কবি সুফিয়া কামালের ১০৭ তম জন্মবার্ষিকী আজ
কবি বেগম সুফিয়া কামাল ছিলেন বাঙালী নারী জাগরণের অগ্রদূত। আজ তাঁর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বরিশালের শায়েস্তাবাদের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সুফিয়া কামাল।
তিনি সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি নারীমুক্তি, মানবমুক্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে গেছেন। একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ ৫০টির বেশি পুরস্কার পেয়েছেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আব্দুল বারী। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও মা সাবেরা বেগমের কাছেই বাংলা পড়তে শেখেন এই মহিয়সী নারী।
সম্পর্কিত খবর
১৯২৬ সালে সওগাত পত্রিকায় প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে কবি সুফিয়া কামালের কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটে। তাঁর রচিত সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে কবিতা, গল্প ও ভ্রমণ কাহিনী। তাঁর রচিত ‘একাত্তরের ডায়েরি’ একাত্তরে বাঙালী জীবনের অকথিত চিত্র তুলে ধরেছে।
কবি সুফিয়া কামাল তাঁর সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি নারীমুক্তি, মানবমুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে গেছেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনেও যোগ দেন। সুফিয়া কামাল ৬৯’এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন। একাত্তরের উত্তাল মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
সুফিয়া কামাল পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘তমখা এ ইমতিয়াজ’ উপাধি বর্জন করেন। তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ সংগঠক। ১৯৭০ সালে বাঙালীর স্বাধীকার আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যেই তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন শিশুদের সংগঠন কচি- কাঁচার মেলা। তিনি দেশ বিভাগের আগে ‘বেগম’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও সম অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। বাংলার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সুফিয়া কামালের ছিল আপসহীন ভূমিকা। নারীদের সংগঠিত করে মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা, দেশাত্মবোধ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে তিনি ছিলেন সর্বদা সচেষ্ট।
পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপোষহীন। কবি সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর মৃত্যু বরণ করেন। তিনিই প্রথম বাঙালী নারী যাঁকে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
/এ আই