• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

উগ্রবাদিদের হিটলিস্টে তিনবছর আগেই ছিল ব্লগার বাচ্চুর নাম!

প্রকাশ:  ১২ জুন ২০১৮, ০৩:২৯ | আপডেট : ১২ জুন ২০১৮, ০৩:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে দুবৃত্তদের গুলিতে নিহত শাহজাহান বাচ্চু (৫৫) ছিলেন মুক্তমনা ব্লগার ও লেখক। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মুন্সিগঞ্জ জেলার সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক বিশাখা প্রকাশনীর মালিক ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার পূর্ব কাকালদী তিন রাস্তার মোড় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে।

স্থানীয়ভাবে সবার সুপরিচিত শাহজাহান বাচ্চু সিরাজদিখানের পশ্চিম শিয়ালদী গ্রামের মৃত মন্তাজ উদ্দিন চেয়ারম্যানের পুত্র।

সম্পর্কিত খবর

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাহজাহান বাচ্চু কাকালদী তিন রাস্তার মোড়ে আনোয়ারের ওষুধের দোকানে বসে ছিলেন। দুইটা মোটরসাইকেল চার যুবক এসে তাকে ওই ওষুধের দোকান থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে বুকে গুলি করে হত্যা করে।

    উগ্রবাদিরাই বাচ্চুকে হত্যা করেছে দাবি করে সিপিবি মুন্সীগঞ্জ জেলার সভাপতি শ ম কামাল বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ব্লগে বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা লেখালেখির কারণে তিন বছর আগেই উগ্রবাদিরা বাচ্চুকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। পরে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ২০১২-১৪ মেয়াদে শাহজাহান বাচ্চু মুন্সীগঞ্জ জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওইসময় থেকেই লেখালেখির কারণে উগ্রবাদিরা ছিল তার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল। পরিকল্পতিভাবেই বাচ্চুকে হত্যা করা হয়েছে।

    আগে ঢাকায় বেশি সময় দিলেও গত তিন বছর ধরে গ্রামের বাড়িতেই শাহজাহান বাচ্চু বসবাস করতেন জানিয়ে তার মেয়ে আচল জাহান বলেন, ‘আমার বাবা একজন ব্লগার ছিলেন। তিনি ধর্ম নিয়ে লেখাখেখি করতেন। তিনবছর আগে যখন ব্লগারদের হত্যা করা হচ্ছিল তখন আমার বাবার নাম ১১ নম্বর লিস্টে ছিল। এ কথা বাবার মুখ থেকেই শোনা। তাছাড়া তিনবছর ধরে বাবাকে মোবাইলে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছিল।

    নিহত শাহজাহান বাচ্চুর নাম উগ্রবাদিদের হিটলিস্টে ছিল কিনা জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম বলেন, বিষয়টা আমাদের জানা ছিল না। বাচ্চুর স্ত্রী ও মেয়ের কাছ থেকে রাতে জানতে পারি যে, কে বা কারা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। এ হুমকির ব্যাপারে সপ্তাহখানেক আগে শাহজাহান বাচ্চু তার স্ত্রীকেও জানিয়েছিলেন। তবে তিনি পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে কখনও কোনও আবেদন করেননি।'

    পুলিশ সুপার বলেন, দুই মোটরসাইকেলে করে পাঁচজন দুর্বৃত্ত এসে বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। তবে তারা কারা আমরা জানতে পারিনি। মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা এসেছিল তাই পুলিশ সড়কগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা যায়নি।

    এ হত্যাকাণ্ড জঙ্গি হামলা কিনা তা খতিয়ে দেখতে এরই মধ্যে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, হামলার ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে এটি জঙ্গি হামলা বলে মনে হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

    শাহজাহান বাচ্চু,মুক্তমনা ব্লগার
    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close