কমনওয়েলথ সংস্কারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সদস্য দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে জন্য কমনওয়েলথকে সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার লন্ডনে স্থানীয় সময় সকালে ২৫তম কমনওয়েলথ হেডস অব গভর্নমেন্ট সভায় (সিএইচওজিএম ) ল্যানকেস্টার হাউজে রাখা বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, চারটি স্তম্ভের নিরিখে এই সিএইচওজিএম-এ চিহ্নিত লক্ষ্য অর্জন করতে চাইলেও সংস্কার অপরিহার্য। কমনওয়েলথের বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা ও কার্যক্রমের পুনর্গঠন প্রয়োজন, যাতে সদস্য দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং প্রত্যাশা পূরণ হয়।

তিনি বলেন, আমরা কমনওয়েলথের একটি ব্যাপক সংস্কারের জন্য একটি বিশিষ্ট ব্যক্তি গ্রুপ (ইপিজি) গঠনের সুপারিশ করছি। প্রধানমন্ত্রী ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে কমনওয়েলথ সচিবালয় পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই সিএইচওজিএম সভায় নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনেই এর প্রয়োজন রয়েছে। তিনি চার্টার এবং ২০৩০ উন্নয়ন এজেন্ডা নিয়ে লক্ষ্যমাত্রার আলোকে মহাসচিবের কৌশলগত পরিকল্পনা-২০২০-২১-এর মূল্যায়ন করেন।

বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সচিবালয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই পদক্ষেপটিকে কমনওয়েলথের বৃহত্তর ও ব্যাপক সংস্কারের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, যাতে এটি অধিকতর মানুষ এবং উন্নয়ন কেন্দ্রিক হতে পারে।

শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়ে বলেন, সচিবালয় যেন উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি স্থানান্তর, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলোর সহায়তায় তার লক্ষ্যকে আরও জোরদার করে।

কমনওয়েলথ ঘোষিত কানেকটিভিটি, সাইবার সিকিউরিটি, গভর্ননেন্স এবং ব্লু চার্টার সম্পর্কিত বিষয়সমূহ বাস্তবায়নের জন্য কমনওয়েলথ সচিবালয়ের উচিত একটি অ্যাকশন প্লান তৈরির পরামর্শও দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে কমনওয়েলথ তাদের কাজের ফলশ্রুতিকেন্দ্রিক প্রয়াসগুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করবে, যার মধ্যে থাকবে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও টেকসই উন্নয়ন এবং অধিকাংশ সদস্য দেশের বাস্তব চ্যালেঞ্জসমূহ।

নাজুক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথ মিনিস্ট্রিয়াল অ্যাকশন (সিএমএজি) গ্রুপের ভূমিকা স্পর্শকাতর উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তাঁর পর্যবেক্ষণ থেকে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভালোভাবে বুঝে সে অনুযায়ী এবং কমনওয়েলথ ঐক্যের চেতনাকে সামনে রেখে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন, আইনের শাসনই লক্ষ্য থাকতে হবে। কেন না, এগুলো হলো টেকসই শান্তি ও স্থিতিশীলতার মূল ভিত্তি। তিনি বলেন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর গণতন্ত্র রক্ষা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গণতান্ত্রিক ও সুশাসনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে সহায়তা ও সম্পৃক্ত হওয়াটাই সবচেয়ে ভালো উপায়।

শেখ হাসিনা আশাবাদ জানিয়ে বলেন,, ২৫তম সিএইচওজিএম কমনওয়েলথকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য দারিদ্র্যমুক্ত, প্রগতিশীল, সমৃদ্ধ, স্পন্দনশীল এবং স্বপ্নদর্শী কমনওয়েলথ হিসেবে অনুধাবনে এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারে।