• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

সংশয়ে বিএনপি, আশাবাদী আ. লীগ

প্রকাশ:  ২৩ জুন ২০১৮, ১২:৩৭ | আপডেট : ২৩ জুন ২০১৮, ১৬:১৭
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

ভোটের বাকি আর মাত্র তিন দিন। প্রচার-প্রচারণাও তুঙ্গে। শেষ বেলায় গাজীপুরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই দুই দলের প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপই বেশি। নির্বাচনী পরিবেশে পক্ষপাত আছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। আর বিএনপিকে নালিশী দল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। দুই প্রার্থীর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্য দিয়েই চলছে জনসংযোগ, পথসভা, ভোট প্রার্থনা।

প্রধান দুটি দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও ঢাকা থেকে গাজীপুরে এসে নিজেদের প্রার্থীদের পক্ষে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে প্রচার চালান। আওয়ামী লীগ ১৪ দলের ব্যানারে ও বিএনপি এককভাবে জনসংযোগ করছে।

সম্পর্কিত খবর

    বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার সকালে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়দেবপুরে প্রচার চালান। তিনি সেখানে পথসভা করেন। এতে সমবেত হন কয়েকশ লোক। ও ই সময় তিনি ভোটের পরিবেশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। পরিস্থিতিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে তা আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। আর এমন পরিস্থিতির জন্য সরকারের ক্যাডার বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করেন হাসান উদ্দিন সরকার।

    প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা চেষ্টা করুন, ভোট যেন সুষ্ঠু হয়। তা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এ পর্যায়ে এসে ভোট চুরির বিরুদ্ধে যা করা দরকার করব। নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যা আন্দোলন করা দরকার করব।’

    সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে ভোট সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। ভোটে সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের ক্ষেত্র (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নষ্ট হবে। তিনি নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীকে ধর পাকড়, ভয় দেখানো, ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে হুমকিধমকি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

    জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় আছে। আজ সকাল থেকে ১৩ নম্বর, ২৩ নম্বরসহ কয়েকটি ওয়ার্ডে জনসংযোগ ও পথসভা করেন তিনি। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে পথসভা শেষে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁরা হেরে যাওয়ার ভয়ে আছেন। মানুষ তাঁদের সঙ্গে নেই বুঝেই এমন অভিযোগ করছেন। সব প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ দেখছি। আমরা সবাইকে প্রচার চালাতেই ব্যস্ত দেখতে পাচ্ছি।’

    বিএনপি প্রার্থীর উদ্দেশে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখানে এর আগে আপনাদের দলের প্রার্থী মেয়র ছিলেন। তিনি কোনো উন্নয়ন করেননি। আপনি বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা। অপপ্রচার না চালিয়ে জনগণের কাছে গিয়ে বোঝান আপনি কী করতে চান। অপপ্রচার চালিয়ে গাজীপুরে ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করবেন না।

    বিএনপি অভিযোগে জানিয়েছে, গত বুধবার দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। দলটির পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের হয়রানি বন্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।

    এ বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুণ অর রশিদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, গণগ্রেপ্তার বা ধরপাকড়ের ঢালাও অভিযোগ সত্য নয়। বিএনপির নয়জনকে আটকের তথ্যও সত্য নয়। মাত্র দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তা-ও তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।

    এদিকে স্থানীয় থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথমবারের তফসিল ঘোষণার পর গাজীপুরে ‘গোপন বৈঠক’ থেকে জামায়াতের ৪৫ জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১ জনের এই নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। এর বাইরে আরও ১০৩ জনকে বিভিন্ন সময়ে আটক করা হয়। এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১৫৮ জনকে আটক করা হয়েছে। বেশির ভাগকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সবাইকে গাজীপুরের পুলিশ আটক করেছে, তা নয়। অনেকে ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক হয়েছিলেন।

    এর আগে ইসির তফসিল অনুসারে ১৫ মে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্তির প্রজ্ঞাপন ও নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিলের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশন পৃথক তিনটি আবেদন করে। শুনানি শেষে ১০ মে আপিল বিভাগ এই নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে ২৮ জুনের মধ্যে এ নির্বাচন করতে বলেন। এরপর ১৩ মে ইসির এক সভায় ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

    /এসএইচ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close