‘বাচ্চু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অস্ত্রের জোগানদাতা বন্দুকযুদ্ধে নিহত’
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুইজনের একজন ব্লগার ও প্রকাশক শাজাহান বাচ্চু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অপরজন হত্যাকাণ্ডে অস্ত্রের জোগানদাতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম পিপিএম এ কথা জানান।
সম্পর্কিত খবর
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইউনিয়নের সাতগাঁও এলাকায় কেসি রোডে চেকপোস্ট বসানো হয়। রাত দুইটার আগে মোটরসাইকেলযোগে দুজন ওই এলাকা দিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের থামতে বলে। কিন্তু পুলিশের নির্দেশ না মেনে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি করলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ওই দুইজন মারা যান। পরে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সিরাজদিখান থানা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত আব্দুর রহমানের দেওয়া বর্ণনা এবং ক্রাইম রেকর্ড পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আজ শ্রীনগরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুইজনের মধ্যে একজন শাহজাহান বাচ্চুর হত্যা মামলার আসামি মো. শামীম ওরফে কাকা ওরফে বোমা শামীম। সে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার লৌক্ষা গ্রামের বাসিন্দা। এই শামীমই শাহজাহান বাচ্চুর হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পুরো হত্যাকাণ্ডটি পরিচালনা করে। শাহজাহান বাচ্চুর হত্যাকাণ্ড ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও চারটি ডাকাতি মামলা আছে। নিহত অপরজনের নাম এখলাসুর রহমান (৩২)। সে জামালপুর জেলার জামালপুর থানার খামার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। শাহজাহান বাচ্চুর হত্যাকাণ্ডে এখলাসুরও জড়িত ছিল। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সে জোগাড় করে সিরাজদিখান থানার বালুচরের ভাড়া বাসায় জমা করেছিল।’
পুলিশ সুপার জানান, ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে একটি ৭.৬৫ পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, তিন রাউন্ড গুলি, ১১টি তাজা ককটেল, দুটি ছোঁড়া ও একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে জঙ্গিদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জেনে জঙ্গিদের ধরতে শ্রীনগর থানাধীন কেসি রোডে চেকপোস্ট বসায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজনকে ওই রাস্তায় আসতে দেখে পুলিশ তাদের থামতে সংকেত দেয়। কিন্তু মোটরসাইকেলে থাকা জঙ্গিরা পুলিশের ওপর ককটেল ছুঁড়ে এবং গুলিবর্ষণ করে। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে দুই জঙ্গি নিহত হয় এবং অন্য মোটরসাইকেলে থাকা বাকি দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই মাসুদ, এএসআই ইলিয়াস ও কন্সটেবল তানিম আহত হয়। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ জুন সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পূর্ব কাকালদী গ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন প্রকাশক শাহজাহান বাচ্চু। বাচ্চু একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন ব্লগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও লেখালেখি করতেন।
-একে