• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
শিরোনাম

দখল দূষণে স্রোতস্বীনি করতোয়া এখন মৃতপ্রায়

প্রকাশ:  ১৮ মার্চ ২০১৮, ২১:০০ | আপডেট : ১৮ মার্চ ২০১৮, ২১:০৩
বগুড়া প্রতিনিধি

দখল দূষণে বগুড়ার ওপর দিয়ে প্রবাহি স্রোতস্বীনি করতোয়া নদী মরে গেছে। শহরের বাড়ির বর্জ্য নদীতে জমা হয়ে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে দিনে অবাধ বিচরণ শুকুর নামের প্রাণী। নদী নয়, যেন কোন ময়লা আবর্জনার ড্রেন।

বগুড়া শহরের মধ্যে করতোয়া নদীর ২৮ টি স্পট দখল আছে বলে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন দখল মুক্ত করার পদক্ষেপ দিযেছে কয়েকবার । কিন্ত দখল মুক্ত কবার কাজ কিছু দূর এগিয়ে আবার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নদী হয়ে পড়েছে শীর্ণকায়। নদীরক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বগুড়া জেলা শাখা।

সম্পর্কিত খবর

    নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, বগুড়াকে বাঁচাতে হলে করতোয়া নদী সচল করতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন ব্যাপক পরিবেশগত সচেতনতা ও স্থানীয় উদ্যোগ। এজন্য তারা ইতিমধ্যেই কর্মসুচি শুরু করেছে।

    রবিবার বেলা ১১ টায় শহরের প্রানকেন্দ্র সাতমাথায় করতোয়া নদী রক্ষায় গণস্বাক্ষর কর্মসুচির উদ্বোধন হয়েছে। এতে বিরোধি দলীয় হুইপ ও সদর আসনের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম ওমর প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি বলেন, বগুড়ার ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক বাহক করতোয়া নদী। পূর্বের চেহারায় করতোয়া নদী ফিরিয়ে আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

    এসময় বাপা’র সভাপতি আনোয়ারুল করিম দুলাল, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, মাহফুজ আরা মিভা, এড. আশরাফুন্নাহার স্বপ্না, মাছুদার রহমান হেলাল, ডা: সামির হোসেন মিশু, ডা: এসএম মিল্লাত হোসেন, রোটা: মোস্তাফিজার রহমান উপস্থিত ছিলেন।

    সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানান,গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খুলশিতে বাধ ও স্লুইচ গেইট নির্মান করে পানি উন্নয়নবোর্ডের অপরিনাম দর্শিতার কারনে করতোয়ার পানি প্রবাহের উৎস মুখ সম্পূর্ণ বন্ধ ও ভরাট হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে দখল -দূষণ নানা প্রাকৃতিক কারনে বন্যা জনিত ক্ষয়-ক্ষতি ও নদী সংস্কারের অভাবে করতোয়া পূর্বের সকল বৈশিষ্ট সম্পূর্ণ ভাবে হারিয়ে ফেলেছে। অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে দ্রুত নগরায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি মানুষের অপরিনামদর্শী কর্মকান্ড করতোয়া নদীর উপর প্রভাব ফেলেছে। অপর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ও দখলদারদের অবৈধ দখলের কারণে স্রোতস্বীনি বেগমতি করতোয়া নদী আজ মৃতপ্রায়। সচল, সজিব, নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতিক করতোয়া এখন হয়ে উঠেছে শ্রীহীন, মৃতপ্রায়, স্থবির। স্বচ্ছ জলপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ার কারনে নদীতে পলি দ্রুতহারে জমছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে নদী ও খাল-বিলের পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী সব ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব ডিসিকে জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা পাঠাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন। নদীর অবৈধ জায়গা উদ্ধারের এই সরকারি তালিকায় বগুড়ার করতোয়া নদীর নাম রয়েছে।

    জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান রনি, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক তন্ময় সাল্যান জানান, নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং পানির প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখতে ২০১৫ সালের ২২ জুন জেলা প্রশাসকসহ ২১ জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট করে বেলা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশে জেলা প্রশাসন করতোয়া নদীর সীমানা দখল করে নির্মিত কিছু স্থাপনা অপসারণ করে। কিন্তু নদীর সীমানা নির্ধারণ, গাইবান্ধা-গোবিন্দগঞ্জের কাঁটাখালী খুলশীতে করতোয়ার উৎসমুখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলকপাট উন্মুক্ত করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিতকরণ এবং দূষণমুক্ত করতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

    ওএফ

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close