• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি উপাচার্যদের, ‘অধিকার নেই’ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশ:  ০৮ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৪৭
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকালে আটক শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। এর উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী জানালেন, কাউকে মুক্তি দেওয়ার অধিকার তাদের নেই।

বুধবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃপক্ষের মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানান উপাচার্যরা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন যৌক্তিক ছিল। আমরা তাদের এ দাবির সমর্থন করি। আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের যেসব সমস্যা তা তারা চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে। যৌক্তিক বলেই প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়েছেন। বর্তমানে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নতুন সড়ক আইন করা হয়েছে। তাই আর ছাত্রদের রাস্তায় থাকার কোনও অবকাশ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রধানদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছি। এরপর আর তারা রাস্তায় না নামলেও এখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামছেন। তৃতীয় পক্ষ উসকে দিয়েছে, সুবিধা নিতে চাইছে। তাই আন্দোলনের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখবেন না। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘উপাচার্যরা অনেকেই বলেছেন, আটক ছাত্রদেরকে মুক্তি দিতে। কিন্তু আমরা কাউকে মুক্তি দেওয়ার অধিকার রাখি না। ছাত্ররা যদি প্রকৃত অর্থেই অপরাধ করেন, আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে আইশৃঙ্খলাবাহিনী। তবে কেউ যদি নিরাপরাধ প্রমাণিত হয় তবে সে মুক্তি পাবে।’

সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আব্দুল মান্নান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যা-ই করেছে তাদের সাধারণ ক্ষমা করা উচিত। কারণ, পরিস্থিতি কোনও না কোনও কারণেই তো সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া নতুন করে কোনও ইস্যু তৈরি করে, সেই সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না।’ এজন্য পুলিশের হাতে আটক সব শিক্ষার্থীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান তিনি।

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি আগের কোনও অজ্ঞাত মামলায় আটক শিক্ষার্থীদের ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই, যা হবার হয়েছে, যেহেতু এখন পরিস্থিতি শান্ত, ফলে শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক।’

উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ইয়াসমিন আরা রেখা বলেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা না বুঝেই আন্দোলনে যুক্ত হয়। শিক্ষকরা যদি শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন তবে শিক্ষার্থীরা আর আন্দোলনে যুক্ত হয় না।’ তাই তিনি শিক্ষকদের তৎপর থাকার পরার্মশ দেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির বলেন, ‘৬ আগস্ট বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে তা অনেক জটিল ছিল, তার মাধ্যমে আমরা শিখেছি। বিভিন্নভাবে আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমি সার্বক্ষণিক খোঁজ নিয়েছি, পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেছি, ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। সম্মলিতভাবে কাজ করলে সুবিধা পাওয়া যায়।' তাই যেকোনও সমস্যাতে অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দিয়েছি।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন বলেন, ‘সঠিক তথ্যের মাধ্যমে প্রতিবাদ করা দরকার, মিথ্যা গুজবে বিচার বিশ্লেষণ না করে প্রতিবাদ কারা উচিৎ নয়। কোনও শিক্ষার্থী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটিকে গুরুত্ব দিতে আমি পুলিশ প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এ বিষয়ে আমরাও সজাগ রয়েছি।’

মতবিনিময় সভায় দেশের ১০৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এবং কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালগুলোর উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রাররা উপস্থিত ছিলেন।

-একে

সড়ক আন্দোলন,শিক্ষামন্ত্রী,উপাচার্য
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close