উন্নয়নের মহাসড়কে অন্তহীন গোলোকধাঁধা!
স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জনের সাফল্য উপলক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে দেশজুড়ে আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করা হলো জাতিসংঘ ঘোষিত বিরল এই স্বীকৃতিকে! এই সাফল্যে দেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং কর্মী হিসাবে আমাদের সকলেরই খুব গর্বিত হয়ে অংশগ্রহণ করা উচিৎ ছিলো। কিন্তু সবাইকে কি সেই উদযাপনে অংশগ্রহণের আহবান জানানো হয়েছিলো? আসলেই কি আমরা সামগ্রিক এই অগ্রসরতা উদযাপন করার স্তরে পৌছাতে সক্ষমতা অর্জন করেছি? অনেকগুলো প্রশ্ন এই উদযাপনের অংশীদার হওয়ার ক্ষেত্রে প্রশ্নবোধক হয়ে দাঁড়ায়!
এই আয়োজনে কেবল সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাশাপাশি সরকারী দলের নেতা-কর্মীদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়েছিলো। যেখানে ছোট্র এই দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মাত্র ২২ লাখের মতো মানুষ সরকারী চাকুরীজীবী যা সামগ্রিক কর্মজীবী মানুষের ৫ শতাংশেরও নীচে, সেখানে অন্যান্য শ্রেণী-পেশার বৃহদাংশকে বাদ দিয়ে এমন উদযাপন করার আসল উদ্দেশ্য কি? সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে এমন আয়োজন করলেও বাস্তবিক অর্থে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের প্রকৃত অবস্থাতও কারো অজানা নয়। তাইকি তারা দেশের প্রধান উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠীকে এমন আয়োজনে যুক্ত করতে স্বস্তি অনুভব করেনি?
সম্পর্কিত খবর
আয়োজকরা তো বেশ ভালো করেই জানেন - পৃথিবীর কোন দেশে মানুষের জীবনের মূল্য সবচেয়ে কম? কোন দেশটিতে কোনো মতে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই একটি চরমতম সৌভাগ্য আর বিস্ময়ের ব্যাপার? কোন দেশে জাতীয় সম্পদের ষোলো আনার পনের আনাই নিয়ন্ত্রণে থাকে মাত্র হাতে গোনা কিছু ক্ষমতাবান মানুষের হাতে?
কোন দেশটিতে গণদুর্ঘটনার কারণে কেউ মৃত্যুবরণ করলে সেই দেশের সরকার ক্ষেত্র বিশেষে মৃত ব্যক্তির কিছু পরিবারকে বড়জোড় কিছু অর্থ দিয়ে সেই জীবনের দাম শোধ করে! কেবল যে দুর্ঘটনার খবরগুলো মিডিয়ার কল্যাণে বিশেষভাবে আলোচিত হয়ে ওঠে, শুধু সেই দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত কিছু রোগীর চিকিৎসায় রাষ্ট্র ক্ষেত্রবিশেষে এগিয়ে আসে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী তা বেশ জোরেশোরেই জনগণকে অবহিত করেন টিভি মিডিয়ার সামনে এসে।
পৃথিবীর কোন দেশে কিছু যানবাহনের গায়ে "স্রষ্টার/আল্লাহর নামে চলিলাম" লেখা থাকলেও আসলে প্রতিটি যানবাহনই আক্ষরিক অর্থে দৈবের ভরসায় চলে? কোন দেশটিতে প্রতি ৪৫ মিনিটে গড়ে একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করে সড়ক দুর্ঘটনায়?
কোন দেশটির সরকার ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল নিজেরা রাজধানীর প্রধান পথ-ঘাট বন্ধ করে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ পালন করে, অথচ বিরোধীদের কোনো কর্মসূচী পালন করতে দেয় না? কোন দেশে সরকারের কাজের কোনো সমালোচনা করলেই তৎক্ষণাৎ তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী’, ‘রাজাকার’ বা ‘দেশদ্রোহী’ বলে অতি সহজেই আখ্যা দেয়া সম্ভব হয়, অথবা অন্য যে কোনো উপায়ে হেনস্তা করা হয়?
কোন দেশে দেশের মূল সম্পদ নিয়ন্ত্রনে থাকে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠন, ছাত্রসংগঠন, সিন্ডিকেট ও অন্যান্য অনুগত পেশাজীবীদের হাতে? কোন দেশে রাজনীতি না করেও বিপুল অর্থ-বৈভব তথা ব্যবসায়িক পরিচয়ে জাতীয় সংসদের ৭০ শতাংশ পদ দখল করা সম্ভব হয়? কোন দেশে কোনো ভোটাভোটি ছাড়াই জাতীয় সংসদের প্রায় অর্ধেক পদে নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনা করা যায়? অন্যদিকে, ভোট বর্জনের নামে বিরোধীরা ভোটকেন্দ্র গুলো আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে জনমনে ভয়ংকর আতংক তৈরি করে?
কোন দেশের প্রধান বিরোধী দল ক্ষমতার জন্য কেবল রাজনীতি করে? জনগণের দৈনন্দিন জীবনের নানা সংকট, সমস্যা ও উত্তরণে জনসম্পৃক্ততার কোনো তাগিদ অনুভব করেনা। সবকিছুতেই সরকারের উপর দায় চাপিয়ে নিজেদের কৃত অপকর্মের জন্য জাতীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাতো দূরের কথা, কখনো অনুতপ্ত পর্যন্ত হতে চায়না?
কোন দেশটিতে গাড়ির স্টিয়ারিং-এ হাত দিয়ে ড্রাইভারের সিটে বসতে পারলেই গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়া যায়? গাড়ি চালাতে কোন শিক্ষার দরকার হয়না! কোন দেশে সরকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ম্যাগনেটিক ট্রেন, এয়ারপোর্ট বানানোর প্ল্যান করে, কিন্তু সারাদেশ ভর্তি ভাঙ্গা-হাঁটু সমান গর্তে ভরা-এক লেনের রাস্তা ঠিক করার কথা চিন্তাও করে না?
পৃথিবীর কোন দেশটিতে মানুষ থাকলেও সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে মানুষরূপী কিছু পশু অথবা মানুষরূপী পাথর? আর সেকারণে শহরজুড়ে উৎসব পালনের নামে গণপরিবহণ ও জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল রুদ্ধ করে দেয়া হয় ক’দিন পরপরই। রাস্তায় চলাচলরত তরুণীদের উপর উৎসব পালনকারীদের বর্বরোচিত হামলার পরও অপরাধীরা রাজনীতির আশ্রয় প্রশ্রয়ে পার পেয়ে যায়!
কোন দেশে এক মন্ত্রী আরেক মন্ত্রীকে অনুরোধ করেন বিনা পরীক্ষায় সাড়ে ২৪ হাজার লোককে ড্রাইভিং লাইসেন্স যেন দেয়া হয়! সে দেশে ড্রাইভিং করতে কোন শিক্ষা-অভিজ্ঞতার দরকার পড়ে না! সে দেশে ড্রাইভারদের সিংহভাগই থাকে অশিক্ষিত এবং ট্রাফিক আইন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান থাকার দরকার পড়ে না! সেই দেশে মানুষ যে কোন প্রকারে যত আগে সম্ভব গন্তব্যে পৌঁছানোটাকেই গুরুত্ব দেয় - জীবনের মূল্য সেখানে এক কানাকড়িও না!
পৃথিবীর একমাত্র কোন দেশ যেখানে লালবাতি জ্বলতে থাকলেও গাড়ি থামেনা? যদি না কোন ট্রাফিক পুলিশ তার জীবনের মায়া তুচ্ছ করে চলন্ত গাড়ির সামনে এসে হাত বাড়িয়ে দাঁড়ায়। সেইটি কোন দেশ যেখানে ভিআইপি রোডগুলোর ডিভাইডার ভেঙ্গে জনগণ সারাপথ ধরেই চলাফেরা করে স্বাচ্ছন্দ্যে? কোথাও ফুটওভার ব্রীজ থাকলেও কেউ সেখানে উঠতে চায়না? সেই দেশের রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ বা আনসার সদস্যের হাতে কিছু টাকা গুজিয়ে দিয়ে ভিআইপি রাস্তায় রিক্সা, ভ্যান গাড়ি সহজেই চলাচল করতে পারে। ক্ষমতার দাপটে উল্টো পথে গাড়িচালানো যে দেশের রাজধানী শহরে কোন ব্যাপারই না। সেইটি পৃথিবীর এমন এক বিস্ময়কর দেশ যেখানে ট্রাকের চালক মোবাইলে কথা বলতে বলতে ৪৩টি নিষ্পাপ শিশুকে মেরে ফেললেও তাতে তেমন কিছু যায় আসে না!
সে দেশে রাজধানীর এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে বা শহরের পাশের জেলা শহরটিতে যেতেও অনির্দিষ্টকালের জন্য রাস্তায় বসে থাকতে হয়, গন্তব্যে পোঁছানো সম্পর্কে কোন পূর্ব অনুমান করা যায়না! মনে হতেই পারে, নিশ্চয়ই সে পাশের শহরটি আরব্য রজনীর উপন্যাসে বর্ণিত কোন দুর্গম শহর!
কোন দেশটিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার বারোটা বাজলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা নিজেদের প্রশংসায় সারাক্ষণ নিজেরাই মুগ্ধ হয়? সে দেশের মন্ত্রীরা পরিবেশ-জনপদ ধ্বংস করে বিমানবন্দর বানানোর স্বপ্ন দেখেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানানোর স্বপ্ন দেখেন, স্কাই ট্রেন বানানোর স্বপ্ন দেখেন, ম্যাগনেটিক হাই-স্পীড ট্রেনের স্বপ্ন দেখেন, অথচ কোথাও একটি রাস্তাও চলার উপযোগী থাকেনা! কোমর বা হাঁটু সমান খানা-খন্দে প্রায় প্রতিটি রাস্তা ভরা থাকে। একটু বৃষ্টি হলে পুরো শহর জলাবদ্ধতায় নদী হয়ে ওঠে। সেই দেশের রাস্তায় সেভাবে কোনো স্পীড লিমিট থাকেনা! বাঁক বা ক্রসিং এর কোন সাইন থাকেনা! থাকেনা ওভারটেক বন্ধ করার কোন উপায়! সেই দেশে কেউ ট্রাফিক আইন মানার প্রয়োজন মনে করে না। সেই দেশে ড্রাইভাররা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বা মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালায়! রাস্তায় চলাফেরার জন্য কোন আলাদা লেন থাকেনা! এমনকি "হাইওয়ে" নামধারী রাস্তাগুলোও কোথাও কোথাও এক লেন বা দুই লেনেরও হয়ে থাকে!
কোন দেশে অনেক কষ্টে অনেক অপেক্ষার পর জনগণের কষ্টার্জিত করের টাকায় অথবা বিদেশী ঋণ নিয়ে একটি সেতু বানানোর কয়েক বছরের মধ্যেই সেখানে ফাটল ধরার কারণে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়তে থাকে? উড়াল সড়ক বানাতে গিয়ে নীচের রাস্তাগুলোকে ভাগাড়ে পরিণত করে রাখা হয় বছরের পর বছর। কিন্তু সেগুলো দেখাশোনার কেউ থাকেনা।
কোন দেশটির বিমান পরিবহনের জন্য যে সংস্থাটি আছে তারা বছরের পর বছর শত শত কোটি টাকা লোকসান দিয়েও বিমান সেবা অব্যাহত রাখে? 'সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশী'- এই শ্লোগানকে দৃঢ়ভাবে মেনে চলে প্রায়ই সময়মত বিমান উড্ডয়ন থেকে বিরত থাকে? অনির্দিষ্ট কালের জন্য মাঝেমধ্যেই বিমান যাত্রীদের টার্মিনালে বসিয়ে রাখে? হজ্ব মৌসুমে প্রায় প্রতি বছর অভিযোগ শোনা যায় যাত্রীদের জন্য সেই সংস্থাটি ভাড়া নেয় ভিন দেশের অতি পুরাতন এবং চরমভাবে অনিরাপদ কোন বিমান সংস্থার বিমান!
কোন সেই দেশ যেখানে কোনো সরকারই দেশের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদেরকে শাসনের আওতায় আনতে পা্রে না? কিছুতেই মালিক বা চালক, কাউকেই সহজে শাস্তি দেয়া সম্ভব হয়না, কোন রকম আইনই তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনা! সেই দেশে কোনো চালকের কারণে দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে আর সেই চালক ধরা পড়লে তার সর্বোচ্চ শাস্তির পরিমাণ তিন বছর - যদিও তা কখনো বাস্তবায়িত হয় কিনা কারো জানা নেই।
সেই দেশে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় সবাই দুর্নীতির সাথে কম-বেশী জড়িত। যারা কিছুটা সৎ থেকে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে, বিপদ তাদেরকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে! তাদের সময়মত প্রমোশন হয় না। সেবা প্রদানকারী এই সব প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বেশীরভাগের লাভের ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কারো কোন কাজ হয় না! এমন বদ্ধমূল ধারনা যেখানে প্রকটভাবে বিদ্যমান। তাই জনগণের প্রতি নিবেদিত হয়ে সেবা প্রদান, জীবনের নিরাপত্তা সেখানে বইয়ে পড়া বুলি, বাস্তবে যা নাকি অস্তিত্বহীন!
সেই দেশের সরকার যদি কখনো সদিচ্ছা দেখায়ও, শক্তহাতে কিছু করতে গেলেই ট্রেড ইউনিয়নগুলো বেকে বসে। এক ডাকেই সেদেশের পরিবহন সমিতি ট্রাক/বাস বা নৌ চলাচল বন্ধ করে দেয়! চিকিৎসকের গাফিলতিতে রোগী মারা গেলে তার স্বজনরা প্রতিবাদ করলে পুরো চিকিৎসক সমাজ কর্ম বিরতিতে যোগ দেয় অনির্দিষ্টকালের জন্য।
জাতিগতভাবে যতই বিভেদে ভরা থাক, দুর্নীতি করার জন্য যেখানে সবাই "রসুন"! সবাই একসাথে এরা দুর্নীতি করে! এরা নিজেরাই ভীষণ শক্তিশালী একটা দল, যাদের কাছে সরকার জিম্মি, নাগরিকরা তো বটেই।
সেই দেশটি খুব দুর্ভাগা কারণ প্রতিনিয়ত দেশটি তার অসংখ্য সন্তানকে হারায় সড়ক দুর্ঘটনায়! সেই দেশের মানুষ আসলে হয় পাথর না হয় পশু! তাই খুব একটা গায়ে লাগেনা কারো। দুইদিন যায়, সবাই সব ভুলে আবার বেঁচে থাকার সংগ্রাম করতে থাকে। সড়কপথে নিরাপত্তা সেখানে চরমতম বিলাসিতা, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি সেই দেশে সুখ-স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়! কারণ সেই দেশের সাধারণ মানুষ, "গরীবের মধ্যে আরো বেশি গরীব, ছোটলোকের মধ্যে আরো বেশি ছোটলোক"। সেদেশে ভিআইপিদের মন জয় করার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়, তোরণ বানিয়ে দুই পাশে শিশুদেরকে রোদে-পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে বাধ্য করা হয় ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে! কেবল একজন ব্যক্তির পারাপারের জন্য সে দেশের রাজধানীর পথচারীদের ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় বসিয়ে রাখা হয়।
কিন্তু সেই দুর্ভাগা দেশটির কিছু সুসন্তান আছে যারা নক্ষত্র হয়ে সেই দেশের আকাশে সর্বক্ষণ আলো দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নানা অঘটনে সেই নক্ষত্রগুলো একটি একটি করে নিভে যায়! কিন্তু সেসব নক্ষত্রকে হারানোর জন্য কেউ কোন দায় স্বীকার করেনা! আবার এমন দুর্ঘটনার জন্য সে দেশের সকল মানুষ শোকে মূহ্যমান হয়ে ওঠে এই ভেবে যে, এই নক্ষত্রদেরকে যে তারা আর ফিরে পাবেনা। তাদের দেয়া আলোর আভায় আর কেউ আলোকিত হবে না! এমন ঘটনায় সেই দেশটির মানুষ কান্না থামাতে পারেনা। কিন্তু অন্য ঘটনা এসে যেতে না যেতেই তারা আবার ভুলে যেতে শুরু করে ক’দিন আগের সেই শোকের মাতম! তিরিশ লাখ শহীদের তরতাজা রক্ত আর দু'লাখেরও বেশী মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া সেই বীরত্ব কাব্যগাথার স্বাধীন দেশটি তাই আজ অন্তহীন গোলোকধাঁধার একটি দেশ!
লেখকঃ সমাজ গবেষক ও বিশ্লেষক।