• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

আজিজ খান যেভাবে বাংলাদেশের প্রথম ডলার বিলিওনিয়ার

প্রকাশ:  ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:৩০ | আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০১:২৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ব্যবসা সাময়িকী 'ফোর্বস' এবছর সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে ৩৪ নম্বরে আছেন বাংলাদেশের সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। ফোর্বসের হিসেবে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ৯১০ মিলিয়ন ডলার। মিস্টার খান সেই অর্থে বাংলাদেশের প্রথম ডলার বিলিওনিয়ার, অর্থাৎ ডলারের হিসেবে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম 'শত কোটিপতি'। কিভাবে আজিজ খান এই অবস্থানে পৌঁছালেন? তার প্রতিষ্ঠানে মূল ব্যবসা-বাণিজ্যই বা কী?

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে সেটি খুব অস্থির এক সময়। চারিদিকে নানা বিশৃঙ্খলা। সেসময় খুব কম মানুষের মধ্যেই ব্যবসা-বাণিজ্যের ঝোঁক ছিল।

মুহাম্মদ আজিজ খান তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেই ছাত্র অবস্থাতেই আরও কিছু বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ঝুঁকে পড়লেন ব্যবসার দিকে।

"আমি ব্যবসা শুরু করি ১৯৭৩ সালে পুরোনো ঢাকায়। বাবার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেছিলাম। মাত্র এক বছরের মধ্যেই ব্যবসা করে সেই টাকা বাবাকে ফেরত দেই। তাই আমি অনেক সময় মজা করে বলি যে আমি ক্যাপিটাল বা পুঁজি ছাড়াই ব্যবসা করে আজকের পর্যায়ে এসেছি।"

পুরোনো ঢাকায় তাঁর প্রথম ব্যবসা ছিল পিভিসি সামগ্রীর।

"আমার ব্যবসায়িক পার্টনার আগে থেকেই ব্যবসায় ছিলেন। পুরোনো ঢাকার চকবাজারে গিয়ে ব্যবসা শুরু করি। সেখানে পিভিসি বা পলি ভিনাইল ক্লোরাইডের ব্যবসায় নামি। এরপর একসময় চিটাগুড়ের ব্যবসাও করেছি। বাংলাদেশ থেকে আমিই প্রথম চিটাগুড় রপ্তানি করি।"

তখন তিনি দিনে ব্যবসা করেন, আর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন ইনষ্টিটিউটে এমবিএর কোর্স করেন। এভাবে ব্যবসা আর পড়ালেখা- দুটিই পাশাপাশি চলতে থাকে।

"পুরনো ঢাকায় যাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতাম, তাদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোও আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। প্রথম শুরু করেছিলাম ট্রেডিং দিয়ে। তারপর ইনফ্রাস্ট্রাকচারে যাই। সেখান থেকেই ব্যবসা করতে করতে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছি।"

ফোর্বসের তালিকা

ফোর্বসের হিসেবে আজিজ খানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ৯১০ মিলিয়ন ডলার। মিস্টার খান সেই অর্থে বাংলাদেশের প্রথম ডলার বিলিওনিয়ার, অর্থাৎ ডলারের হিসেবে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম 'শত কোটিপতি'।

ফোর্বসের এই তালিকা প্রকাশের পর তার সম্পর্কে বিপুল কৌতুহল তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। কে তিনি? কীভাবে তিনি এত বড় ব্যবসায়ীতে পরিণত হলেন?

সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত মিস্টার খানের সঙ্গে যোগাযোগের পর তিনি এ নিয়ে কথা বলতে রাজী হলেন। হংকং এর এক বিমানবন্দরের লাউঞ্জ থেকে যাত্রাপথে তিনি টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন তার ব্যবসায়িক জীবনের কাহিনী।

ফোর্বস তার সম্পদের যে হিসেবে দিয়েছে সেটা কি সঠিক?

হিসেবটা কমবেশি ঠিকই আছে বলে মনে করেন তিনি।

"ফোর্বস ম্যাগাজিন যেভাবে আমাদের মূল্যায়ন করেছেন, সেটা তাদের সিস্টেমে তারা করেছেন। আমরা এখনো সিঙ্গাপুরের বাজারে তালিকাভুক্ত নই। যদি হতাম, তাহলে আমাদের ইকুইটির বাজার মূল্য হতে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। সেটাকেই তারা হয়তো নয়শো দশ মিলিয়ন ডলার হিসেব করেছে।"

"আমরা মনে করি এই মূল্যায়ন ঠিকই আছে। এটা কিন্তু আমার মূল্যায়ন নয়। এটা আমাদের পরিবারের মূল্যায়ন। পরিবারে আমার ভাই-বোনরা আছেন, মেয়েরা আছেন। ভাইদের মধ্যে অবশ্য ফারুক খান, ফিরোজ খান এবং ইমরান খান আমাদের ব্যবসায় নেই।"

সামিট গ্রুপের এই যে বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য, কী কী আছে তাতে? কোন কোন খাতে তারা ব্যবসা করছেন?

"মূলত বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও বন্দর খাতে এবং ইন্টারনেট যোগাযোগের মূল কাঠামো ফাইবার অপটিক খাতেই আমাদের বিনিয়োগ। এছাড়া বাংলাদেশে হোটেল খাতে, এবং শপিং মলেও আমরা বিনিয়োগ করছি।"

সূত্র: বিবিসি বাংলা

আজিজ খান,ধনী
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close