ইভিএম বিতর্ক: জালিয়াতি নাকি প্রযুক্তিভীতি?
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে সেসব কেন্দ্রে সেনাবাহিনী রাখার পরিকল্পনা আছে। যে কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম মেশিন ব্যাবহার করা হবে তা নির্ধারণ করা হবে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে।
ইভিএম মেশিন ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার কতটা নিরাপদ ও ফলপ্রসূ সে সম্পর্কে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং ইভিএম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সম্পর্কিত খবর
ইভিএম কী?
ইভিএম হচ্ছে ই-ভোটিং বা ইলেক্ট্রিক ভোটিং সিস্টেম। এই পদ্ধতিতে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয় বলে ভোট গ্রহণের সামগ্রিক প্রক্রিয়াটিকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নামে ডাকা হয়।
ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন
একটি মেশিনে ভোট দেয়া যায় প্রায় চার হাজার। সর্বোচ্চ ৬৪ জন প্রার্থীর তালিকা থাকে মেশিনে। বাটন চাপ দিয়ে ভোটাররা এমেশিনের মাধ্যমে নিজের ভোট দিয়ে থাকেন। একটি ভোট দিতে সময় লাগে আনুমানিক ১৪ সেকেন্ড।
একজন ভোটারের কোনভাবেই একটির বেশি ভোট দেয়ার সুযোগ থাকে না। সাধারণ ব্যালট ভোটের মতোই কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে পোলিং এজেন্ট, নেতাকর্মী ও পর্যবেক্ষকগণ থাকবেন। মেশিনটি প্রতিটি ভোটের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে হিসেব করে প্রদর্শন করে।
ইভিএম মেশিনের ইউনিটগুলো হল-
ব্যালট ইউনিট: এর মাধ্যমে ভোটার তার ভোট দেন।
কন্ট্রোল ইউনিট: এটি থাকে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে।
ডিসপ্লে ইউনিট: ইভিএমের সঙ্গে একটি বড় ডিসপ্লে ইউনিট আছে। এটি বুথের ভেতর ভোট-সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টিগোচরে রাখা থাকে।
ব্যাটারি ইউনিট: এই মেশিন চালাতে দরকার হয় ১২ ভোল্টের একটি ব্যাটারি।
স্মার্ট কার্ড ও মাস্টার কার্ড: ভোটিং মেশিন পরিচালনার জন্য সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে স্মার্ট কার্ড-ভিত্তিক আইডি কার্ড দেওয়া হয়। তিনি এই কার্ড দিয়ে কন্ট্রোল ইউনিট পরিচালনা করেন।
উপরোক্ত ইউনিটগুলো ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে থাকে। কিন্তু তারের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে।
ইভিএমের সুবিধাসমূহ:
ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে যেসব সুবিধার কথা বলা হয় তা নিম্নরূপ-
ইভিএম ব্যবহারের ফলে কাগজ, ছাপা ও পরিবহন খরচ এবং ভোট গণনার সময় ও খরচ হ্রাস পায়। নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী একটি জাতীয় নির্বাচনে এক হাজার ৮৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ইভিএম পদ্ধতিতে একটি জাতীয় নির্বাচনে খরচ হবে মাত্র নয়শ’ কোটি টাকা।
একটি মেশিন দিয়ে তিন থেকে চারটি জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব। মেশিনটিতে নতুন করে প্রোগ্রাম প্রবেশ করিয়ে একই মেশিন ব্যবহার করা যাবে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা উপ নির্বাচনেও।
ভোটের তথ্য মেশিনে প্রায় ১০ বছর ধরে অবিকৃত অবস্থায় থাকবে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো ভোটারের ভোট বাতিল হবে না।
১২ ভোল্টের ব্যাটারী চালিত বিধায় ইভিএম ব্যবহারকালে ইলেকট্রিক শক খাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ইচ্ছা করলেও একজন ভোটারকে একাধিক ভোট দানের সুযোগ করে দিতে পারবেন না।
কেন্দ্র দখলের মতো ঘটনা ঘটলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার কন্ট্রোল ইউনিটের ক্লোজ সুইচ চেপে দখলকারীদের অবৈধ ভোট দেয়া বন্ধ করতে পারবেন। ইভিএমের স্মার্ট কার্ড সরিয়ে ফেললে মেশিন চালু করা যাবে না। প্রতি মিনিটে ৫টার বেশি ভোট দেয়া যাবে না।
ইভিএম-এ দ্রুত সময়ে ভোট গণনার কাজ সম্পন্ন হয়।
ইভিএমের অসুবিধাসমূহ:
আধুনিক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া হলেও ইভিএম নিয়ে রয়েছে অনেক অভিযোগ। যেমন-
প্রভাবশালীদের দ্বারা কেন্দ্র দখলের পর পোলিং এজেন্টদের নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে বের করে দিলে সর্বাধিক সংখ্যক ভোটের মালিক হবে প্রভাবশালীমহল।
নির্বাচন কমিশনে দলীয় লোক ঢুকে যদি প্রতি কেন্দ্রে অন্তত একটি করে মেশিনে এ প্রোগ্রাম করে দেন যে, নির্বাচন শেষে ক্লোজ বাটনে ক্লিক করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট কোনো প্রতীকে অতিরিক্ত ২০০/৩০০ ভোট যুক্ত হবে তাহলে সহজেই নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেয়া সম্ভব।
মাইক্রোকন্ট্রোলারের প্রোগ্রাম পরিবর্তনের সুযোগ হলে কেন্দ্রে সকল প্রার্থী একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক (২০ বা ৫০ বা ১০০) ভোট পাবার পর যে কোন ব্যালট বাটনে চাপলেই অতিরিক্ত ভোট দখলকারী প্রার্থীর প্রতীকে যুক্ত হবে।
গোপনে ইভিএম সরবরাহ করা হবে না নিশ্চয়তা অন্তত বাংলাদেশে আশা করা যায় না। ইভিএমের প্রতিটি ইউনিট চালু অবস্থায় পৃথক করা যায়। প্রভাবশালীদের দ্বারা কেন্দ্র দখলের পর গোপনে সরবরাহকৃত অগ্রিম ভোট দেয়া ইভিএমের শুধুমাত্র কন্ট্রোল ইউনিট প্রতিস্থাপন করলেই চলবে। ফলাফল শতভাগ অনুকূলে।
২০১০ সালের ১২ আগস্ট ‘ভারতের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন জালিয়াতি প্রতিরোধক নয়’ দাবি করে একদল মার্কিন আইটি বিশেষজ্ঞ বক্তব্য রাখে। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেন আডিডা, মাইক্রোসফট গবেষক ড. জোশ বেনালো ও পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাট ব্লেইজ।
বাংলাদেশে ইভিএম
২০০৭ সালে ঢাকার অফিসার্স ক্লাবের কার্যকরী সংসদের নির্বাচনে এ পদ্ধতি প্রথম ব্যবহার করা হয়। ছোট নির্বাচনে সফলতার পর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে এ প্রকল্প জমা দেন উদ্ভাবক, বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস এম লুৎফল কবির। এটি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পাইল্যাব বাংলাদেশ।
পরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমকে সামনে রেখে ১৩০টি ইভিএম তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ১০০টি ইভিএম চট্টগ্রামে আনা হয়। তবে ১৪ ভোট কেন্দ্রের ৭৯টি বুথে ৭৯টি ও প্রতি কেন্দ্রের জন্য একটি অতিরিক্ত হিসাবে মোট ৯৩টি ইভিএম স্থাপন করা হয়।
২০১০ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে সফলতা আসে। সেখানে মোট ২৫ হাজার ২৩৮ জন ভোটার ইভিএমে ভোট প্রদান করেন। দ্রুত ভোট গ্রহণ ও দ্রুত ফলাফল ঘোষণায় ইভিএম পদ্ধতির সফল কার্যকারিতার প্রমাণ মেলে।২০১৫ সালের এসে ওই ইভিএম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময় ডিজিটালাইজড সুবিধা–সংবলিত নতুন ইভিএম তৈরি করে ইসি। ২০১৬ সালে রংপুর সিটি নির্বাচনে তা চালু হয়। এর দু্ই বছরের মাথায় সংসদে নতুন প্রযুক্তিটি চালু হচ্ছে।
ভারত ও বাংলাদেশের ইভিএম-এ দামের হেরফের
বাংলাদেশে একটি ইভিএমের দাম ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ভারতে ব্যবহৃত ইভিএমের দাম ২১ হাজার ২৫০ টাকা। সেই হিসাবে ১১ গুণ বেশি খরচ করে ইভিএম কিনছে বাংলাদেশ।তবে ইসি দাবি করছে, গুণগত মান বিবেচনায় বাংলাদেশের ইভিএমের দাম অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলক কম পড়ছে।
ইভিএম নির্মাণ করে এমন কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সূত্রে জানা যায়, সাধারণত ভোটার ও প্রার্থীসংখ্যা, ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করা, ভোট গণনা, সার্ভার-সক্ষমতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের স্পেসিফিকেশনের ওপর ইভিএমের দাম নির্ভর করে।
ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, দাম নির্ভর করে যন্ত্রাংশের মান ও ‘কনফিগারেশনের’ ওপর। তাঁরা সবচেয়ে মানসম্পন্ন ইভিএম তৈরি করছেন, যাতে ১০-১৫ বছর ব্যবহার করা যায়। ইভিএমের দাম বেশি পড়ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে ইভিএমের দাম প্রায় চার হাজার ডলার। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁরা তুলনা করে দেখেছেন, বাংলাদেশের ইভিএমের দাম তুলনামূলক কম পড়ছে।
বুয়েটের অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবির বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য বুয়েট ১ হাজার ১০০টি ইভিএম তৈরি করেছিল। প্রতিটি ইভিএমের খরচ পড়েছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। বৃহৎ আকারে উৎপাদনে গেলে খরচ আরও কমে যেত। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করা, ভিভিপিএটি সুবিধা যুক্ত করে ৪০-৫০ হাজার টাকার মধ্যে ইভিএম তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, বৈশিষ্ট্যের কারণে ইভিএমের দামের তুলনা করা কঠিন। কিন্তু প্রতিটি ইভিএমের দাম ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ধরা হলে তা একটু অস্বাভাবিকই।
পক্ষে-বিপক্ষে কে কী বললেন?
গত বছর ইসির সংলাপে আলোচিত বিষয় ছিল ইভিএম। ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নিয়েছিল। ২৩টি দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছিল। এর মধ্যে বিএনপিসহ ১২টি দল ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দেয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা নেই বলে অনেক দেশ ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে আসছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে কেন ইভিএম ব্যবহারের তোড়জোড় শুরু হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। বিএনপি সন্দেহ করছে, মানুষ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বুঝতে পেরে যন্ত্র দিয়ে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে সরকার।
ইভিএমের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, উন্নত বিশ্বে ইভিএমে ভোট হয়। এতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হয়, দ্রুত ফল ঘোষণা করা যায়। তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হলে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানাবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছিলেন, ইভিএম ব্যবহার করতে হলে আমাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। প্রশিক্ষণের পর যতটুকু সক্ষম হব, ততটুকু ব্যবহার করার চেষ্টা করব’।
নুরুল হুদা আরও বলেছেন, নির্বাচনের আগে সব কটি ধাপ অতিক্রম করা আসলেই সম্ভব হবে না। যতটুকু সম্ভব হবে ততটুকু ব্যবহার করার চেষ্টা করা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে এখন দুই শতাধিক ইভিএম রয়েছে।
জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের সভাপতি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘ভারত সফল হলেও এ পদ্ধতিতে ব্যর্থ হয়েছে অধিকাংশ দেশ। আমাদের দেশে যে মেশিনটা তৈরি করা হয়েছে তা আধুনিক তবে অত্যাধুনিক নয়।
১৮ সেপ্টেম্বর খুলনা মহানগর ও জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আয়োজনে যুক্তফ্রন্টের জনসভায় জেএসডির কেন্দ্রীয় সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ইভিএমকে জাদুর খেলা।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ইভিএমে কারচুপি হয় বলে সবাই জানে। বিশ্বের অনেক দেশ কোটি কোটি টাকা খরচ করে পরে ইভিএম-পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের মানুষের ভোটের প্রতি আস্থা নেই। এ কারণে তাঁরা যন্ত্রের সাহায্য নিতে যাচ্ছে।’
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, কারিগরি কমিটি পেপার ট্রেইলের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু উপকমিটি দেখেছে, পেপার ট্রেইল যুক্ত করে অনেকে ঝামেলায় পড়েছে। ভারতে ১৫-১৮ শতাংশ কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করতে হয়েছে পেপার ট্রেইলে সমস্যার কারণে। পেপার ট্রেইল মূলত ভোটারের মানসিক শান্তির জন্য যুক্ত করা হয়। এই ইভিএমে ভোটার যে মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য ঠিক করবেন, সে মার্কা স্ক্রিনজুড়ে বড় হয়ে ভেসে উঠবে। এটি ইলেকট্রনিক্যালি করা হয়েছে পেপারে না যাওয়ার জন্য।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ আসনে বিশেষ দল বা গোষ্ঠীকে বিশেষ অনৈতিক সুবিধা দিতেই ইভিএমের (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) বিষয়টিকে দ্রুত আরপিওতে সংযোজন করা হচ্ছে।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ইসির সঙ্গে সংলাপে যেখানে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপক্ষে মতামত প্রদান করেছেন সেখানে ইভিএমের পক্ষে ইসির গৃহীত পদক্ষেপ সন্দেহজনক। দেশবাসীর মনে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশন বিশেষ কোনো দল বা গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দিতেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ দেশে ই-ভোটিং পদ্ধতি নেই। যে কয়েকটি দেশ এটি চালু করেছিল, তারাও ইতোমধ্যে তা নিষিদ্ধ করেছে। ২০০৬ সালে আয়ারল্যান্ড ই-ভোটিং পরিত্যাগ করে। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে জার্মানির ফেডারেল কোর্ট ইভিএমকে অসাংবিধানিক ঘোষণা দেয়।বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর প্রায় ৮৫ ভাগ দেশেই ইভিএম পদ্ধতি ব্যর্থ হয়েছে। তবে তার জন্য মেশিন যতটা না দায়ী ছিল তার চেয়ে বেশি ছিল রাজনৈতিক ও অন্যান্য কিছু সমস্যা।
/ই.কা