীতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃন রাখতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারি।

৩. কেন্দ্র থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রতিটি নেতা-কর্মীকে আগলে রাখবে এবং সাধারন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে যাবে।

৪. যাঁদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পতাকা পতপত করে উড়াতে আমরা প্রচন্ড গর্ব করতে পারব। হাসতে হাসতে জীবন উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠাবোধ করবো না।

৫. শত ভাল কাজের মধ্যেও অনেক সময় কর্মীদের ভূল হয়ে যায়, ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করবে। শাসন করে শোধরানোর পথ দেখিয়ে দিবে।

৬. সাধারন শিক্ষার্থীদের কাছে যাদের ইমেজ ভাল এবং সুবিধাবঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাড়ানোর মানসিকতা যাদের মধ্যে বিদ্যমান তারাই ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।

৭. দেশ ও মানুষের সেবা, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনা ও সংগঠনকে শক্তিশালী করা ছাড়া যাঁদের মধ্যে কোন ধরনের লোভলালসা থাকবে না।

৮. কোন প্রকার বিতর্ক ছাড়াই সহকর্মীদের সাথে নিয়ে দাপিয়ে বেড়াবে ঢাকাসহ সারাদেশের রাজপথ। সারা বাংলাদেশের সাধারন জনগণের কাছে শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশকে আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংকে পরিণত করতে পারবে।

৯. যাঁদের নেতৃত্ব গড়ে উঠবে শেখ হাসিনার লক্ষ লক্ষ ভক্ত, তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দিন-রাত কাজ করে যাবে। এবং ভবিষ্যতেও শেখ হাসিনার জন্য কাজ করতে ওয়াদাবদ্ধ থাকবে।

‌১০. অনুপ্রবেশ তো দূরের কথা, যাঁদের হুংকারে পালিয়ে যাবে দলের মধ্যে ভাঙ্গন ধরানোর চেষ্টায় লিপ্ত কিছু দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্রকারীরা, ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাবে জামাত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা।

সবশেষে বলতে চাই, ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি-জামাতকে মোকাবেলা করার মধ্য দিয়ে নিজেকে ছাত্রলীগের একজন গর্বিত ও পরিক্ষীত কর্মী হিসেবে প্রমাণ করতে পেরেছি বলেই একজন কর্মীর মতামত পেশ করলাম। আমি বিশ্বাস করি, কর্মীদের আশার বাতিঘর শেখ হাসিনা কর্মীদের অনুভূতি বুঝবেন। তবে, যারা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিতর্কিত ভূমিকার দ্বারস্ত হয়েছেন তারা দলের সম্মানে আঘাত করে শেখ হাসিনাকে বিব্রত করেছেন। আসুন, কাউকে বিতর্কিত করে নয়, ভুল ধরিয়ে দিই। সবাই মিলে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু।

অনুলিখন: নিহার সরকার, জাককানইবি প্রতিনিধি

তৃণমূলে ছাত্রলীগের সম্মেলন ভাবনা,তৃণমূল,ছাত্রলীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close