‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে দেশের স্বার্থেই’
দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাংবাদিক, সম্পাদক ডিজিটাল আইনের বিরোধিতা করছেন। তারা বলছেন, সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ হয়ে যাবে। কিন্তু কণ্ঠ তো রোধ হয়নি। রোধ হলে তো মতামত দিতে পারতেন না।
সম্পর্কিত খবর
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশে একটামাত্র টেলিভিশন ছিল। টিভি, রেডিও বেসরকারি খাতে দিতে কোনো সরকার সাহস করেছিল? আমরাই দিয়েছি। সারারাত টকশো হচ্ছে, কেউ তো বাধা দিচ্ছে না।
শেখ হাসিনা বলেন, সাংবাদিকতা হবে গঠনমূলক। বিভ্রান্ত, সহিংসতা ছড়িয়ে দেবে না। ব্যাপকহারে সংবাদপত্রের অনুমোদন দিয়েছি। এত পত্রিকার অনুমোদন পৃথিবীর কোন দেশে আছে?
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘অনেক চড়াই-উৎরাই করে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের সব আশাবাদকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ আবার সুশাসন পেতে শুরু করলো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে আজ উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে জঙ্গি-সন্ত্রাস বড় সমস্যা। তারপরও আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এ সমস্যা মোকাবেলা করেছি। মাদকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছি। ফলে অনেক পরিবার ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের উদাহরণ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, দেশ উন্নত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বিশেষ অবদান রাখতে হয়। মাত্র তিন হাজার মেগাওয়াট থেকে আজকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এই খাতের বিপুল উন্নয়ন করেছি। সব শিল্প কারখানা যাতে চালু থাকতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। সড়ক, নৌ ও বিমান সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। এসব বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য আগে সংসদে বলেছি। মানুষকে সুন্দর একটি জীবন উপহার দেয়ার উদ্দেশেই সরকার পরিচালনা করি।
‘বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি দেশ। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে খাদ্যের নিশ্চয়তার পাশাপাশি চিকিৎসাখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। ৬৪ বছর বয়স থেকে মানুষের আজ ৭১ বছর বয়স। উত্তরাঞ্চলে গেলে কঙ্কালের মতো মানুষ দেখা যেত, এখন মানুষের গায়ে মাংস দেখা যায়।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা ভোগ বিলাসের জন্য না। আমাদের দৃষ্টি গ্রামের মানুষের দিকে। একসময় বিদেশ থেকে কাপড় এনে বিলানো হতো। এখন সেইদিন নেই। গত কোরবানি ঈদের আগে কতগুলো ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে তার হিসাব নেই। রাইস কুকারে ভাত রান্না করেন, মোবাইল ফোন হাতে হাতে, ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছি আমরা। মাত্র ১০ দিনে ১৮টি বিল আমরা পাস করেছি। এত অল্প সময়ে এত বিল কমই পাস হয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দশম জাতীয় সংসদে অশালীন কথা নাই, আজে-বাজে মন্তব্য নেই। সুন্দর একটি পরিবেশ ছিল। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। মানষের এখন সংসদে আস্থা, বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছ সরকার ও বিরোধীদলের পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে। এই অধিবেশনে যে বিলগুলো পাস হয়েছে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
-একে