• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

চীন না ভারত এই নিয়ে বিপর্যয়ে পুঁজিবাজার

প্রকাশ:  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১০:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী বা স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে চায় চীনের পুঁজিবাজার সংস্থা শেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ভারতীয় ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, নাসডাক ও ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ মিলে গঠিত কনসোর্টিয়াম। তবে কার কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে তা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)’র মধ্যে। সর্বোচ্চ দরের ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি নিয়ে ওই দুই সংস্থার মধ্যে এই মতবিরোধ, যা নিয়ে পুঁজিবাজারে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, চীনের পুঁজিবাজার সংস্থা শেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ শেয়ারপ্রতি দাম দিতে চাইছে ২২ টাকা। যা অভিহিত মূল্যের বিপরীতে সর্বোচ্চ দাম। ফলে ডিএসই সিদ্ধান্ত নেয় চীনের দুই সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামের কাছে বিক্রি করা হবে উল্লিখিত ২৫ শতাংশ শেয়ার।

সম্পর্কিত খবর

    অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ শেয়ারের দাম দিতে চাইছে ১৫ টাকা করে। সেক্ষেত্রে ভারতের দাম চীনের দামের থেকে শেয়ারপ্রতি ৭ টাকা কম। তারপরও ভারতের কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য ডিএসইকে চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি- এমন অভিযোগ উঠেছে।

    দুই সংস্থার বিদ্যমান মতবিরোধ প্রভাব ফেলছে পুঁজিবাজারের লেনদেনে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ২৯শে জানুয়ারি ঘোষিত মুদ্রানীতিকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে আগে থেকেই অস্থিরতা চলছিল। মুদ্রানীতির পর ডিএসইর শেয়ার বিক্রি নিয়ে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মুদ্রানীতির প্রভাবে গত ২৫শে জানুয়ারি থেকে ৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লেনদেন হওয়া ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ৭ দিনই শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই বাজার মূলধন হারিয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। আর সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট। গত সোমবার পুঁজিবাজার আবারো নিম্নমুখী হয়। পরের দুইদিন মঙ্গল ও বুধবার দিনভর সূচকের ব্যাপক উঠানামার পর দিনশেষে বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও বৃহস্পতিবার ও সপ্তাহের প্রথম দিন গতকালও পুনরায় বড় ধরনের দরপতন হয়। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসই প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯৯ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক কমেছে ২৫১ পয়েন্ট। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৩৬টি কোম্পানি। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৯টির, কমেছে ২৭০টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ১৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। অন্যদিকে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২২৭টি কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১৭৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির শেয়ার দর। মূলত চীনের কোম্পানির পরিবর্তে কঠিন শর্তে এবং কম দামে ভারতীয় কোম্পানিকে শেয়ার দেয়ার খবরে পুঁজিবাজারের এ অস্থিরতা বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

    সূত্র জানায়, ডিএসই’র শেয়ার বিক্রি ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি সরাসরি ভারতের পক্ষে অবস্থান নেয়। ডিএসই অনড় অবস্থানে থাকায় বিএসইসি অবস্থান বদল করে ভারত ও চীন উভয় দেশের কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য নতুন করে চাপ দেয়। বিপরীতে ডিএসই’র মেম্বাররা এখনো শুধু চীনের কাছে শেয়ার বিক্রির অবস্থানে অনড় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

    ডিএসই’র বর্তমান পরিচালক ও সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমান বলেন, ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী যারা শর্ত পরিপূর্ণ করছে তাদেরকেই দিতে হবে। চীন আমাদের দরপত্রের শর্ত পরিপালন করেছে, আমরা তাদের কাছে শেয়ার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটাই শেষ কথা। তিনি বলেন, চীন ও ভারতের প্রস্তাব চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দেখছি, একটি দেশ খাপছাড়া প্রস্তাব করেছে। আরেকটি জেনুইন প্রস্তাব করেছে। ফলে একটির সঙ্গে আরেকটির তুলনা হয় না।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close