• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

ইবি উপাচার্যের উপর হামলার পর এবার সেই স্থানেই অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি

প্রকাশ:  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৬:৫১ | আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৬:৫৮
ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ওপর হামলার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই স্থানে একই কায়দায় ডাকাতের হামলার কবলে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাম্বুলেন্স।সোমবার রাত পৌনে ৪টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বড়দহ নামক এলাকায় এঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতরা অ্যাম্বুলেন্সে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর সর্বস্ব লুটে নেয়। এসময় তারা অ্যাম্বুলেন্সে ভাঙচুর চালিয়ে চালক আব্দুল খালেককে মারধোর করে আহত করে।তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাস্তায় গাছ ফেলে এসময় ট্রাক ও যানবহনে গণডাকাতি হয় বলে জানা গেছে।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক আব্দুল খালেকের ভাষ্যমতে, ‘সোমবার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের আরবি বিভাগের পলি খাতুন নামের শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। পরে দায়িত্বরত ডাঃ মিল্টনের পরামর্শনুযায়ী মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। এসময় অসুস্থ শিক্ষার্থীর বন্ধু মাসুদ, মুত্তাকিন মাহমুদা, জান্নাত তার সাথে যায়। হাসপাতালে ভর্তি শেষে রাত ৩টার দিকে আমরা ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্য রওনা হই। ফেরার পথে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার বড়দহ নামক স্থানে এসে অনেক ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অ্যাম্বুলেন্স দাড় করাই। প্রায় সাথে সাথে ৫/৬ জন কালোকাপড়ে মুখ বাধা দুবৃত্ত আমাদের কাছে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অসমর্থ হলে আমাকে বেধড়ক মারধর এবং অ্যাম্বুলেন্সের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। অস্ত্রের মুখে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা সকলের নিকট থেকে মোবাইল, টাকা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। এসময় তারা অ্যাম্বুলেন্সে থাকা দুই ছাত্রীর শরীর থেকে স্বর্ণালঙ্কর খুলে নেয়। ঘটনার অনেক পরে পুলিশ এসে রাস্তা থেকে গাছ সরিয়ে দিলে ক্যাম্পাসে আসি।’

সম্পর্কিত খবর

    এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন,‘প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে সরকারের আশু পদক্ষেপ কামনা করছি।’শৈলকুপা থানার কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান,‘ঘটনার তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে।’

    বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

    এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন,‘আগের ঘটনার বিচার না হওয়ায় এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। আগেরটিসহ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সরকারের উচ্চ মহলের কাছে বিচার দাবি করছি।’

    এদিকে ডাকাতির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ। একইসাথে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ডাকাতদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করে আইননানুক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এই জনপদের পুলিশ যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে সেখানে সাধারন জনগনের নিরাপত্তা কিভাবে দিবে সেবিষয়ে আমার প্রশ্ন জাগে। আমরা এ হামলাকারী সন্ত্রাসী ও ডাকাতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

    উল্লেখ্য, ২৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে তিন টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা শৈলকূপা থানার বড়দহ নামক স্থানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারীর গাড়িতে অতর্কিত হামলা করে সন্ত্রাসীরা। তবে এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও আজ পর্যন্ত সেটি আলোর মূখ দেখিনি।

    • সর্বশেষ
    • সর্বাধিক পঠিত
    close