• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

আস্থা হারিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণে মওদুদের ‘অবরুদ্ধ’ নাটক

প্রকাশ:  ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৪:৩৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আস্থা হারিয়ে এখন বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং দেশবাসীর মনোযোগ আকর্ষণের জন্য মওদুদ আহমেদ ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার নাটক সাজিয়েছেন।

রোববার (১৯ আগস্ট) চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম জিয়া ও তারেক রহমান তাকে (মওদুদ) সন্দেহের চোখে দেখেন। কিছু দিন আগে পত্রপত্রিকায় দেখেছেন বেগম জিয়ার আইনজীবী প্রতিনিধি দলকে বলে দিয়েছিলেন, মওদুদ আহমেদকে মামলায় যেন না রাখা হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও তাকে সন্দেহের চোখে দেখেন। প্রকৃতপক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়নি। এগুলো মনগড়া অভিযোগ। এটি সাজানো নাটক ছাড়া অন্য কিছু নয়।

মওদুদ আহমেদকে নোয়াখালীতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে মর্মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ উপস্থাপন করায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে মওদুদ আহমেদকে কোনো ভাবেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়নি। মওদুদ আহমেদ ইতিপূর্বে কখনো ঈদের ৫-৭ দিন আগে গ্রামের বাড়ি যেতেন না। তিনি সচরাচর সবসময় যত দিন ধরে রাজনীতি করছেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন এবং কয়েক বছর ধরে ঈদের পর দিন গ্রামের বাড়ি যেতেন। কিন্তু গত রমজানের ঈদে ঈদের আগে গ্রামের বাড়ি গেছেন। এবার পাঁচ দিন আগে গ্রামের বাড়ি গেছেন। রমজানের ঈদের আগে কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনে বাতাস দিয়েছিলেন মওদুদ আহমেদসহ আরও অনেকে। সেই আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর মউদুদ আহমেদ গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। তখনো তিনি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল বলে গত রমজানের ঈদে আগেও নাটক সাজিয়েছিলেন।

এবারও কিছু দিন আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আমাদের কিশোর-কিশোরীরা আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। যেটিতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন ছিল। সরকারের পূর্ণ সমর্থন ছিল। সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ সমর্থন ছিল। প্রধানমন্ত্রী অর্থাৎ সরকার সব দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছেন। সেই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মওদুদ আহমেদসহ আরও অনেকেই ২৫-৩০ বছরের যুবক ও মহিলাদের স্কুলের ড্রেস পরিয়ে, পেছনে ব্যাগ ঝুলিয়ে কোমলমতি সাজিয়ে দিয়েছিলেন। সেই ব্যাগের মধ্যে পাথর, চাপাতি, লোহার রডও পাওয়া গেছে। মওদুদ আহমেদরাই এ কাজগুলো করেছিলেন। তাদের সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে কিশোর-কিশোরদের ঘাড়ের ওপর চড়ে বন্দুক শিকারের যে পাঁয়তারা সেটি ব্যর্থ হয়েছে।

এরপর তিনি আবার কোম্পানিগঞ্জ-নোয়াখালী গেছেন। তিনি আবার অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে মর্মে নাটক সাজিয়েছেন। বলছেন, পুলিশ তাকে নাকি অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, সেখানে কোনো পুলিশ নেই। তার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি কয়েক ভাগে বিভক্ত। তাদের মধ্যেই দলাদলি আছে, কোন্দল আছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে ঘায়েল করতে সবসময় তৎপর থাকে। তিনি সেটি আড়াল করতে সরকার, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।

মওদুদ আহমেদ ও রিজভী আহমেদকে অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এ ধরনের নাটক করে আপনাদের মধ্যে যে মতদ্বৈততা দ্বিধাদ্বন্দ্ব সেগুলো যেমন লুকোতে পারবেন না তেমনি মওদুদ আহমেদও তার দলের চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনসহ নেতা-কর্মীদের যে আস্থা হারিয়েছেন এ নাটক করে তা ফিরে পাবেন বলে আমার মনে হয় না।

আগস্ট মাস আসলেই নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয় জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে হত্যা করা হয়েছিল। ২১ আগস্ট বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। আইভী রহমানসহ ২৪জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সেদিন মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শ্রবণশক্তি অনেকটা লোপ পেয়েছে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে বোমা হামলা হয়েছিল। এবার কিশোর-কিশোরীদের ঘাড়ে চড়ে যে ষড়যন্ত্র, সেটিও এই আগস্ট মাসে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ড. কামাল হোসেন সাহেবসহ একটি পক্ষ হাঙ্গামায় জড়িত ছাত্রদের মুক্তি দেওয়ার জন্য খুব সরব। কিন্তু তাদের হামলায় আমাদের দলের একজন নেতার চোখ উপড়ে ফেলা হলো, ২১ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গুরুতর আহত, সবমিলিয়ে ৫০ জন আহত, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা হলো- সেটা নিয়ে কোনো কথা নেই।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধীরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দেশবিরোধী শক্তি, জঙ্গী-সন্ত্রাসী গোষ্ঠির মদদদাতা বিএনপি-জামায়াতসহ যারা ১/১১’র কুশীলব তারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য তারা এখন নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

/এসএম

ড. হাছান মাহমুদ,আওয়ামী লীগ
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close