• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘জাল সনদে’ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অতঃপর বিভাগীয় সভাপতি!

প্রকাশ:  ১৯ আগস্ট ২০১৮, ০০:৩৮
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সঙ্গীত বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সনদ (দুই বছরের অনার্স কোর্স) ও তথ্য গোপন করে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম ভেঙে মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। নিজ বিভাগে স্ত্রীকেও অনিয়ম করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া এবং পদোন্নতি পাইয়ে দিয়েছেন ওই শিক্ষক। বিভাগের সহকর্র্মী অন্য দুই শিক্ষকের এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অভিযুক্ত ড. অসিত রায় সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক। তিনি জাল সনদে বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে সহকারী, সহযোগী অধ্যাপক ও সবশেষ অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি তিন বছর বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তার স্ত্রী ড. পদ্মিনী বিভাগটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

সম্পর্কিত খবর

    বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এম. আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের ৪৮২তম সভায় গুরুতর এসব অভিযোগ পর্যালোচনা শেষে কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আব্দুল আলিম এসব তথ্য জানান।

    অধ্যাপক আব্দুল আলিম জানান, সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক কৃষ্ণপদ মন্ডল ও ড. দীনবন্ধু পালের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটে বিষয়টি আলোচ্যসূচি হিসেবে পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে উঠে আসে দুই বছরের অনার্স কোর্স সার্টিফিকেট চার বছরের কোর্স হিসেবে চালিয়ে দিয়েছেন অধ্যাপক অসিত রায়। এছাড়া পিএইচডির মৌখিক পরীক্ষা না দিয়ে ডিগ্রি লাভের অভিযোগও রয়েছে। স্ত্রী নিজ বিভাগে নিয়োগ দেয়ার সময়ও কিছু অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোলাম কবীরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগগুলো তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কমিটিতে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু ও জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বনাথ শিকদারকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে বলে জানান সিন্ডিকেট সদস্য আব্দুল আলিম।

    বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে অধ্যাপক অসিত রায়ের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এরই প্রেক্ষিতে বিভাগের দুই সহকর্মী ড. অসিত রায়ের বিরুদ্ধে ফের লিখিত অভিযোগ করেন।

    অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক অসিত রায় বলেন, যে সনদটি দিয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছি, সেটি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমি আগেই অন্য একটি বিষয়ের উপর গ্রাজুয়েশন করেছিলাম, ফলে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে বিশেষ অনার্স কোর্সে ভর্তির সুযোগ পায়। সেটা ছিল দুই বছরের কোর্স। কিন্তু সেখানে মৌলিক সব বিষয়ে পড়ানো হয় এবং ওই সনদ দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করার বিষয়ে কোনো বাধা নেই। কারণ সনদে স্পষ্ট লেখা থাকে- ‘বিএ (অনার্স), ডিপার্টমেন্ট অব মিউজিক’।

    ভাইভা না দিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি নেয়ার অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি গবেষণারত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যোগদান করি। পরে অগ্রিম ছুটি নেয়। অসুস্থতার কারণে এর মধ্যে ভারতে যায়। সেখানে থিসিসে সব রিপোর্ট পৌছে যাওয়া আমার সুপারভাইজার আমাকে ভাইভা নেন। ফিরে এসে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি ফাইসুল ইসলাম ফারুকীর কাছে রিপোর্ট জমা দেয়। সবকিছু নিয়ম মেনে করেছি। প্রতিহিংসাবশত আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। যা সব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close