চলচ্চিত্রের হুমায়ূন আহমেদ
কথাসাহিত্যের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও সমান দক্ষ ছিলেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। নব্বইয়ের দশকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আটটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। সবগুলোর কাহিনী তার নিজের। চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও প্রযোজনাও তিনি করেছেন। অধিকাংশ চলচ্চিত্রের গানও তারই লেখা।
হুমায়ূন আহমেদের প্রথম সিনেমা ছিল ‘আগুনের পরশমণি’ [১৯৯৪]। এতে অভিনয় করেন আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত ও বিপাশা হায়াত। এই ছবিটি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছিল। প্রথম সিনেমাতিই বাজিমাত করেন তিনি। ‘আগুনের পরশমণি’ সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালনাসহ আটটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। হুমায়ূন আহমেদ নিজেও কাহিনীকার, সংলাপ রচয়িতা এবং প্রযোজক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান।
সম্পর্কিত খবর
এর ঠিক ছয় ৬ বছর পর হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ [২০০০]। এ ছবিটিও ৭টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। এরপর ২০০১ সালে মুক্তি পায় ‘দুই দুয়ারী’। এতে অভিনয় করেন রিয়াজ, মাহফুজ আহমেদ ও মেহের আফরোজ শাওন। ২০০৩ সালে মুক্তি পায় হুমায়ূন আহমেদের ‘চন্দ্রকথা’। আসাদুজ্জামান নূর, আহমেদ রুবেল ও শাওন।
এরপর ২০০৪ সালে মুক্তি পায় ‘শ্যামল ছায়া’ চলচ্চিত্রটি। এটিও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত। চলচ্চিত্রটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়। ২০০৭ সালে মুক্তি পায় তার ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮ সালে হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি। ফেরদৌস, মিম, জাহিদ হাসান ও মেহের আফরোজ শাওন এতে অভিনয় করেন। ছবিটি দুটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়।
হুমায়ূন তার শেষ ছবিটি নির্মাণ করেন ২০১২ সালে। তার শেষ ছবিটির নাম ছিল ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। ছবিটির জন্য সেরা পরিচালকসহ ২০১২ সালের বেশ কয়েকটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন তিনি।
এছাড়া নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে মোট ৯টি ছবি নির্মাণ করেন স্বনামধন্য পরিচালকরা। ছবিগুলো হচ্ছে— মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত দূরত্ব ও প্রিয়তমেষু, শাহ আলম কিরণ পরিচালিত সাজঘর, আবু সাইয়ীদ পরিচালিত নিরন্তর, বেলাল আহমেদ পরিচালিত নন্দিত নরকে, তৌকীর আহমেদ পরিচালিত দারুচিনি দ্বীপ, মেহের আফরোজ শাওনের ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ও অনম বিশ্বাসরে দেবী।
/রবিউল