• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

একসঙ্গে আট কবর

প্রকাশ:  ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ১২:১৫ | আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাট শহরের আরামনগর এলাকায় বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে লাগা আগুনের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের ৮ সদস্য মারা যায়। মৃতদের জন্য কেন্দ্রীয় কবরস্থানে খোঁড়া হয় একসাথে ৮ কবর। যা আরামনগর এলাকার মানুষ এর আগে কখনো একসঙ্গে এত কবর খোঁড়া দেখেননি। এ নিয়ে গ্রামে চলছে শোকের মাতন।

বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জানাজা শেষে আটজনের মরদেহ জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় শত শত লোক অংশগ্রহণ করেন।

সম্পর্কিত খবর

    ১০ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মুরগি ব্যবসায়ী আবদুল মোমিন (৩৮), তার স্ত্রী পরী বানু (৩০), ২ বছরের শিশু আবদুর নূর, দুই যমজ মেয়ে হাসি ও খুশি (১২), বড় মেয়ে বৃষ্টি (১৪), বাবা দুলাল হোসেন (৭১) এবং মা মোমেনা বেগম (৬১)।

    ঘটনাস্থলে মোমিন, বৃষ্টি ও মোমেনা বেগমের মৃত্যু হলেও বাকিরা ঢাকায় আনার পথে মারা যান। প্রথমে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় জয়পুরহাট জেলা হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল পাঁচজনকে। অবস্থা বেগতিক দেখে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের ঢাকায় পাঠানো হলে পথেই একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সবাই।

    জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে পৌর এলাকার জয়পুরহাট শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজের অদূরে আরামনগর এলাকার একটি বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশীরা হঠাৎ দেখতে পায় বাড়িটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। পরে তারা এগিয়ে এলেও শেষ রক্ষা হয়নি।

    প্রতিবেশীরা জানান, রাতের খাবার খেয়ে আবদুল মোমিনের বাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎ টিন শেডের ওই বাড়িতে আগুন দেখতে পেয়ে তারা এগিয়ে আসেন। খুব দ্রুতই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যরা বাড়ির বের হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন।

    আবদুল মোমিন তার অগ্নিদগ্ধ ছেলে-মেয়েদের কোনো মতে ঘরে বাইরে বের করে দিতে পারলেও নিজে বের হতে পারেননি। তিনি ঘরের ভেতরেই পুড়ে কয়লা হয়ে যান। এছাড়া ঘরের ভেতরেই মোমেনের সঙ্গে তার মা ও বড় মেয়ে মারা যান। তাদের শরীর এমনভাবে পুড়ে গেছে যে তাদের চেনার উপায় নেই। প্রতিবেশীরা বাকিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। নীলফামারীর ডোমারের এ পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে সবাইকে নিয়ে জয়পুরহাট শহরের আরামনগর এলাকায় বসবাস করছিলেন। তিনি ফেরি করে এলাকায় মুরগি বিক্রি করতেন।

    প্রাথমিকভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত বলা হলেও পরে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিট থেকে আগুন লাগে বলে নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর সিরাজুল ইসলাম।

    ঘটনার পরপরই জয়পুরহাট-২ আসনের এমপি আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জয়পুরহাট পৌর মেয়রসহ শত শত লোক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

    পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, বুধবার রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিট থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে গুরুতর দগ্ধ পাঁচজনকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় মারা যায়। তাদের বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নেয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সন্ধ্যায় জানাজা শেষে তাদের মরদেহ জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় শত শত লোক অংশ নেন।

    ওএফ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close