• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের হোতা জামায়াত-শিবির’

প্রকাশ:  ১৯ জুলাই ২০১৮, ১৫:৩৪ | আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৮, ১৫:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান বলেছেন, ‘২০০৪ সালে সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন শুরু করেছিল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে এখন ষড়যন্ত্র করছে। তারা কোটা সংস্কারের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের ষড়যন্ত্র করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে কোটা পদ্ধতি চালু রাখতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ৬-দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শ্রীমঙ্গল অভিমুখে ‘জনতার অভিযাত্রা’ কর্মসূচির উদ্বোধনী বক্তৃতায় শাজাহান খান এসব কথা বলেছেন।

জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সরকারি চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা, তাদের সন্তান ও উত্তরসূরিদের সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ না দেয়া এবং মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধী সকল অপশক্তি রুখে দাঁড়াতে ৬-দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শ্রীমঙ্গল অভিমুখে ‘জনতার অভিযাত্রা’ শুরু হয়েছে।

এটি আয়োজন করেছে শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদ। আন্দোলনের আহবায়ক ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এ অভিযাত্রায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন দু’টি ধারার রাজনীতি চলছে। একটি হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর অপরটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষের অপশক্তি। স্বাধীনতার বিপক্ষের সকল অপশক্তিকে চিরতরে নির্মূলকরতে হবে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশকে উন্নয়নের পথে আরো এগিয়ে নিতে হবে।’

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজাকারদের বিচার, জঙ্গি দমন, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জামাত-শিবির দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করতে হবে।”

জনতার অভিযাত্রায় যোগ দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাট্যব্যক্তিত্ব রোকেয়া প্রাচী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন তার লক্ষ্য ছিলো ১৯৭১। বঙ্গবন্ধুর পরবর্তীতে তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। আজকের সময়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত করছে তারাই যারা শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিলো কিংবা সমর্থন করেছিলো। তাকে হত্যার পর ২৬বছর তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে একটি বিভ্রান্তিকর অবস্থানে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছে জিয়াউর রহমান।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরায় সমুন্নত হয়েছে। ঠিক সে সময়ই সারাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে যে আন্দোলন হচ্ছে তা শুধু তরুণ প্রজন্মের চাকরির সংকটের জায়গা থেকে বিবেচনা করলে ভুল হবে, এটি আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই আঘাত করতে চায়। সামনে নির্বাচন, দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা। তারই বিপরীতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান যে ছয় দফা দাবি নিয়ে এগোচ্ছেন তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। তারই নেতৃত্বে জনতার অভিযাত্রায় অংশ নিচ্ছি। নি:সন্দেহে এটি বাস্তবায়ন হলে ষড়যন্ত্রকারীদের নস্যাৎ করে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ”

‘জনতার অভিযাত্রায়’ অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদির গামা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমেদ, শ্রমিক লীগ নেতা সাহাবুদ্দিন মিয়া, সিবিএ নেতা মোঃ কামালউদ্দিন, সিবিএ নেতা আবুল হোসেন, সিবিএ নেতা মহসিন ভূইয়া, শ্রমিক নেতা ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

‘জনতার অভিযাত্রা’ জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে সকালে শুরু হয়ে সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গিয়ে শেষ হবে। পথিমধ্যে নরসিংদীর ইটাখোলা মোড়, ভৈরব বাস টার্মিনাল, ব্রাম্মণবাড়িয়ার চৌরাস্তায় ৬-দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমাবেশ, হবিগঞ্জের মাধবপুরে লিফলেট বিতরণ এবং শায়েস্তাগঞ্জে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

ওএফ

শাহজান খান,জামায়াত-শিবির
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close