• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

এক জীবনে গোলাম সারওয়ার

প্রকাশ:  ১৪ আগস্ট ২০১৮, ০২:২৮ | আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০১৮, ০৩:৫২
বিশেষ প্রতিনিধি

একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি সাংবাদিক, দৈনিক সমকালের সম্পাদক ও বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব গোলাম সারওয়ার চলে গেলেন জীবনের অনিবার্য গন্তব্যে।৭৫ বছর বয়সী এই বরেণ্য ব্যক্তিত্ব সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৩ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বর্ষিয়ান সাংবাদিক গোলাম সারওয়ারের মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যমে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

এদেশের সাংবাদিকতার উজ্জ্বল এক নক্ষত্র ছিলেন গোলাম সারওয়ার। মুক্তচিন্তা, প্রগতিশীল মূল্যবোধ আর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সোচ্চার এ মানুষটির হাতে গড়া ন্যুনতম পাঁচ'শ সাংবাদিক বর্তমানে দেশের প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। আর এ কারণে তাকে অনেকেই সাংবাদিকতার শিক্ষক মানেন। গোলাম সারওয়ারের সম্পাদনায় আত্মপ্রকাশ করে দেশের শীর্ষ দুই সংবাদপত্র দৈনিক 'যুগান্তর' ও 'সমকাল'।

সম্পর্কিত খবর

    বরিশালের বানারীপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ‌১৯৪৩ সালের ১ এপ্রিল গোলাম সারওয়ারের জন্ম । বাবা মরহুম গোলাম কুদ্দুস মোল্লা ও মা মরহুম সিতারা বেগম। স্থানীয় স্কুল-কলেজে পড়াশোনার গন্ডি পেরিয়ে ভতি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। অনার্সে ছাত্র থাকাকালীন ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পয়গামের বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন।১৯৬৩ সালে মাস্টার্স শেষ করে সাংবাদিকতাকেই অবলম্বন হিসেবে বেছে নেন, দৈনিক সংবাদের সহসম্পাদক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন। একাত্তরের সেই কালরাত্রি ২৫ মার্চ পর্যন্ত সংবাদেই কর্মরত ছিলেন।

    মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেই গোলাম সারওয়ার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলায় চলে যান। ট্রেনিং শেষ করে প্রথম গেরিলা ট্রুপের সদস্য হিসেবে সশ্রস্ত্র যুদ্ধ শুরু করেন। নিজ এলাকা বানারীপাড়ায় বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন।

    মুক্তিযুদ্ধের পর বছর খানেক বানারীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গোলাম সারওয়ার। ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝিতে আবারও ফিরেন সাংবাদিকতায়, দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র সহসম্পাদক হিসেবে যুক্ত হন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে প্রধান সহসম্পাদক, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

    সত্তর দশকের মাঝামাঝিতে চলচ্চিত্রের সোনালী সময়ে ইত্তেফাকের ব্যবস্থাপনায় সাপ্তাহিক পূর্বাণী নামে একটি রঙিন সাময়িকী প্রকাশিত হতো। দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র বিষয়ক ওই সাময়িকীর নির্বাহী সম্পাদকে দায়িত্ব পালন করেন গোলাম সারওয়ার। এ দেশের চলচ্চিত্রকে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে চিত্রালী ও পুর্বাণী পত্রিকা ওই সময় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের সংগঠন ‘বাচসাস’-এর সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

    দেশের সংবাদপত্রশিল্পে আশির দশক থেকে বৃহৎ কলেবরে সাহিত্য সমৃদ্ধ ঈদসংখ্যা প্রকাশের রেওয়াজ শুরু হয়। সাপ্তাহিক পূর্বাণীতে প্রথম ম্যাগাজিন আকারে বৃহদায়তনের ঈদসংখ্যা তারই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছিল।

    দীর্ঘ দুই যুগ দৈনিক ইত্তেফাকে কর্মরত থাকার পর ১৯৯৯ সালে দৈনিক যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দৈনিক সমকাল। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রকাশনার শুরু থেকেই গোলাম সারওয়ার প্রতিষ্ঠিত এ দুটি দৈনিক দেশের বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।

    ষাটের দশকে সাংবাদিকতার শুরু থেকে টানা অর্ধশত বছর গোলাম সারওয়ার এই পেশায় মেধা, যুক্তিবোধ, পেশাদারিত্ব, দায়িত্বশীলতা, মুক্ত ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার নিরবচ্ছিন্ন চর্চাকে উৎসাহিত করে গেছেন। সংবাদপত্রের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ বার্তা বিভাগে গোলাম সারওয়ারের সৃজনশীলতা, সংবাদবোধ ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। তিনিই প্রথম এদেশে প্রতিদিন রঙিন খেলার পাতা, বিনোদন পাতা, নানা স্বাদের গুচ্ছ গুচ্ছ ফিচার প্রকাশ করার রীতি প্রবর্তন করে দৈনিক পত্রিকার চেনা অবয়বকে পাল্টে দিয়ে একটি দৈনিককে পরিবারের সব সদস্যের উপযোগী করে তোলার পরিকল্পনাকে সফলভাবে বাস্তবায়িত করেন।

    সাংবাদিকতার পাশাপাশি প্রচুর বই লিখেছেন গোলাম সারওয়ার। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ছড়াগ্রন্থ রঙিন বেলুন' এবং প্রবন্ধ সংকলন সম্পাদকের জবানবন্দি', অমিয় গরল', আমার যত কথা', স্বপ্ন বেঁচে থাক' উল্লেখযোগ্য।

    গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব গোলাম সারওয়ার বিভিন্ন সময় চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি।

    সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য গোলাম সারওয়ার ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়া তিনি ২০১৬ সালে কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি) আজীবন সম্মাননাএবং ২০১৭ সালে আতাউস সামাদ স্মারক ট্রাস্ট আজীবন সম্মাননাঅর্জন করেন।

    দেশের সংবাদপত্রের বিকাশ ও উত্তরণের ইতিহাসে একজন পথিকৃৎ মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক গোলাম সারওয়ার। সংবাদপত্র জগতে নামটি গুরুত্বের সঙ্গে বারবার উচ্চারিত হবে। গণমাধ্যমকর্মীরা অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে তার নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে যাবে।

    একনজরে গোলাম সারওয়ার

    জন্ম: ১৯৪৩ সালের ১ এপ্রিল

    জন্মস্থান: বরিশালের বানারীপাড়া

    বাবা: মরহুম গোলাম কুদ্দুস মোল্লা

    মা: মরহুম সিতারা বেগম।

    শিক্ষা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর (সম্মান)

    সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি: দৈনিক আজাদীর বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা (১৯৬২)

    পেশাগত সাংবাদিকতা শুরু: দৈনিক সংবাদের সহসম্পাদক (১৯৬৩ -১৯৭১)

    মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ: বরিশালের বানারীপাড়া অঞ্চলের রণাঙ্গণের যোদ্ধা।

    কর্মজীবনের দীর্ঘসময়: দৈনিক ইত্তেফাক (১৯৭৩ থেকে ১৯৯৯)

    প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: দৈনিক যুগান্তর (১৯৯৯) ও দৈনিক সমকাল (২০০৫)

    সম্পাদনা: সাপ্তাহিক পূর্বাণী (নির্বাহী সম্পাদক) http://www.pbd.news/​

    প্রবর্তন: ম্যাগাজিন আকারে ঈদসংখ্যা প্রকাশ, খেলা ও বিনোদনের রঙিন পাতা

    প্রকাশিত গ্রন্থ: রঙিন বেলুন (ছড়া সংকলন), সম্পাদকের জবানবন্দি (কলাম), অমিয় গরল (প্রবন্ধ), আমার যত কথা (স্মৃতিচারণ), স্বপ্ন বেঁচে থাক (প্রবন্ধ)

    উল্লেখযোগ্য সম্মাননা: একুশে পদক (২০১৪), সিজেএফবি আজীবন সম্মাননা (২০১৬), আতাউস সামাদ স্মারক ট্রাস্ট আজীবন সম্মাননা (২০১৭)।

    সাংগঠনিক দায়িত্ব:

    ১. সভাপতি. সম্পাদক পরিষদ

    ২. সদস্য, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড

    ৩. সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি)

    ৪. জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব

    ৫. সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি

    মৃত্যু: ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট (সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল)

    গোলাম সারওয়ারকে নিয়ে গুণীজনের মন্তব্য

    লতি বছরের ১ এপ্রিল প্রথিতযশা সাংবাদিক গোলাম সারওয়ারের ৭৫তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে ‘সুবর্ণ রেখায় বাতিঘর’ শীর্ষক একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এতে দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক সমকালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক নিয়ে দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নানা মন্তব্য স্থান পাই। সেখানে নির্বাচিত কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হলো।

    শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান : অনেক কাল আগে আমি তাকে পেয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররূপে। সেই থেকে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তার প্রবেশ এবং উন্নতি লাভের ধারাটি আমি আগ্রহে ও সানন্দে দেখে আসছিলাম। নিজ মেধা ও শ্রমের বদলে সে দেশের একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকের সম্পাদক পদে সগৌরবে অধিষ্ঠিত হয়েছে। সাংবাদিক মহলে সে সমাদৃত শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে। এই অর্জন সামান্য নয়।

    অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত : গোলাম সারওয়ারকে আমি সফল সম্পাদক হিসেবে মনে করি। ৭৫ তম জন্মবার্ষিকীর বার্তা হলো, যেভাবে সাংবাদিকতায় নিজস্ব একটা বলয় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, ভবিষ্যতেও তা ধরে রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

    সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী : গোলাম সারওয়ার শুধু পত্রিকা প্রকাশনা এবং সাংবাদিকতাই করেননি, বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগৎকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, কীভাবে আধুনিক করা যায়। কীভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কাগজ করা যায়, সেদিকেও নজর দিয়েছেন। সংবাদপত্রের মধ্যে যোগ করেছেন নতুন নতুন বিষয়। পাঠকের চাহিদা আর সংবাদপত্রের মান দুটোতেই তিনি খেয়াল রেখেছেন। খেয়াল রেখেছেন এক মলাটে কীভাবে পরিবারের সবার চাহিদা মেটানো যায়। আর শুধু খেয়াল রেখে দিন পার করেননি, সফলও হয়েছেন।

    জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান : গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে আমার পরিচয়ের সূচনাটি বোধহয় তার মনে নেই; কিন্তু আমার মনে আছে। মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে যখন ইত্তেফাকের চাকরিতে আবার যুক্ত হই তখন ইত্তেফাকের অবস্থা খুবই সঙ্গীন। ইত্তেফাকের বার্তা সম্পাদক তখন ছিলেন মুহম্মদ আসাফুদ্দৌলা রেজা। বাহাত্তর সালের গোড়ার দিকে তিনি বললেন, ইত্তেফাকের জন্য কিছু ভালো সাংবাদিক আনার জন্য। আমি তখন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে ছিলাম সে কারণে রেজা ভাই বোধকরি আমাকে একথা বলেছিলেন। যাই হোক ভালো সাংবাদিকের খোঁজে আমি নেমে পড়লাম। সেই সূত্রে গোলাম সারওয়ারকে খুঁজে পাওয়া গেল। কে সেদিন আমাকে গোলাম সারওয়ারের নাম বলেছিলেন একথা মনে নেই। তবে তিনি যে সংবাদপত্র জগৎ এবং পেশার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নাই।

    তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু : মুক্তিযোদ্ধা, দৈনিক সমকালের সম্পাদক, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি, সেন্সর বোর্ডের আপীল বিভাগের সদস্য এবং সাংবাদিকতায় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভ‚ষিত গোলাম সারওয়ার বাংলাদেশের গণমাধ্যম জগতের এক অনন্য প্রাণ। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়ব্যাপি তার বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবনের নিবেদিত কর্মযজ্ঞতাকে সর্বজনশ্রদ্ধেয় এক মাত্রায় নিয়ে গেছে। তার জন্মদিনে জানাই অনেক শুভ কামনা।

    নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের : গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে আমার পরিচয় আশির দশকের শুরুতে। সারওয়ার ভাই অত্যন্ত বন্ধুবাৎসল। বিভিন্ন সময় তাঁর আন্তরিকতা ও বন্ধুবাৎসল্যের পরিচয় পেয়েছি। তার সম্পাদিত সব কাগজের সঙ্গেই তিনি আমাকে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত করেছেন। তিনি আমার হিতার্থীদের একজন। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের সংবাদপত্রের বিকাশ ও উত্তরণের ইতিহাসে তাঁর নাম অতি গুরুত্বের সঙ্গে বারবার উচ্চারিত হবে।

    সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর : সাংবাদিক গোলাম সারওয়ারের কথা কিছু বলি। আমাদের সাংবাদপত্রের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন তফাজ্জল হোসেন, মানিক মিয়া, সিরাজুদ্দীন হোসেন, জহুর আহমেদ চৌধুরী, বজলুর রহমান, ফয়েজ আহমেদ, কেজি মুস্তাফার মতো উজ্জ্বল মানুষেরা। তারই ধারাবাহিকতায় গোলাম সারওয়ারও আমাদের একজন পথিকৃৎ সাংবাদিক। যার হাত ধরে আমাদের সংবাদ মাধ্যম বহুদূর পাড়ি দিয়েছে এবং সামনে আরও দিবে।

    বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ : বন্ধুবর গোলাম সারওয়ারকে চিনি আজ প্রায় ৪৬ বছর। তিনি শুধু বন্ধু নয়, অনেকটা ভাইয়ের মতো। আমি ব্যারিস্টারি পাস করে দেশে ফিরে আসার পর প্রথম তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে ১৯৬৮ সালে, যখন বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামি করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয়। তিনি তখন দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহ সম্পাদক হিসেবে কাজ করছিলেন… একজন সজ্জন, পেশাদার, দায়িত্বশীল সাংবাদিক হিসেবে গোলাম সারওয়ার দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। সংবাদপত্র জগতে গোলাম সারওয়ার একজন পথিকৃৎ হিসেবে চিরস্মরণীয় থাকবেন।

    বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : বাংলাদেশে সাংবাদিকতা জগতে গোলাম সারওয়ার আলোর দিশারী। ষাটের দশক থেকে একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে সংবাদপত্র শিল্পকে অনন্য উচ্চতায় নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন তিনি।

    চলচ্চিত্র নায়িকা ববিতা : আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি একজন গোলাম সারওয়ারের মতো মানুষ যুগে যুগে আসে না। তিনি সত্যিকার অর্থে আমাদের সম্পদ। একুশে পদকপ্রাপ্ত এই গুণী মানুষটির ৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

    অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আফজাল হোসেন : তাকে আমি চিনি না। আবার তাকে চিনি। কি খেতে ভালোবাসেন তিনি, কোন রং পছন্দ? এমন মাত্রায় নিশ্চয়ই চিনি না। সবাইকে তেমনভাবে চিনতে হবে প্রয়োজনীয় নয়। তিনি একজন সাংবাদিক। সে পরিচয়ে বহুকালের চেনা। তিনি গুণী সম্পাদক, শ্রেষ্ঠদের একজন তাও অজানা নয়। গোলাম সারওয়ার নামের সাধারণ বলা ও চলার অসাধারণ মানুষটাকে চিনি অনেককাল… সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে সারওয়ার ভাই ডাকি আর তিনি আমাকে ডাকেন নাম ধরে। তুমি করে বলেন। এর চেয়ে নিকটের সম্পর্ক, আরও বেশি করে তাকে চেনার কি দরকার আছে?

    এনই/

    গোলাম সারওয়ার,গোলাম সারওয়ারের জীবনী,সমকাল সম্পাদক,একনজরে গোলাম সারওয়ার
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close