• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

ভিনদেশে বর্ষবরণের যত আজব সংস্কৃতি

প্রকাশ:  ১৩ এপ্রিল ২০১৮, ১৭:২৮ | আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ০২:৩৫
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন বছর আসে বিভিন্ন সময়ে। পুরনো বছরের সব ঝরা,গ্লানি আর দুঃখ কষ্টকে ঝেড়ে ফেলে নতুন ও মঙ্গলকে বরণ করে নেয়ার উদ্দেশ্যে সারাবিশ্বে পালিত হয়ে থাকে বর্ষবরণ উৎসব। বিভিন্ন দেশে নতুন বছরে চলে বিচিত্র সব সংস্কৃতির চর্চা। নানাদেশে নানা রঙে ও ঢঙে পালন করা হয় নতুন বছরের বর্ষবরণ উৎসব। বর্ষবরণের এই সংস্কৃতি সর্বপ্রথম চালু হয় ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। বসন্তে নতুন শষ্য ঘরে তোলার মাধ্যমে মার্চ মাসের ২৩ তারিখে ব্যবিলনীয়রা পালন করতো বর্ষবরণ উৎসব ।

নতুন বছর বরণ করে নেয়ার সেই সংস্কৃতি এখন সারা পৃথিবীজুড়ে পালিত হয় বিভিন্নভাবে। ভিনদেশে বর্ষবরণের নানা উৎসব আর রীতি আমাদের কাছে অদ্ভুত মনে হলেও এটাই তাদের নিজস্বতা।

সম্পর্কিত খবর

    কলকাতাঃ নানা জাতিগোষ্ঠীর দেশ ভারতে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রকারের মানুষের বাস। পশ্চিমবঙ্গে পুরো চৈত্র মাস জুড়েই চলতে থাকে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। চৈত্র্যের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে গাজন উৎসব উপলক্ষ্যে চড়ক পূজা পালিত হয় । এইদিনেই সূর্য মীন রাশি ত্যাগ করে মেষ রাশিতে প্রবেশ করে। এদিন গ্রামবাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে চড়ক মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলায় অংশগ্রহণকারী সন্ন্যাসী বা ভক্তগণ বিভিন্ন শারীরিক কসরৎ প্রদর্শন করে আরাধ্য দেবতার সন্তুষ্টি এবং সাধারণ মানুষের মনোরঞ্জন করে থাকেন। পয়লা বৈশাখে প্রতিটি পরিবারে স্নান শেষে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করার রীতি প্রচলিত। বাড়িতে বাড়িতে এবং সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে মিষ্টান্ন ভোজন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির অধিকাংশই এদিন থেকে তাদের ব্যবসার হিসেবের জন্যে নতুন হালখাতার উদ্বোধন করে।

    ইংল্যান্ডঃ ইংল্যান্ডের লোকেদের বিশ্বাস নববর্ষের দিনে তাদের বাড়িতে প্রথম যে অতিথি প্রবেশ করে সে যদি তরুণ যুবক হয় তাহলে তা তাদের জন্যে সৌভাগ্যের বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে। উপহার হিসেবে রুটি, কয়লা ইত্যাদি নিয়ে আসা হয় যাতে সারা বছর পরিবারের সদস্যদের এ সব জিনিসের কমতি না পড়ে। মাঝরাতের পর বাড়িতে আসা কেউ যদি সোনালি বা লাল চুলওয়ালা পুরুষ কিংবা কোন নারী হয় তাহলে তা বাড়িতে দুর্ভাগ্য নিয়ে আসে বলে তাদের বিশ্বাস। মাঝরাতে নববর্ষের আগ মুহূর্তে লন্ডনে ট্রাফালগার স্কোয়ার এবং পিকাডেলি সার্কাসে অনেক মানুষ একত্রে সমবেত হয়ে বিগবেনের আওয়াজের সাথে সাথে নববর্ষকে বরণ করে নেয়ার উৎসবে মেতে উঠে।

    চীনঃ নববর্ষে আনন্দ ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে চীনারা তাদের বাড়ির দরজা লাল রঙে রাঙিয়ে তোলে। বাচ্চাদের লাল রঙের প্যাকেটে টাকা উপহার দেয়া হয়। দম্পতিদেরকে দেয়া উপহারেও থাকে লাল রঙ। নববর্ষ উপলক্ষে চীনে পূর্ণিমা শুরুর দিন থেকে শুক্লপক্ষের পনেরো দিন পর্যন্ত চলে বর্ষবরণ উৎসব। নতুন বছরের প্রথম দিনে তারা স্বর্গ ও মর্ত্যের দেবতাকে খুশি করতে নানা উপাসনা করে। এসময় ছুড়ি দিয়ে তারা কোন খাবার তৈরী করে না। একদিন ঘরের ভিতর কোন ছুড়ি রাখা হয়না। চীনাদের বিশ্বাস এসময় ঘরে ছুড়ি রাখলে তাদের পারিবারিক বন্ধনে ভাঙন আসবে।

    স্পেনঃ স্পেনে অাঙুর ফলকে নতুন বছরে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্প্যানিশরা বিশ্বাস করে নতুন বছরে মাঝরাতে আপনি যদি একইসাথে ১২টি আঙুর মুখে পুরতে পারেন তাহলে নতুন বছরটি আপনার জন্যে সৌভাগ্যমন্ডিত হতে যাচ্ছে।

    ফিলিপাইনঃ ফিলিপাইনে নতুন বছরে সৌভাগ্যের ধারণাটি আরো চমকপ্রদ। ফিলিপাইনের লোকেদের বিশ্বাস মুদ্রা গোলাকৃতি বিধায় নতুন বছরের প্রথম দিনে গোলাকৃতি যেকোন কিছু তাদের জন্যে অর্থভাগ্য বয়ে নিয়ে আসবে। গোলাকার ফলমূল থেকে শুরু করে গোলাকার কাপড় সবকিছুকেই তারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরে নেয়।

    মায়ানমারঃ মায়ানমারে তিঙ্গান পানি উৎসবের মাধ্যমে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছর। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে পানির ফোয়ারা নিয়ে বুদ্ধধর্মের স্বর্গীয় ব্যক্তি ত্যাগামিনের আগমন স্বরণে পানির উৎসবে মেতে উঠে তারা। রাস্তাঘাট পানিতে ভরে যায়। তাদের বিশ্বাস এ পানি তাদের গত বছরের সব দুর্ভাগ্য ও পাপকে ধুয়ে মুছে নিয়ে যাবে।

    সাউথ আফ্রিকাঃ সাউথ আফ্রিকায় নতুন বছরের প্রথম দিনে পুরনো বছরের সব ফার্নিচার ফেলে দেয়া হয়। তাদের বিশ্বাস পুরনো আসবাবপত্র,ফ্রিজ এগুলো ঘরের বাইরে ছুড়ে ফেলে দিলে,এর মাধ্যমে তারা পুরনো বছরের সব দুঃখকষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।

    /টিএস

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close