• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

মাশরাফির অজানা ভবিষ্যৎ- (পর্ব-৪)

প্রকাশ:  ২০ জুন ২০১৮, ১০:০২
ম্যাশরুল ইসলাম

মানুষের সকাল হয় সূর্যের হাসির সঙ্গে হাসি মিলিয়ে । আর মাশরাফির সকালটা হয় প্রতিদিন এক যন্ত্রণার অনুভূতি দিয়ে । রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই যে ব্যাপারটা টের পান, তা হলো হাঁটু থেকে শুরু করে দুটো পা প্রায় অবশ হয়ে আছে। সরাসরি খাট থেকে নেমে পড়ার উপায় নেই। আস্তে আস্তে শুরু করতে হয় ম্যাসাজ। করতে করতে একসময় অনূভুতিটা ফিরে আসে। এরপর খাট থেকে নেমে একটা-দুটো পরে পা বাড়ানো। একটু একটু করে চলার শক্তি ফিরিয়ে আনা।

প্রতিনিয়ত এভাবে নিজেকে নতুন করে তৈরি করে দিনটা শুরু করতে হয় মাশরাফিকে। এ তো স্বাভাবিক একটা দিনের কথা গেলো ।খেলার দিনটায় প্রস্তুতিটা আরও অনেক বেশি। সেদিন হোটেল থেকে বেরোনোর আগেই করতে হয় টেপিং। টেপিং ব্যাপারটা হলো এক ধরনের টেপ দিয়েই দুটো হাঁটুকে শক্ত করে মুড়ে ফেলা। যাতে সেটা আর নড়তে না পারে। এরপর দুটো হাঁটুতে পরতে হয় কৃত্রিম "নি ক্যাপ" ।

সম্পর্কিত খবর

    যাতে খানিকটা হলেও হাঁটুর অনুভূতি থাকে।আর এই বর্মটর্ম পরে আসতে হয় মাঠে।মাশরাফির এই নিত্যদিনকার প্রস্তুতি সম্পর্কে ডা. দেবাশিস বলেছেন, "আসলে সকাল বেলা যেটা হয়, একটা বড় সময় ধরে অসক্রিয়তার ফলে পেশি ও নরম টিস্যু গুলো শক্ত হয়ে যায়। এটা সাধারণ মানুষের ও হয় দেখবেন। সে জন্য ঘুম থেকে উঠে মানুষ শরীরের চলাচলটা একটু ঠিক করে নেয়। এখন যার হাঁটু দুটো, গোড়ালিগুলোর নরম টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত; প্রতিটা সকালই তার জন্য যন্ত্রণাময় হবে। এমন নয় যে, রাতের সঙ্গে এর সম্পর্ক আছে। মাশরাফি যদি কখনও দুপুরে ঘুমিয়ে পড়ে বা অনেকক্ষণ ধরে এক জায়গায় বসে থাকে; তাহলেও তার একই ঘটনা ঘটবে। রাতে যেহেতু এই অসক্রিয়তাটা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চলে, তাই সকালে ধাক্কাটা প্রতিদিন বেশি যায়।"

    কথায় কথায় ম্যাচের আগের প্রস্তুতি অংশটা আসল। সেটাও ব্যাখ্যা করলেন এই চিকিৎসক । তিনি একটা জিনিস পরিষ্কার করলেন, "শুধু ম্যাচের আগের ওই প্রস্তুতিই যথেষ্ট নয়, ম্যাচের সময়ও হিসেব করেই চলতে হবে এ রকম একজন খেলোয়াড়কে। তাকে বুঝতে হবে, তার জন্য কোনটা সঠিক। আরেকজন খেলোয়াড় যে কাজটা পারবে, সেটা সে পারবে কিনা.!"

    আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটা। মাঠে কি এত হিসাব করে ক্রিকেট খেলা যায়। এই প্রসঙ্গে কথায় কথায় হাবিবুল বাশার বলেছিলেন, "মাশরাফির সব সতর্কতা বা হিসাব-নিকাশ মাঠের বাইরে। মাঠে সে যখন পৌঁছে গেলো, তার সঙ্গে আর একজন খেলোয়াড়ের কোনো পার্থক্য নেই। বরং তার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়, মাশরাফি অন্য অনেক খেলোয়াড়ের চেয়ে মাঠে ঝুঁকিপূর্ণ লাফঝাঁপ এখনো হয়তো বেশিই দেন।" তবে ডা. দেবাশিস বলেছিলেন, "মাশরাফির এই দীর্ঘ ইনজুরির অভিজ্ঞতা ওর মস্তিষ্কে একটা ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছে। ও জানে এখন বোকামো আর সাহসিকতার মধ্যে পার্থক্য কি.? ও মাঠে সাহসী, তবে বোকা নয়। আর এ জন্যই সে এই বিস্ময়কর ভাবে খেলে যেতে পারছে ।"

    সূত্র- মাশরাফি (বই)

    /এস কে

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close