• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

সিগারেটে দুই মূল্যস্তর ভিত্তিক শুল্ক আরোপের দাবি

প্রকাশ:  ২৩ জুন ২০১৮, ১৯:২২
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত বাজেট সিগারেটের মূল্যস্তরকে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও অতি উচ্চস্তর হিসেবে বিভক্ত করে অতি উচ্চস্তরের সিগারেটের মূল্য ও করহার (১০ শলাকা ১০১ টাকা) অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় বাজেটে বহুস্তরভিত্তিক করকাঠামোর পরিবর্তে সিগারেটের ক্ষেত্রে দুইটি মূল্যস্তর প্রচলন এবং সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর (স্পেসিফিক ট্যাক্স) আকারে আরোপ করার দাবি জানানো হয়েছে।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে তামাক করবিষয়ক বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়।

সম্পর্কিত খবর

    খলিকুজ্জামান বলেন, আমরা চাই রফতানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক যেন এবারের বাজেটেই পুনর্বহাল করা হয়। প্রতিবারই দেখি যেভাবে চলে আসছিল সেভাবেই চলে, কোনও পরিবর্তন নেই। পরিবর্তন না আনলে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এখানে আমরা সব প্রতিষ্ঠান এক হয়েছি। আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চেষ্টা করে যাবো, আশাহত হওয়ার কিছু নেই।

    সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার শূন্যের কোটায় না হলেও অন্তত ৫ শতাংশে নামিয়ে আনবেন। আমরা দেখেছি অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বিড়ি শিল্প বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটের কর কাঠামো দেখে তাদের ভিশনের সঙ্গে কোনও মিল পাওয়া যাচ্ছে না। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তামাকের ওপর এমনভাবে কর বাড়াতে হবে যাতে ব্যবহারকারী নিরুৎসাহিত হয়।

    ‘আত্মা’র সহআহ্বায়ক ও এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক নাদিরা কিরণ বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য আমাদের প্রস্তাব ছিল সিগারেটের কর নির্ধারণ প্রক্রিয়া সহজতর এবং যুগোপযোগী করা। বিদ্যমান বহুস্তরভিত্তিক অ্যাড ভ্যালরেম পদ্ধতির পরিবর্তে সিগারেটের ক্ষেত্রে দুটি মুল্যস্তর প্রচলন এবং অ্যাড ভ্যালরেম পদ্ধতির পাশাপাশি সম্পুরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ করা। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনও প্রতিফলন ঘটেনি। অর্থাৎ সিগারেটের কর কাঠামোয় বিন্দুমাত্র সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়নি।

    তিনি আরও বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে নানা ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেও বাজেট প্রস্তাবনায় তার বিন্দুমাত্র প্রতিফলন নেই। সিগারেটের মুল্যস্তর কমানোর কথা তিনি বলেছেন অথচ উচ্চস্তরে দুটি বিভাজনসহ সিগারেটে মোট চারটি স্তর বহাল রয়েছে। বিড়ির ব্যবহার হ্রাসেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তামাকের কাঠামো আধুনিকায়নেও নেই কোনও পদক্ষেপ। সার্বিকভাবে এবারের প্রস্তাবিত বাজেট তামাকবিরোধীদের জন্য হতাশাজনক।

    চিকিৎসকদের তামাকবিরোধী সংগঠন-উফাত (ইউনাইটেড ফোরাম এগেইনস্ট টোবাকো) এর সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগী অধ্যাপক ড. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও আমরা আশা করেছিলাম বাজেটে ভালো কিছু দেখতে পাবো। অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, বিড়ি শিল্প বন্ধ করে দিবেন। কিন্তু তার বাজেট বক্তৃতায় জানতে পারলাম তিনি সম্পূর্ণ উল্টো পথে হাটছেন। সরকার যদি কোনও ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে তাহলে মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা সতর্ক হলেও তাতে কোনও লাভ হবে না।

    ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. আব্দুল মালেক বলেন, ‘মাদকের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর তামাক। তামাক মানব দেহে বহু রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। টেকসই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে মানুষকে সুস্থ রাখতে হবে।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close